দানের ফজিলত সম্পর্কে ২টা ঘটনা
দানের ফজিলত সম্পর্কে ২টা ঘটনা নিচে তুলে ধরা হবে। তাই আপনি যদি দানের ফজিলত সম্পর্কে ২টা ঘটনা জানতে চান, তাহলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগের সাথে পড়তে থাকুন। নিচে দানের ফজিলত সম্পর্কে ২টা ঘটনা তুলে ধরা হবে।
পেজ সূচিপত্র: দানের ফজিলত সম্পর্কে ২টা ঘটনা
উপস্থাপনা
দানের ফজিলত সম্পর্কিত ঘটনা গুলো পড়লে ঈমান বৃদ্ধি পায় এবং দান করার স্পৃহা বেড়ে যায়। তাই মাঝে মাঝে দান করার ফজিলত সম্পর্কিত ঘটনা পড়া উচিত। আপনি যদি একজন প্রকৃত মুসলিম হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে আপনার সম্পদ থেকে কিছু অংশ দান করতে হবে।
যদি আপনার যাকাত দেয়ার মত পর্যাপ্ত সম্পদ থাকে তাহলে যাকাত দিতে হবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে সম্পদ থাকার পরেও যদি আপনি যাকাত প্রদান না করেন তাহলে গুনাহগার হবেন। যাইহোক, এই আর্টিকেলটিতে যাকাত সম্পর্কে নয় বরং ঐচ্ছিক দান সম্পর্কে দুইটি ঘটনা তুলে ধরা হবে। তো আসুন জেনে নেয়া যাক, দানের ফজিলত সম্পর্কে ২টা ঘটনা।
দানের ফজিলত সম্পর্কে ২টা ঘটনা
দানের ফজিলত সম্পর্কে ২টা ঘটনা নিচে তুলে ধরা হবে। তাই আপনি যদি দানের ফজিলত সম্পর্কে ২টা ঘটনা জানতে চান তাহলে শেষ পর্যন্ত সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগের সাথে পড়তে থাকুন। আশা করি নিম্ন বর্ণিত ঘটনা দুইটি আপনার জীবনে পরিবর্তন ঘটাবে। নিচে দানের ফজিলত সম্পর্কে যে দুইটি ঘটনা তুলে ধরা হবে সেগুলো হাদিস থেকে উল্লেখ করা হবে।
আরো পড়ুন: দানের ফজিলত সম্পর্কে ২টা ঘটনা
দান সম্পর্কিত বিভিন্ন ঘটনা থাকলেও ভিত্তিহীন কোন ঘটনা থেকে শিক্ষা সমীচীন নয়। তাই সহি হাদিস থেকে দানের ফজিলত সম্পর্কে ২টা ঘটনা তুলে ধরা হবে। তো দেরি না করে আসুন দেখে নেয়া যাক, হাদিসের আলোকে দানের ফজিলত সম্পর্কে ২টা ঘটনা।
দানের ঘটনা: ১
দানের ফজিলত সম্পর্কে ২টা ঘটনার প্রথম ঘটনাটি আর্টিকেলটির এই অংশে তুলে ধরা হবে। তাই দানের ফজিলত সম্পর্কিত প্রথম ঘটনাটি জানতে মনোযোগ সহকারে নিম্ন বর্ণিত ঘটনাটি পড়তে থাকুন। আসুন দেখে নেয়া যাক, দানের ফজিলত সম্পর্কে হাদিস থেকে শিক্ষণীয় ঘটনা।
প্রখ্যাত সাহাবী আনাস (রা:) বলেন, নবী (সা:) এর কাছে বাহরাইন থেকে বেশ কিছু সম্পদ নিয়ে আসলেন। রাসূলুল্লাহ (সা:) বললেন, এগুলো মসজিদে রেখে দাও। আল্লাহর রাসুল (সা:) এর কাছে এ যাবৎ যত সম্পদ আনা হয়েছে তার মধ্যে এ সম্পদই ছিল পরিমাণে সব থেকে বেশি। অতঃপর আল্লাহর রাসুল (সা:) নামাজে চলে গেলেন এবং এর দিকে দৃষ্টি দিলেন না।
অতঃপর নামাজ শেষ করে তিনি এসে সম্পদের নিকট গিয়ে বসলেন। তিনি যাকেই দেখলেন, তাকেই কিছু সম্পদ দিয়ে দিলেন। এরই মধ্যে আব্বাস (রা:) এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসুল, আমাকেও কিছু সম্পদ দান করুন। কারণ আমি নিজের ও আকিলের (বদর যুদ্ধের সময়) পক্ষ হতে মুক্তিপণ দিয়েছি। আল্লাহর রাসুল (সা:) তাকে বলেন, নিয়ে যান। তিনি তা কাপড়ে ভরে সম্পদ তুলে নিলেন।
এরপরে তা উঠাতে চেষ্টা করলেন; কিন্তু তা উত্তোলন করতে পারলেন না। তিনি বলেন, হে আল্লাহর রাসুল (সা:), কাউকে বলুন, যেন আমাকে এটি উঠিয়ে দেয়। রাসূলুল্লাহ (সা:) বললেন, না। আব্বাস (রা:) বলেন, তাহলে আপনি নিজেই তুলে দিন। তিনি বলেন, না। আব্বাস (রা:) তা থেকে কিছু সম্পদ রেখে দিলেন।
অতঃপর পুনরায় তা তুলতে চেষ্টা করেন। (এবারও তুলতে না পেরে) তিনি বললেন, হে আল্লাহর রাসুল, কাউকে আদেশ করুন যেন আমাকে তুলে দেয়। তিনি বলেন, না। অতঃপর আব্বাস (রা:) বলেন, তাহলে আপনিই আমাকে তুলে দিন। তিনি বলেন, না। অতঃপর আব্বাস (রা:) আরো কিছু সম্পদ নামিয়ে রাখলেন। এবার তিনি উঠতে পারলেন এবং তা নিজের কাঁধে তুলে নিয়ে বেরিয়ে গেলেন। আল্লাহর রাসুল (সা.) সেখানে একটি দিরহাম অবশিষ্ট থাকা পর্যন্ত উঠলেন না। (বুখারি, হাদিস : ৪২১)
দানের ঘটনা: ২
দানের ফজিলত সম্পর্কে ২ টা ঘটনার প্রথম ঘটনাটি ইতিমধ্যেই উপরে তুলে ধরা হয়েছে। এখানে দান করার দ্বিতীয় ঘটনাটি তুলে ধরা হবে। নিম্ন বর্ণিত ঘটনাটি থেকে আশা করি আপনি অনেক শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবেন যাইহোক আসুন দেখে নেই দানের ফজিলত সম্পর্কে ২টা ঘটনার দ্বিতীয় ঘটনাটি।
উমর (রা:) ৪০০ (চার শত) দিনার হাতে নিয়ে তার গোলামকে বললেন, এগুলো আবু উবাইদার নিকট নিয়ে যাও। অতঃপর দূরে সরে থেকে লক্ষ্য কর তিনি সেগুলো কি করেন? গোলাম সেগুলো নিয়ে তার নিকট গিয়ে বললেন, আমীরুল মুমিনীন এগুলো গ্রহণ করতে বলেছেন। তিনি (আবু উবাইদা) বললেন, আল্লাহ তার উপর দয়া করুক। অতঃপর তার বাঁদীকে বললেন, যাও সাতটি দিনার নিয়ে অমুকের নিকট যাও, আর এই পাঁচটি অমুকের নিকট নিয়ে যাও। ঐ মজলিসে বসেই তিনি সবগুলো দিনার শেষ করে ফেললেন।
অতঃপর গোলাম উমর (রা:) এর নিকট ফিরে আসল এবং পূর্ণ ঘটনা খুলে বলল। এদিকে উমর (রা:) ঐ পরিমাণ দিনার মুয়ায ইবনে জাবাল (রা:) এর জন্যে গণনা করে রাখলেন এবং সেগুলোও পাঠিয়ে দিলেন। মুয়ায (রা:) বললেন,আল্লাহ তার সাথে সম্পর্ক ঠিক রাখুক। হে বাঁদী অমুক ব্যক্তির ঘরে এ পরিমাণ নিয়ে যাও। আর অমুক ঘরেও দিয়ে আস।
মুয়ায রাযিআল্লাহু আনহু এর স্ত্রী জানতে পেরে বললেন, আল্লাহর কসম আমরাও মিসকীন দারিদ্রক্লিষ্ট। অতএব,আমাদেরও কিছু দিন। তখন পাত্রে মাত্র দুই দিনার অবশিষ্ট ছিল। তিনি মাত্র দুই দিনারই স্ত্রীর হাতে তুলে দিলেন। গোলাম এসে উমর রাযিআল্লাহু আনহু কে ঘটনা শোনালে তিনি খুশি হলেন এবং বললেন তারা সকলে ভাই ভাই। সবাই সবার উপকারে এগিয়ে আসে।
দানের ফজিলত
ইসলামী শরীয়ত অনুসারে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও ফজিলতপূর্ণ একটি ইবাদত হলো: দান। তাই আপনার উচিত হবে সচ্ছল এবং অসচ্ছল উভয় অবস্থাতেই দান করা। আপনি যখন আপনার সম্পদ থেকে অপর মুসলিম ভাইকে দান করবেন, তখন আল্লাহ তা'আলা আপনার সম্পদে বরকত দান করবেন।
আপনি যদি আল্লাহর রাস্তায় দান করেন তাহলে আপনি অসংখ্য সওয়াবের অধিকারী হতে পারবেন। যাইহোক নিচে, দানের ফজিলত সমূহ লিস্ট আকারে তুলে ধরা হলো। আসুন দেখে নেয়া যাক, দানের ফজিলত সমূহ।
- দারিদ্রতা দূর হয়।
- সামাজিক বৈষম্য কমে আসে।
- পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ব বৃদ্ধি পায়।
- অহমিকা দূর হয়।
- পাপ মোচন হয়।
দানের উপকারিতা
আপনি যদি প্রকৃত মুসলিম হতে চান এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু (সা:) অনুসরণ করতে চান সে ক্ষেত্রে, বিশ্বনবী (সা:) পথ অবলম্বন করতে হবে। এবং আপনার সম্পদ থেকে আপনার আশেপাশের গরীব দুঃখীদের কে সহায়তা করতে হবে। আপনার কাছে সম্পদ থাকা অবস্থায় আপনার পাশে কোন ব্যক্তি যদি অভুক্ত থাকে তাহলে এর জন্য আপনাকে আল্লাহর নিকটে জবাবদিহি করতে হবে।
আপনি যখন আপনার ধন সম্পদের কিছু অংশ গরীব দুঃখীদের মাঝে বিলিয়ে দেবেন এতে করে সমাজে বৈষম্য কমে আসবে। অভুক্ত থাকা লোকের সংখ্যা সংখ্যা কমে যাবে। সমাজে বিরাজ করবে শান্তি আর সহমর্মিতা। সমাজ থেকে যাবতীয় অন্যায় ও অনাচার দূর হয়ে যাবে।
উপসংহার
আপনি যদি উপরে উল্লেখিত, দানের ফজিলত সম্পর্কে ২টা ঘটনা মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন যে, ইসলামে দান করার গুরুত্ব কত বেশি। এবং আমাদের পূর্ববর্তী মুসলিমগণ অর্থাৎ সাহাবায়ে কেরাম দান করার ব্যাপারে কতটা তাৎপর ছিলেন। যেহেতু বিশ্বনবী মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সা:) নিজেই সব সময় গরিব অসহায়দের কে দান করতেন, তাই তার সাহাবীরাও তারপর অনুসরণ করে নিজের চিন্তা না করে নিজের সর্বস্ব গরীব দুঃখীর মাঝে বিলিয়ে দিতেন।
আরো পড়ুন: ভিটামিন ডি ও ই একসাথে খাওয়া যাবে কি
আর এ কারণেই পবিত্র কুরআনে এবং হাদিসে দান করার ব্যাপারে অসংখ্য বিবরণ রয়েছে। তাই আপনি যদি প্রকৃত মুসলিম হতে চান সে ক্ষেত্রে অবশ্যই পবিত্র কুরআনের আয়াতসমূহ এবং হাদিসগুলো অনুসরণ করে দান করার ক্ষেত্রে নিজের হাতকে প্রসারিত করতে হবে।
আশা করি উপরে উল্লেখিত দানের ফজিলত সম্পর্কে ২টা ঘটনা থেকে আপনি অনেক কিছু শিখতে পেরেছেন। চাইলে আপনি উপরে উল্লেখিত দানের ফজিলত সম্পর্কে ২টা ঘটনা আপনার বন্ধু বান্ধবের সাথে শেয়ার করতে পারেন। এতে করে তারাও দান সম্পর্কে জানতে পারবে। এবং উপর উল্লেখিত ঘটনাগুলো থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবে। ১৬৪১৩
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url