এইডস রোগ প্রতিরোধে আক্রান্ত রোগীদের যে বিষয়গুলো মেনে চলতে হবে

এইডস রোগ প্রতিরোধে আক্রান্ত রোগীদের যে বিষয়গুলো মেনে চলতে হবে অবশ্যই আমাদের সেগুলো সম্পর্কে জানতে হবে। এইডস রোগ খুবই মারাত্মক একটি রোগ। এর সঠিক চিকিৎসা এখনো আবিষ্কৃত হয়নি। সেই জন্য আমাদের এইডস রোগ প্রতিরোধে আক্রান্ত রোগীদের যে বিষয়গুলো মেনে চলতে হবে সেগুলো সম্পর্কে ধারণা নিতে হবে। এইডস রোগ প্রতিরোধে আক্রান্ত রোগীদের যে বিষয়গুলো মেনে চলতে হবে তা আলোচনা করা হলো।

আপনি যদি শেষ পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে থাকেন তাহলে এইডস রোগ প্রতিরোধে আক্রান্ত রোগীদের যে বিষয়গুলো মেনে চলতে হবে সে সম্পর্কে জানতে পারবেন। তাহলে চলুন আরো কথা না বাড়িয়ে এইডস রোগ প্রতিরোধে আক্রান্ত রোগীদের যে বিষয়গুলো মেনে চলতে হবে তা জেনে নেওয়া যাক।

কনটেন্ট সূচিপত্রঃ এইডস রোগ প্রতিরোধে আক্রান্ত রোগীদের যে বিষয়গুলো মেনে চলতে হবে

এইডস রোগ প্রতিরোধে আক্রান্ত রোগীদের যে বিষয়গুলো মেনে চলতে হবেঃ ভূমিকা

এইডস রোগ কতটা মারাত্মক আমরা অনেকেই এ বিষয়টি সম্পর্কে জানি। বর্তমানে এত উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা তেও এইডস রোগের সঠিক চিকিৎসা আবিষ্কার করা সম্ভব হয়নি। এইডস রোগ থেকে বাঁচতে হলে আমাদেরকে সঠিকভাবে জীবন পরিচালনা করতে হবে। এর আগে আমাদেরকে এইডস রোগ প্রতিরোধে আক্রান্ত রোগীদের যে বিষয়গুলো মেনে চলতে হবে? এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে হবে।

আরো পড়ুনঃ প্রেসার লো হলে করণীয় ১৫ টি কাজ - প্রেসার লো এর ১৬ লক্ষণ

আপনাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা চিন্তা করে আজকের এই আর্টিকেলে এইডস রোগের মূল কারণ, এইডস রোগের লক্ষণ সমূহ এবং এইডস রোগ প্রতিরোধে রোগীকে যে বিষয়গুলো মেনে চলতে হয় সেগুলো নিয়ে বিস্তারিত জানাবো। আশা করি আপনি এইডস রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

এইডস রোগের মূল কারণ

আমরা যদি এইডস রোগের মূল কারণ সম্পর্কে জানতে পারি তাহলে খুব সহজেই এইডস রোগ প্রতিরোধে আক্রান্ত রোগীদের যে বিষয়গুলো মেনে চলতে হবে? এ বিষয়গুলো সম্পর্কে অবগত হতে পারব। তাই যেকোনো রোগ থেকে বাঁচতে হলে আমাদেরকে সেই রোগের কারণ সম্পর্কে জানতে হবে।

  • অসুরক্ষিত যৌন মিলন
  • এইডস রোগীর সুচ ব্যবহার
  • বীর্য অথবা রক্তের মাধ্যমে
  • অনিরাপদ রক্ত গ্রহণ
  • একটি ইনজেকশন বারবার ব্যবহার

অসুরক্ষিত যৌন মিলন -- ছেলে অথবা মেয়ে যে কোন একজন যদি এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত হয় এবং যৌন মিলন করে তাহলে যৌন মিলনের কারণে উভয়েরই এইডস রোগ হয়ে থাকে। এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে যৌন মিলন করলে এইডস রোগ হয়ে থাকে।

এইডস রোগীর সুচ ব্যবহার -- যদি কোন এইডস আক্রান্ত রোগীর শরীরে সুচ ব্যবহার করা হয় এবং একই সুচ একজন সুস্থ মানুষের শরীরে ফোড়ানো হয় তাহলে এইডস রোগ সংক্রমিত হতে পারে। তাই আমরা বলতে পারি যে এইডস রোগ হওয়ার একটি অন্যতম কারণ হলো এইডস রোগীর সুচ ব্যবহার করা।

বীর্য অথবা রক্তের মাধ্যমে -- বীর্য অথবা রক্তের মাধ্যমে যদি এইচআইভি ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করে তাহলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় যার ফলে এইডস রোগ হয়ে থাকে। এই টাইপের প্রবেশ করার প্রধান মাধ্যম হল বীর্য অথবা রক্ত।

অনিরাপদ রক্ত গ্রহণ -- ও নিরাপদ রক্ত গ্রহণ এইচআইভি ভাইরাস ছড়ানোর অন্যতম একটি প্রধান কারণ। অনেক সময় আমাদের শরীরে রক্তের প্রয়োজন হয় যার ফলে অন্য কারো শরীর থেকে রক্ত নিয়ে থাকি। যদি পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করে এই রক্ত নেওয়া হয় তাহলে শরীরে অনায়াসে এইচআইভি ভাইরাস প্রবেশ করে।

একটি ইনজেকশন বারবার ব্যবহার -- অনেক ক্ষেত্রে ইনজেকশন নেওয়ার পরে একই ইনজেকশন অনেকের শরীরে করা হয়। একই ইনজেকশন প্রতিবার ভিন্ন মানুষের শরীরে করার ফলে এইডস রোগ হয়ে থাকে।

এইডস রোগের লক্ষণসমূহ

এইচআইভি ভাইরা শরীরে প্রবেশ করার দুই থেকে তিন মাসের মধ্যেই এইডস রোগের লক্ষণ গুলো প্রকাশ পাই। এইডস রোগ প্রতিরোধে আক্রান্ত রোগীদের যে বিষয়গুলো মেনে চলতে হবে? তা জানার আগে আমাদেরকে এইডস রোগের লক্ষণগুলো জেনে এই রোগ আমাদের মধ্যে আছে কিনা তা নির্ণয় করে নিতে হবে।

  • জ্বর
  • ক্লান্তি এবং মাথাব্যথা
  • ত্বকে ফুসকুড়ি
  • ডায়রিয়া
  • বমি বমি ভাব
  • গলা ব্যথা এবং কাশি
  • রাতে ঘাম হওয়া

জ্বর -- এইচআইভি ভাইরাস আক্রমণ করলে এর প্রথম লক্ষণ হয় জ্বর। জ্বর এর সাথে সাধারণত অন্যান্য হালকা উপসর্গগুলো থাকে যেমন ক্লান্তি রশিকা গ্রন্থি ফুলে যাওয়া গলা ব্যথা ইত্যাদি। কারণ এইচআইভি ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়।

আরো পড়ুনঃ ব্লাড ক্যান্সার হলে কি হয় - ১০ টি ব্লাড ক্যান্সার থেকে মুক্তির উপায়

ক্লান্তি এবং মাথাব্যথা -- যেহেতু এইচআইভি ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করে এর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয় তাই শরীর ক্লান্তি এবং অলসতা বোধ করতে পারে। আবার কখনো হাঁটাচলা করার সময় শ্বাসকষ্ট হতে পারে। এছাড়া মাথাব্যথার মত সমস্যা দেখা যায়।

ত্বকে ফুসকুড়ি -- এইচআইভি ভাইরাস আক্রমণ করার পরে শেষ পর্যায়ে শরীরে ব্যথা এবং ত্বকে ফুসকুড়ি হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে এই পোস্টগুলি চুলকানির মতো গোলাপি রং ধারণ করতে পারে। সাধারণত ত্বকে ফুসকুড়ি হওয়া এইচআইভি ভাইরাসের অন্যতম একটি লক্ষণ।

ডায়রিয়া -- এইচআইভি ভাইরাস আক্রমণ করার প্রাথমিক পর্যায়ে লক্ষণ হিসেবে অনেক মানুষের পরিপাকতন্ত্রে সমস্যা দেখা দিতে পারে যেমন ডায়রিয়া। গুরুতর ডায়রিয়া হওয়া এবং স্বাভাবিক চিকিৎসাতে না ভালো হওয়া।

বমি বমি ভাব -- এইচআইভি ভাইরাসের প্রাথমিক এবং পরবর্তী পর্যায়ে বমি বমি ভাব এবং বমি হওয়ার মতো সমস্যাগুলো দেখা যায়। সাধারণত এগুলো এইডস রোগের অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবেই বিবেচনা করা হয়।

গলা ব্যথা এবং কাশি -- এইচআইভি সংক্রমিত ব্যক্তিদের মধ্যে সাধারণত গলা ব্যথা দেখা যায়। তীব্র শুষ্ক কাশি যা কয়েক সপ্তাহ থেকে কয়েক মাস পর্যন্ত থাকে। এছাড়া এ ধরনের কাশির কোন উন্নতি দেখা যায় না।

রাতে ঘাম হওয়া -- এইচআইভি রোগীদের অন্যতম একটি প্রধান লক্ষণ হলো রাতে ঘুমানোর সময় প্রচন্ড পরিমাণে ঘাম হওয়া। সাধারণত এইচআইভি রোগীদের প্রাথমিক পর্যায়ে রাতে ঘাম হওয়ার মত সমস্যা গুলো দেখা যায়।

এইডস রোগ প্রতিরোধে রোগীকে যে বিষয়গুলো মেনে চলতে হয়

এখন আজকের আলোচনার মূল বিষয় এইডস রোগ প্রতিরোধে আক্রান্ত রোগীদের যে বিষয়গুলো মেনে চলতে হবে? সেগুলো সম্পর্কে জানব। এইডস রোগ প্রতিরোধে অবশ্যই বেশ কিছু বিষয় রয়েছে যেগুলো আমাদেরকে মেনে চলতে হবে। তাহলেই এই রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।

১। অবশ্যই বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক এড়িয়ে চলুন। কারণ এই রোগের অন্যতম কারণ হলো বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক। এবং সম্পর্ক করার সময় অবশ্যই সঙ্গের প্রতি বিশ্বাস রাখুন।

২। অবশ্যই যৌন মিলন করার সময় কনডম ব্যবহার করুন। শুধু এইডস রোগ প্রতিরোধে নয় অন্যান্য যৌনবাহিত রোগ প্রতিরোধে ও কনডম ব্যবহার করা উচিত। যৌন মিলনের সময় কনডম ব্যবহার এইডস হওয়ার ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।

৩। একবার ব্যবহার করা সিরিঞ্জ পুনরায় ব্যবহার করবেন না। এছাড়া একবার অর্থাৎ অন্যজনের ব্যবহার করা ব্লেড ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।

৪। শারীরিক সম্পর্ক করার ক্ষেত্রে স্বাভাবিক আচরণ বজায় রাখুন। অস্বাভাবিক যৌন আচরণ এর ফলে অনেক সময় এ ধরনের মারাত্মক রোগ হয়ে থাকে।

৫। কখনো যদি অন্য কারো শরীর থেকে রক্ত নেওয়ার প্রয়োজন হয় তাহলে হাসপাতাল অথবা ব্লাড ব্যাংকের সহযোগিতা নিয়ে রক্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এরপরে শরীরের রক্ত প্রবেশ করান।

৬। এইচআইভি প্রতিরোধে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো শিক্ষা এবং সচেতন। এই রোগ সম্পর্কে শিক্ষা এবং সচেতন মানুষকে এখান থেকে বের করে আনতে পারে।

৭। ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলতে হবে। ধর্মীয় অনুশাসন এইডস প্রতিরোধে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিশেষ করে যৌন সম্পর্কের ক্ষেত্রে ধর্মীয় এবং সামাজিক অনুশাসন গুলো মেনে চলা জরুরি।

৮। এইচআইভি আক্রান্ত মায়ের থেকে সন্তানের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। তবে যেসব মায়েরা প্রয়োজনীয় থেরাপি গ্রহণ করেন তাদের ক্ষেত্রে গর্ভস্থ সন্তান আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা অনেক বেশি।

এইডস রোগ প্রতিরোধে আক্রান্ত রোগীদের যে বিষয়গুলো মেনে চলতে হবেঃ উপসংহার

এইডস রোগের মূল কারণ, এইডস রোগের লক্ষণসমূহ এবং এইডস রোগ প্রতিরোধে আক্রান্ত রোগীদের যে বিষয়গুলো মেনে চলতে হবে? এ বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। যেহেতু এইডস একটি মারাত্মক রোগ তাই আমাদের সকলকেই এই রোগ থেকে বিরত থাকতে হবে। আশা করি আপনারা উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।

আরো পড়ুনঃ টিউমার ভালো করার ৯ টি উপায়

আপনাদের বিষয়গুলো জানাতে পেরে আমরা আনন্দিত। আপনার এবং আপনার পরিবারের সুস্থতা কামনা করে আজকের মত এখানেই শেষ করছি। আবার দেখা হবে নতুন কোন আর্টিকেলে সেই পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে থাকুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url