অতিরিক্ত তামাক গ্রহণ কি ফুসফুসের ক্যান্সারের জন্য দায়ী
অতিরিক্ত তামাক গ্রহণ কি ফুসফুসের ক্যান্সারের জন্য দায়ী কিনা? সে বিষয় সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। তাই অতিরিক্ত তামাক গ্রহণ কি ফুসফুসের ক্যান্সারের জন্য দায়ী কিনা? সে সম্পর্কে জানতে পড়তে থাকুন। চলুন দেখে নেই, অতিরিক্ত তামাক গ্রহণ কি ফুসফুসের ক্যান্সারের জন্য দায়ী?
পেজ সূচিপত্র: অতিরিক্ত তামাক গ্রহণ কি ফুসফুসের ক্যান্সারের জন্য দায়ী
উপস্থাপনা
বর্তমানে অনেকেই ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন। ফুসফুসে আক্রান্ত হওয়ার যে সকল কারণ রয়েছে সেই কারণগুলো সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরা হবে। তাই ফুসফুসে আক্রান্ত হওয়ার কারণসমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানার জন্য সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়তে থাকুন।
মনোযোগ সহকারে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়লে আশা করা যায় আপনি ফুসফুস ক্যান্সার সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য জানতে পারবেন। আসুন দেখে নেয়া যাক, অতিরিক্ত তামাক গ্রহণ কি ফুসফুসের ক্যান্সারের জন্য দায়ী কিনা, সে বিষয়ে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।
অতিরিক্ত তামাক গ্রহণ কি ফুসফুসের ক্যান্সারের জন্য দায়ী
অতিরিক্ত তামাক গ্রহণ করলে তা শরীরের বিভিন্ন ক্ষতি সাধন করে থাকে। তবে অতিরিক্ত তামাক গ্রহণ করলে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি থাকে ফুসফুস ক্যান্সারের। কেননা ফুসফুস ক্যান্সারের জন্য তামাক দায়ী। আপনি দেখবেন যেকোনো ধরনের তামাক জাতীয় পণ্যের গায়ে সতর্ক স্বরূপ লেখা থাকে "তামাক ক্যান্সারের কারণ" বা এই জাতীয় কোন বাক্য লেখা থাকে। সুতরাং এ কথা সর্বজন স্বীকৃত যে অতিরিক্ত তামাক গ্রহণ করলে তা ফুসফুসের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
আরো পড়ুন: দানের ফজিলত সম্পর্কে ২টা ঘটনা
শুধু ফুসফুস ক্যান্সারেই নয় তামাক গ্রহণ করলে আরো যে সকল শারীরিক জটিলতা দেখা দেয় সেই বিষয়ে সম্পর্কে নিজে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। তাই আপনি যদি তামাকের অন্যান্য পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে চান তাহলে নিম্ন বর্ণিত তথ্যগুলো মনোযোগের সাথে পড়তে থাকুন।
- মুখের ক্যান্সার হয়।
- ফুসফুস আক্রান্ত হওয়া।
- হার্ট অ্যাটাক।
- ডায়াবেটিস।
- দাঁতের সমস্যা হওয়া।
- কানে কম শোনা।
- চোখে কম দেখা।
- সন্তান জন্মদানের ক্ষমতা হ্রাস পাওয়া।
- দ্রুত মেনোপজ হওয়া।
- হজম শক্তি কমে যাওয়া।
কি কারণে ফুসফুসে ক্যান্সার হয়
অতিরিক্ত তামাক গ্রহণ কি ফুসফুসের ক্যান্সারের জন্য দায়ী কিনা, সেই প্রশ্নের সঠিক উত্তর ইতোমধ্যেই উপরে তুলে ধরা হয়েছে। তবে শুধু অতিরিক্ত তামাক গ্রহণ নয়, আরো বিভিন্ন কারণে ফুসফুসে ক্যান্সার হতে পারে। সাধারণত যে সকল কারণে ফুসফুসে ক্যান্সার হয় সেই কারণগুলো সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরা হবে।
তাই ফুসফুস ক্যান্সারের কারণসমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে হলে আর্টিকেলের এই অংশটি আপনাকে মনোযোগের সাথে পড়তে হবে। তো আসুন দেখে নেয়া যাক,কি কারণে ফুসফুসে ক্যান্সার হয়? সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।
- ধূমপান করা: অতিরিক্ত তামাক গ্রহণ করলে যে ফুসফুসে ক্যান্সার হয়। আর মানুষ সবচেয়ে বেশি তামাক গ্রহণ করে থাকে ধূমপান করার মাধ্যমে। তাই আপনি যদি অধিক মাত্রায় ধূমপান করে থাকেন সেক্ষেত্রে আপনার ফুসফুস ক্যান্সারের সম্ভাবনা রয়েছে। যারা ধূমপান করে তাদের অধিকাংশই কোন না কোন ভাবে ক্যান্সারে আক্রান্ত।
- ক্ষতিকর কেমিক্যালের প্রভাব: বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর কেমিক্যাল এর প্রভাবেও অনেক সময় ফুসফুসের ক্যান্সার হয়ে থাকে। বিশেষ করে যে সকল শ্রমিক কেমিক্যাল এর ফ্যাক্টরিতে কাজ করে তাদের ফুসফুস ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। সুতরাং ক্যান্সার হওয়ার অন্যতম একটি কারণ হলো কেমিক্যাল এর ক্ষতিকর প্রভাব।
- আর্সেনিক: পানিতে অধিক মাত্রায় আর্সেনিক থাকলে সেই পানি পান করার ফলেও ফুসফুসের ক্যান্সার হতে পারে। বিশেষ করে দীর্ঘদিন যাবত যদি আপনি আর্সেনিকযুক্ত পানি পান করে থাকেন তাহলে ফুসফুসের ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। আর তাই পানি পান করার পূর্বে, সেই পানিতে আর্সেনিক রয়েছে কিনা তা নিশ্চিত হয়ে তারপরে পানি পান করতে হবে। তা না হলে ফুসফুস ক্যান্সারের ঝুঁকি থেকে যায়।
আরো পড়ুন: বিয়ের আগে যে কাজগুলো অবশ্যই করবেন
- ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: এমন কিছু ঔষধ রয়েছে যে ঔষধগুলোর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে ফুসফুসের ক্যান্সার হতে পারে। বিশেষ করে বিভিন্ন রোগের অ্যান্টিবায়োটিক জাতীয় ঔষধ গুলো ফুসফুস ক্যান্সারের অন্যতম কারণ। আর এ কারণেই ঔষধ সেবন করার পূর্বে, সেই ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিতে হয়। কেননা কোন ঔষধ কোন ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া করে তা না জেনে অতিরিক্ত মাত্রায় সেই ঔষধ সেবন করলে পরবর্তীতে তা ক্ষতির কারণ হতে পারে।
- জেনেটিক কারণ: জেনেটিক কারণেও ফুসফুসে ক্যান্সার হতে পারে। আপনার পূর্বপুরুষের মধ্যে কারো যদি ফুসফুস ক্যান্সারের ইতিহাস থাকে সেক্ষেত্রেও ফুসফুস ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যদি উপরে উল্লেখিত কোন কারণ না থাকার পরেও ফুসফুস ক্যান্সারে কোন ব্যক্তি আক্রান্ত হয় সেক্ষেত্রে ধরে নিতে হবে যে তার জেনেটিক কারণে ফুসফুসের ক্যান্সার হয়েছে।
ফুসফুসের ক্যান্সার এর চিকিৎসা
অতিরিক্ত তামাক গ্রহণ কি ফুসফুসের ক্যান্সারের জন্য দায়ী কিনা? সেই বিষয়ে সম্পর্কে আর্টিকেলটির প্রথম অংশ বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আর্টিকেলটির এই অংশে ফুসফুসের ক্যান্সার এর চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরা হবে। ফুসফুসের ক্যান্সার এর চিকিৎসা সম্পূর্ণ নির্ভর করবে ক্যান্সারের মাত্রার উপরে।
ক্যান্সার মারাত্মক আকার ধারণ করে তাহলে এক ধরনের চিকিৎসা। আর ক্যান্সার ততটা ছড়িয়ে না পড়লে অন্য ব্যবস্থায় চিকিৎসা করা হয়। যাই হোক ফুসফুস ক্যান্সারের যাবতীয় চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা তুলে ধরা হলো। আসুন দেখে নেই ফুসফুসের ক্যান্সার এর চিকিৎসা সম্পর্কে বিস্তারিত।
- সার্জারি: ফুসফুস ক্যান্সারের জনপ্রিয় ও কার্যকর চিকিৎসা পদ্ধতি হলো সার্জারি। সার্জারি করার মাধ্যমে অল্প সময়ের মধ্যে ফুসফুসের ক্যান্সার থেকে সম্পূর্ণভাবে আরোগ্য লাভ করা সম্ভব। ক্যান্সার যদি অতিরিক্ত মাত্রায় ছড়িয়ে পড়ে সেক্ষেত্র সার্জারি ছাড়া ভিন্ন কোন পদ্ধতি ততটা কার্যকর নয়। এ কারণেই ক্যান্সারের চিকিৎসায় সার্জারি খুবই কমন একটি বিষয়।
- রেডিয়েশন থেরাপি: রেডিয়েশন থেরাপির মাধ্যমেও ফুসফুসের ক্যান্সার থেকে আরোগ্য লাভ করা যায়। তবে রেডিয়েশন থেরাপি বেশ ব্যয়বহুল একটি চিকিৎসা পদ্ধতি। আপনি যদি রেডিয়েশন থেরাপির মাধ্যমে ফুসফুসের ক্যান্সার দূর করতে চান সেক্ষেত্রে আপনাকে প্রচুর টাকা খরচ করতে হবে। এমনকি ভালো রেডিয়েশন থেরাপি গ্রহণ করার জন্য আপনার বিদেশে যাওয়ার প্রয়োজন হতে পারে।
- কেমোথেরাপি: ক্যান্সারের চিকিৎসায় কেমোথেরাপি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অধিকাংশ ক্যান্সার কেমোথেরাপির মাধ্যমে দূর করা সম্ভব। বিশেষ করে ফুসফুস ক্যান্সারের জন্য কেমোথেরাপি খুবই কার্যকর একটি চিকিৎসা পদ্ধতি। তবে এই পদ্ধতিটিও বেশ ব্যয়বহুল ও কষ্টসাধ্য। উন্নত মানের কেমোথেরাপি গ্রহণ করতে চাইলে অবশ্যই আপনাকে দেশের বাইরে যেতে হবে।
- টার্গেটেড থেরাপি: ফুসফুসের ক্যান্সার নিরাময় করার জন্য টার্গেটেড থেরাপি সর্বাধুনিক একটি চিকিৎসা পদ্ধতি। কেমোথেরাপির চেয়ে সূক্ষ্মভাবে ক্যান্সার দূর করতে পারে টার্গেটেড থেরাপি।যদিও টার্গেটেড থেরাপি অনেকটা কেমোথেরাপির মত তবে কেমোথেরাপির সাথে টার্গেটের থেরাপির বিস্তর পার্থক্য বিদ্যমান।
- ইমিউনো থেরাপি: ইমিউনো থেরাপির মাধ্যমেও ফুসফুসের ক্যান্সারের চিকিৎসা করা হয়। চাইলে আপনি ইমিউনি থেরাপি চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যবহার করেও ফুসফুস ক্যান্সারের চিকিৎসা করতে পারেন।
উপসংহার
অতিরিক্ত তামাক গ্রহণ কি ফুসফুসের ক্যান্সারের জন্য দায়ী কিনা? আশা করি সেই বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন। কেননা ইতোমধ্যেই উপরে ক্যান্সারের কারণ লক্ষণ ও প্রতিকার সমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
আরো পড়ুন: ভিটামিন ডি ও ই একসাথে খাওয়া যাবে কি
তাই আপনি যদি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগের সাথে পড়ে থাকেন তাহলে নিশ্চয়ই ফুসফুস ক্যান্সার সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য বিস্তারিতভাবে জানতে পেরেছেন। তথ্যবহুল এই আর্টিকেলটি আশা করি আপনার ভালো লেগেছে। যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে এই আর্টিকেলটি সকলের সাথে শেয়ার করবেন। ১৬৪১৩
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url