একজন মানুষ সর্বোচ্চ কতটুকু রক্ত দিতে পারবে
সূচিপত্রঃ একজন মানুষ সর্বোচ্চ কতটুকু রক্ত দিতে পারবে
- একজন মানুষ সর্বোচ্চ কতটুকু রক্ত দিতে পারবে
- একই ব্যক্তি কি একসাথে দুই ব্যাগ রক্ত দান করতে পারবে
- কতদিন পর পর রক্ত দেওয়া যাবে
- ৫০ কেজির কম ওজন হলে কি রক্ত দেওয়া যাবে
- শেষ কথা
একজন মানুষ সর্বোচ্চ কতটুকু রক্ত দিতে পারবে| সর্বোচ্চ কতটুকু রক্ত দেওয়া যায়
নিয়ম মেনে হোক রক্তদান। আমাদের আজকের এই পোস্টটি রক্তদান নিয়ে। একজন মানুষ সর্বোচ্চ কতটুকু রক্ত দিতে পারবে সেটা নিয়ে আমরা আজকে আলোচনা করব। অনেক মানুষ এমনিতেই রক্তদান করতে চান না, অনেকে আবার ভয় পায়। অনিয়ম করে রক্তদাতা রক্ত দান করে অসুস্থ হলে সেই রক্তদানের দেখাদেখি অনেকে উৎসাহিত না হয়ে বরং অনেকে ভয়ে রক্তদান থেকে পিছিয়ে পড়ে।
আরো পড়ুনঃ রোজমেরি তেলের উপকারিতা - রোজমেরি তেল ব্যবহারের নিয়ম
সেজন্য একজন ডোনারের নিয়ম মেনে সর্বোচ্চ কতটুকু রক্ত দেওয়া যায় সেটা জানতে হবে। এছাড়াও রক্তদান করার বেশ কিছু শর্তাবলী রয়েছে। রক্তদানের সে শর্তগুলো পূরণ হয়ে থাকলে একজন সুস্থ মানুষ তিন চার মাস পর পর এক ব্যাগ অর্থাৎ ৪৫০ মিলিলিটার রক্তদান করতে পারবেন। এক ব্যাগ রক্ত হচ্ছে শরীরের মোট রক্তের মাত্র দুই থেকে তিন শতাংশ। এই সামান্য পরিমাণ রক্ত যদি কোন রক্তদাতা কাউকে রক্ত দান করে তাহলে তার কোন ক্ষতির আশঙ্কা নাই।
একই ব্যক্তি কি একসাথে দুই ব্যাগ রক্ত দান করতে পারবে
সব কিছুরই একটা নিয়ম আছে। অতিরিক্ত কোন কিছুই ঠিক না। ঠিক তেমনি রক্তদানেও বেশ কিছু নিয়ম রয়েছে। তার মধ্যে একটা হচ্ছে একজন সুস্থ মানুষ চার মাস পর পর এক ব্যাগ করে রক্তদান করতে পারবেন। এখন কথা হচ্ছে একই ব্যক্তি কি একসাথে দুইবার রক্তদান করতে পারবে। একসাথে দুই ব্যাগ রক্ত দেয়া যেতে পারে। তবে সে ক্ষেত্রে দ্বিতীয় এক রক্ত দিলে সে ব্যাগ থেকে গ্রহিতা খুব একটা বেশি উপকার পাবে না। যখন একটা ব্যক্তি এক ব্যাগ রক্ত দেয়, তখনই তার শরীরে ব্লাড সেল কমে যায়। যেটা রিকভার না হওয়া পর্যন্ত ব্লাড দেয়া।
আরো পড়ুনঃ হযরত কাকে বলা যাবে - হযরত কাকে বলে
এখন ব্লাড সেলগুলো দ্বিগুণ কমিয়ে দিলে আপনি নিজেই রক্তশূন্যতায় পড়ার অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। অনেকেই মনে করেন যে, আমার শরীর স্বাস্থ্য ভালো আমি হয়তো একসাথে দুই ব্যাগ রক্ত দান করতে পারব। তবে হ্যাঁ আপনি একটা রোগা মানুষের চাইতে ১০০ মিলি বেশি রক্ত দান করতে পারবেন। এর চাইতে বেশি দেয়া স্বাস্থ্যসম্মত হবে না। কেননা, মানুষের শরীরে তার ওজনের সাত থেকে আট শতাংশ থাকে রক্ত। আপনার প্রয়োজনের বেশি এটা থাকে না। তবে ব্লাড সেলগুলো প্রতি চার মাস পর পর নষ্ট হয়ে যায়, সেজন্য নষ্ট না করে আমাদের প্রত্যেকেরই নিজ নিজ দায়িত্বে রক্তদান করা উচিত।
কতদিন পর পর রক্ত দেওয়া যাবে
আমরা এখন জানবো কতদিন পর পর রক্ত দেওয়া যাবে সে বিষয়ে। আসলে একটা নির্দিষ্ট সময় পর রক্তের কোষ গুলো মারা গিয়ে আবার নতুন করে তৈরি হয়ে থাকে। সেজন্য একবার রক্তদান করবার পরে শরীরে যে পরিমাণ কোষের ঘাটতি দেখা দিয়ে থাকে সেগুলোর পূরণ হতে প্রায় তিন থেকে চার মাস সময় লাগে। যার কারণে একজন রক্তদাতার রক্ত দান করা উচিত চার মাস পর পর। রক্তের কোষগুলো পরিপক্ক হবার আগেই রক্তদান করলে রক্তদাতা শরীরে যে রকম কোষের ঘাটতি দেখা দিয়ে থাকে ঠিক তেমনি পর্যাপ্ত পরিমাণ রক্তের উপাদান রক্ত গ্রহীতা ও পায় না।
ফলে রোগীর শরীরে অপরিপক্ক রক্ত ১০০% উপকারে আসে না। সেজন্য দ্রুত আরও রক্ত রোগীকে নিতে হয়। এতে করে অর্থের ও অপচয় হয়ে থাকে। অর্থাৎ চার মাস পূর্ণ হওয়ার আগেই রক্ত দিলে রোগী এক ব্যাগ রক্ত ঠিকই পাই কিন্তু রোগীর পুরোপুরি উপকার হয় না। উপরন্তু এটা রক্তদাতা ক্ষেত্রেও ক্ষতির কারণ হয়ে থাকে। তিন মাস পর ঘনঘনো কিংবা নিয়মিত তিন মাস পর বা তিন মাসের কম সময়ে রক্ত দিলে রক্তদাতা ক্ষতি হবার সম্ভাবনা থাকে। এমনকি স্থায়ীভাবে রক্তদাতা রক্তদানে অক্ষম হয়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে। ব্যাঘাত ঘটলে রক্তদাতা নিজেও একজন রক্তশূন্যতার রোগী হয়ে যেতে পারেন।
আরো পড়ুনঃ রক্ত দেওয়া-নেওয়ার আগে যে বিষয়গুলো জানা প্রয়োজন
তখন উল্টো তার নিজেরই রক্ত নেওয়ার প্রয়োজন পরতে পারে। তাই রক্তদান নিয়ম মেনে হোক। আমাদের দেশে এমনিতেই রক্তদাতা কম। রক্তদান করতে অনেকেই চাই না আবার অনেকে ভয় পায়। রক্তদাতা অনিয়ম করে রক্তদান তারপর অসুস্থ হলে রক্তদানের দেখাদেখি অন্যরা উৎসাহিত না হয়ে বরং রক্তদান থেকে অনেকে ভয় পিছিয়ে যাবে। সেজন্য একজন ডোনারের নিয়ম অনুযায়ী কমপক্ষে ১২০ দিন পর পর অর্থাৎ চার মাস পর রক্তদান করা উচিত। এতে করে রোগী ও রক্তদাতা উভয়ের জন্য মঙ্গল।
৫০ কেজির কম ওজন হলে কি রক্ত দেওয়া যাবে
একজন ব্যক্তির স্বেচ্ছায় রক্তদান করার মত মহৎ কাজ আর হতে পারে না। কেননা রক্তদানে একজন রোগীর জীবন বাঁচে। তবে যে কেউ চাইলে রক্ত দিতে পারে না। সাধারণত একবারে একজনের দেহ থেকে এক ইউনিট রক্ত নেয়া হয়ে থাকে। এই রক্তদাতার দেহে কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই আবার পুনরায় রক্ত তৈরি হয়ে যায়।
যার ফলে রক্তদাতার কোন ধরনের ক্ষতি হয় না। তবে ইচ্ছা থাকলেও রক্ত দিতে পারবে না। রক্তদানে বেশ কিছু নিয়ম রয়েছে। তার মধ্যে ৫০ কেজির কম ওজন হলে সেই ব্যক্তির রক্ত দেওয়া বারণ। এছাড়াও রক্ত দেবার সময় দৈহিক তাপমাত্রা ৩৭ দশমিক পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকতে হবে। রক্তচাপের সিস্টোলিক ১০০-১৮০ এবং ৫০-১০০ ডায়াস্টোলিক থাকতে হবে।
শেষ কথাঃ একজন মানুষ সর্বোচ্চ কতটুকু রক্ত দিতে পারবে
একজন মানুষ সর্বোচ্চ কতটুকু রক্ত দিতে পারবে বা সর্বোচ্চ কতটুকু রক্ত দেওয়া যায় ও ৫০ কেজির কম ওজন হলে কি রক্ত দেওয়া যাবে সে সম্পর্কে জানতে হলে আমাদের পুরো পোস্টটি ভালোভাবে পড়ুন, আশা করি সবকিছু ভালোভাবে বুঝতে পারবেন। একজন মানুষ সর্বোচ্চ কতটুকু রক্ত দিতে পারবে সে সম্পর্কে সবার আগে জানতে হলে আমাদের সাথেই থাকুন।
আজ আর নয়, একজন মানুষ সর্বোচ্চ কতটুকু রক্ত দিতে পারবে সে সম্পর্কে আপনার কোন কিছু জানার থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। আশা করি আমরা আপনার উত্তরটি দিয়ে দেবো। তাহলে আমাদের আজকের এই একজন মানুষ সর্বোচ্চ কতটুকু রক্ত দিতে পারবে সে সম্পর্কে পোস্টটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে, তাহলে আপনার ফেসবুক ইন্সটাগ্রাম প্রোফাইলে আমাদের পোস্টটি শেয়ার করতে পারেন। ধন্যবাদ। ২৩৭৬৬
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url