গিমা শাক এর উপকারিতা ও ঔষধি গুণ

গিমা শাক এর উপকারিতা ও ঔষধি গুণ

গিমা শাক এর উপকারিতা ও ঔষধি গুণ সম্পর্কে বলা যায়- ‘গিমা’ বা ‘গিমে’ নামটি অপরিচিত হলেও বাংলাদেশের অধিকাংশ এলাকায় পাওয়া যায়। তবে সাধারণত এই শাক হাটে-বাজারে খুব একটা দেখা যায় না। এটি দেখতে অনেকটা আগাছার মতো। লতানো চিকন ডাল বিশিষ্ট গিমা শাক ঝোপের আকারে মাটির সঙ্গে লেগে থাকে, এটি পুকুর ধারেও হয়ে থাকে।

দেশের বিভিন্ন এলাকায় এটা একেক নামে পরিচিত। তবে পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা বিবেচনায় গিমা শাক অন্য সব শাকের মতোই। পুষ্টিবিদরা বলছেন, এই শাক নানা রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে। চলুন জেনে নেয়া যাক গিমা শাক এর উপকারিতা ও ঔষধি গুণ:

আরও পড়ুন: চোখে অঞ্জনির ব্যাথা হলে কি করবেন


নিম্নের তথ্যে যা যা রয়েছে-
পরিচিতি
গিমার শাকে কি কি উপাদান আছে
গিমা শাক এর ঔষধি গুণ
গিমা শাক এর উপকারিতা


পরিচিতি

গিমা শাক বা ডেমি শাক বা ঢিমা শাক বা গিমে শাক বা ডিমে শাক বা জিমা (বৈজ্ঞানিক নাম: Glinus oppositifolius) Molluginaceae পরিবারের একটি উদ্ভিদ প্রজাতি। এটির ইংরেজি নামগুলো হচ্ছে Gima, Jima, Dime shak, Bitter Cumin, Maita, Maitakaduri shak, Indian Chickweed, Kangkong ইত্যাদি।

গিমার শাকে কি কি উপাদান আছে

প্রতি ১০০ গ্রাম গিমা শাকে রয়েছে :
ক্যালোরি.................................২২ কিলোক্যালোরি
ফ্যাট...................................০.৬২ গ্রাম
শর্করা.................................... ১.৬ গ্রাম
খাদ্য আঁশ................................  8 গ্রাম
প্রোটিন ..............................২.২৯ গ্রাম
ভিটামিন সি........................৭.০৩ মিলিগ্রাম
ক্যারোটিনয়েডস -----------৭৯৬ মাইক্রোগ্রাম।

গিমা শাক এর ঔষধি গুণ


গিমা শাক এর উপকারিতা ও ঔষধি গুণ অত্যন্ত চমৎকার। এটি অজীর্ণ, জন্ডিস, জ্বর, পিত্ত, কফে, কোষ্ঠকাঠিন্য, ফুসফুসের সমস্যা, এসিডিটি, চুলকানি, মাংসপেশি ও হাড়ের ব্যথায় উপকারী। তিতা বলে মুখের অরুচি চলে যায়। বর্তমানে অনেক আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি আবিষ্কার হলেও অতীতে স্থানীয় লোকজন তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ভেষজ গুণসম্পন্ন হিসেবে গিমা শাক ব্যবহার করতো। সুতরাং গিমা শাক এর উপকারিতা ও ঔষধি গুণ অসীম। 

গিমা শাক এর উপকারিতা


ওজন কমাতে :
যেকোন শাকসবজি ওজন কমাতে খুকই কার্যকর, তবে এক্ষেত্রে গিমা শাক এর উপকারিতা ও ঔষধি গুণ অনেক বেশি। ডাক্তাররা প্রতিদিন ডায়াবেটিস রোগীদের বেশি বেশি করে শাকসবজি খেতে পরামর্শ দেন।

গ্যাস্ট্রিক কমায়
গ্যাস্ট্রিক বা গ্যাস নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে গিমা শাক এর উপকারিতা ও ঔষধি গুণ অত্যন্ত চমৎকারভাবে এই সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে। গিমা শাক খেলে অ্যাসিডিটি ও গ্যাসের প্রকোপ কমে যায়।

ভিটামিন ‘সি’ এর অভাব পূরণ হয়
গিমা শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’। ফলে এই শাক খেলে ভিটামিন ‘সি’ এর অভাব পূরণ হয়। ভিটামিন ‘সি’ আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।


কৃমির সমস্যা কমায়
গিমা শাক এর উপকারিতা ও ঔষধি গুণ সেবনের ফলে কৃমির সমস্যা কমে যায়। রক্তে হিমোগ্লোবিন অর্থাৎ লোহিত রক্ত কণিকার পরিামণ বাড়ায়।

দাঁত ভালো রাখে 
দাঁত ও হাড়ের ক্ষয় রোধে গিমা শাক অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা রাখে। গিমা শাক এর উপকারিতা ও ঔষধি গুণ হিসেবে এর মধ্যে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও আয়রন ।

চোখের সুরক্ষায়
গিমা শাক এর উপকারিতা ও ঔষধি গুণ হিসেবে এতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি, যা চোখের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় খুবই কার্যকরী।

ত্বক ভালো রাখে
শীত ও বর্ষাকালে দাউদ, খোস পাঁচড়া রোগ বেশি দেখা দেয়। এই সময়ে গিমার শাক খেলে উপকার পাওয়া যায়। তবে কয়েকদিন নিয়মিত খাওয়া দরকার।

বসন্ত রোগের আক্রমণে 
শরীরে বসন্ত বা গুটি বসন্তের দু’একটি গুটি দেখা দেয়া মাত্রই গিমা শাক খেতে পারেন।

ডায়াবেটিক নিয়ন্ত্রণ করে
গিমা শাক ডায়াবেটিক নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত কার্যকরী। প্রাকৃতিকভাবে ডায়াবেটিক নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলে খেতে পারেন এই শাক।

ব্যথা নিরাময় করে
সুপ্রাচীন কাল থেকে রিউমেটিক ব্যথা নিরাময়ে গিমা শাক কার্যকরী। তাই গিমা শাক এর উপকারিতা ও ঔষধি গুণ এর কারণে ব্যথা নিরাময়ের জন্য ভেষজ ওষুধ তৈরিতে গিমা শাকের নির্যাস ব্যবহার করা হয়।

রক্ত পরিশোধন করে
গিমা শাকের পাতা ও ডাটা রস করে নিয়মিত পান করলে রক্ত পরিশোধন হয়। এতে রক্তে মিশে থাকা ক্ষতিকর উপাদান মলমূত্রের সঙ্গে বেরিয়ে যায়।

পাকস্থলি ভালো রাখে
তিতা স্বাদের গিমা শাকে রয়েছে প্রচুর খাদ্যআঁশ, যা হজমশক্তি বাড়ানোর পাশাপাশি পাকস্থলির কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়
এই শাকে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন এ, যা চোখের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় খুবই কার্যকরী।

অর্থাৎ গিমা শাক এর উপকারিতা ও ঔষধি গুণ এক কথায় তুলনাহীন। চলৃুন জেনে নেয়া যাক গিমার শাকে কি কি আছে? এছাড়াও এতে ভিটামিন বি১, বি২, ই ও ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, জিংক, ম্যাগনেসিয়াম এবং ম্যাংগানিজ রয়েছে। তবে মনে রাখবেন, গিমা শাক বেশি পরিমাণে খেলে বমি ও ডায়রিয়া হতে পারে। গর্ভবতী বা প্রসূতি অবস্থায় না খাওয়াটাই ভালো।


বিঃদ্রঃ-গিমা শাক এর উপকারিতা ও ঔষধি গুণ সম্পর্কিত প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য প্রকাশিত, কোনও ওষুধ বা চিকিৎসাপত্র সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনি আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে অবশ্যই পরামর্শ করবেন। গিমা শাক এর উপকারিতা ও ঔষধি গুণ শিরোনামের বিস্তারিত যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই অন্যদের সাথে শেয়ার করবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url