বিশ্বের সবচেয়ে শীর্ষ ১০টি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান

ভ্রমণ করতে কে না পছন্দ করে? আর যদি হয় সেটা অনেক দূরে তাহলে তো কথাই নেয়। আন্তর্জাতিক সংস্থা ইউনেস্কো বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ঐতিহ্যগুলোকে সংরক্ষণ এবং তা  বিশ্ববাসীকে অবহিতকরণের চলমান কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বিশ্বের সবচেয়ে শীর্ষ ১০টি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান বর্ণিত হলো:

ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটগুলি হল সাংস্কৃতিক, ঐতিহাসিক বা প্রাকৃতিক তাৎপর্যের স্থান, মানবতার কাছে তাদের মূল্যের জন্য স্বীকৃত। সাইটগুলি প্রায়শই ঐতিহাসিক গুরুত্ব, দর্শক সংখ্যা এবং সামগ্রিক প্রভাবের মতো মানদণ্ডের উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়। তো চলুন জেনে নেয়া যাক বিশ্বের সবচেয়ে শীর্ষ ১০টি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান সমূহ:

পোস্ট সূচিপত্র: বিশ্বের সবচেয়ে শীর্ষ ১০টি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান
চীনের মহাপ্রাচীর (গ্রেটওয়াল অফ চীন)
গিজার পিরামিড (মিশর)
মাচু পিচু (পেরু)
তাজমহল (ভারত)
গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ (অষ্ট্রেলিয়া)
অ্যাংকরওয়াট (কম্বোডিয়া)
পেত্রা (জর্ডান)
কলোসিয়াম (ইতালি)
ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাত (জিম্বাবুয়ে)
মাউন্ট এভারেস্ট (নেপাল ও তিব্বত)
পরিশেষে


চীনের মহাপ্রাচীর (গ্রেটওয়াল অফ চীন)

বিশ্বের সবচেয়ে শীর্ষ ১০টি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান সমূহের মধ্যে চীনের প্রাচীর। চীনের মহাপ্রাচীর মানুষের হাতে (পাথর ও মাটি দিয়ে তৈরি দীর্ঘ প্রাচীর সারি) তৈরি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় স্থাপত্য। খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতক থেকে খ্রিস্টীয় ১৬শ শতক পর্যন্ত চীনের উত্তর সীমান্ত রক্ষা করার জন্য তৈরি ও রক্ষাণাবেক্ষণ করা হয়। তবে ২২০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে ২০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের মধ্যবর্তী সময়ে চীনের প্রথম সম্রাট কিন শি হুয়াঙের অধীনে নির্মিত প্রাচীরটিই সবচেয়ে বিখ্যাত। এটি বর্তমান প্রাচীরের অনেক উত্তরে অবস্থিত এবং এর খুব সামান্যই অবশিষ্ট আছে।

৪টি ঝুলন্ত ব্রীজ দেখতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন

দেয়ালটিতে নিয়মিত বিরতিতে পর্যবেক্ষণ চৌকি আছে, যা অস্ত্র সংরক্ষণ, সেনাবাহিনীর আবাসন এবং স্মোক সংকেত প্রদানে কাজে লাগত। সেনাঘাটি এবং প্রশাসনিক কেন্দ্রসমূহ দীর্ঘ বিরতিতে অবস্থিত।

গিজার পিরামিড (মিশর)

বর্তমানে মিশরের সবচেয়ে বড়, পুরোনো এবং আকর্ষনীয় পিরামিড হচ্ছে গিজা'র পিরামিড যা খুফু'র পিরামিড হিসেবেও পরিচিত। বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে শীর্ষ ১০টি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে গিজার পিরামিড স্থান দখল করেছে। এটি বর্তমান মিসরের এল গিজা নামক স্থানের কাছে অবস্থিত, যা তৈরি হয়েছিল খ্রিস্টপূর্ব প্রায় ৫০০০ বছর আগে। এর উচ্চতা প্রায় ৪৮১ ফুট। এটি ৭৫৫ বর্গফুট জমির উপর স্থাপিত এবং এতে রয়েছে তিনটি প্রধান প্রকোষ্ঠ। এটি তৈরি করতে সময় লেগেছিল প্রায় ২০ বছর এবং শ্রমিক খেটেছিল আনুমানিক ১ লাখ। পিরামিডটি তৈরি করা হয়েছিল বিশাল বিশাল পাথর খন্ড দিয়ে। পাথর খন্ডের এক একটির ওজন ছিল প্রায় ৬০ টন, আর দৈর্ঘ্য ছিল ৩০ থেকে ৪০ ফুটের মত। এগুলো সংগ্রহ করা হয়েছিল দূর দুরান্তের পাহাড় থেকে। তৎকালীন সময়ে পাথরের সাথে পাথর জোড়া দিয়ে পিরামিড তৈরি করা হত। 

মাচু পিচু (পেরু)

বিশ্বের সবচেয়ে শীর্ষ ১০টি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান সমূহের মধ্যে অন্যতম পেরুর মাচু পিচু। কেচুয়া ভাষায় (ইনকা সাম্রাজ্যের ভাষা ছিল) একে বলা হয়-মাচু পিকচু (Machu Pikchu) যার অর্থ  দাঁড়ায় "পুরানো চূড়া"। আবার স্পেনীয় ভাষায় একে মাচু পিচু (Machu Picchu) ও বলা হয়ে থাকে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর উচ্চতা ২৪০০ মিটার (৭,৮৭৫ ফিট)। এটি পেরুর উরুবাম্বা উপত্যকার (Valle de Urubamba) ওপরে একটি পর্বত চূড়ায় অবস্থিত। মাচু পিচু ১৪৫০ সালের দিকে নির্মিত হয়। 

আরও পড়ুন: মানুষ একাকীত্বে ভোগে কেন - কখন মানুষ একাকীত্ব বোধ করে 

১৯১১ সালে হাইরাম বিঙাম (Hiram Bingham) নামে এক মার্কিন ঐতিহাসিক এটিকে আবার সমগ্র বিশ্বের নজরে নিয়ে আসেন। তারপর থেকে মাচু পিচু পর্যটকদের কাছে একটি আকর্ষণীয় দর্শনীয় স্থান হয়ে উঠেছে। ইউনেস্কো ১৯৮৩ সালে এটিকে তাদের বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে।
মাচু পিচু তার অত্যাধুনিক শুষ্ক-পাথরের নির্মাণের জন্য বিখ্যাত। স্থাপনাগুলোর দেয়াল পাথর দ্বারা নির্মিত এবং জোড়া দেবার জন্য কোনওরকম সিমেন্ট জাতীয় কোন পদার্থ বা চুন-সুরকির মিশ্রণ এখানে ব্যবহার করা হয় নি। উল্লেখ্য যে, পাথরের নির্মিত দেয়ালগুলোর জোড় এতই নিপুন যে, একটা পাতলা ছুরির ফলাও সেগুলোর ভেতর দিয়ে প্রবেশ করানো যায় না।

তাজমহল (ভারত)

ভারতের উত্তর প্রদেশে আগ্রায় অবস্থিত একটি রাজকীয় সমাধি। মুঘল সম্রাট শাহজাহান তার স্ত্রী আরজুমান্দ বানু বেগম যিনি মুমতাজ মহল (মুমতাজ মহল তাদের চতুর্দশ কন্যা সন্তান গৌহর বেগমের জন্ম দিতে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেছিলেন) নামে পরিচিত, যা বরাবরই বিশ্বের সবচেয়ে শীর্ষ ১০টি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান সমূহের মধ্যে একটি। সম্রাহ শাহজাহান তার স্মৃতির উদ্দেশে এই অপূর্ব সৌধটি নির্মাণ করেন। সৌধটির নির্মাণ শুরু হয়েছিল ১৬৩২ খ্রিষ্টাব্দে যা সম্পূর্ণ হয়েছিল প্রায় ১৬৫৩ খ্রিষ্টাব্দে।
মুঘল স্থাপত্যশৈলীর একটি আকর্ষণীয় নিদর্শন হিসেবে মনে করা হয়, যার নির্মাণশৈলীতে পারস্য, তুরস্ক, ভারতীয় এবং ইসলামী স্থাপত্যশিল্পের সম্মিলন ঘটানো হয়েছে। যদিও সাদা মার্বেলের গোম্বুজাকৃতি রাজকীয় সমাধিটিই বেশি সমাদৃত। ১৯৮৩ সালে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়। বিশ্বের সপ্তম আশ্চর্যের অন্যতম তাজমহল। তখন একে বলা হয়েছিল 'বিশ্ব ঐতিহ্যের সর্বজনীন প্রশংসিত শ্রেষ্ঠকর্ম।

গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ (অষ্ট্রেলিয়া)

বিশ্বের সবচেয়ে শীর্ষ ১০টি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান এর মধ্যে অষ্ট্রেলিয়ার গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ অনন্য। গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ অস্ট্রেলিয়ার উত্তর-পূর্ব উপকূলে অসাধারণ বৈচিত্র্য এবং সৌন্দর্যের একটি স্থান এবং একমাত্র জীবন্ত প্রাণী যা মহাকাশ থেকে দেখা যায়। এটিতে বিশ্বের বৃহত্তম প্রবাল প্রাচীরের সংগ্রহ রয়েছে, যেখানে ৪০০ ধরনের প্রবাল, ১৫০০ প্রজাতির মাছ এবং ৪০০০ ধরনের মোলাস্ক রয়েছে। গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ যুক্তরাজ্য, হল্যান্ড এবং সুইজারল্যান্ডের চেয়েও বড়। যদিও হাজার হাজার বছর ধরে আদিবাসী অস্ট্রেলিয়ান এবং টরেস স্ট্রেইট দ্বীপের লোকেরা স্বীকৃত ছিল, তবে ক্যাপ্টেন জেমস কুক গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ আবিষ্কার করেন। ক্রান্তীয় উত্তর কুইন্সল্যান্ডের কেয়ার্নস হল গ্রেট ব্যারিয়ার রিফের প্রবেশদ্বার। কেয়ার্নস হল গ্রেট ব্যারিয়ার রিফের নিকটতম উপকূলীয় শহর।

অ্যাংকরওয়াট (কম্বোডিয়া)

বিশ্বের সবচেয়ে শীর্ষ ১০টি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে কম্বোডিয়ার অ্যাংকরওয়াট স্থান দখল করেছে। অ্যাংকরওয়াট উত্তর কম্বোডিয়ায় অবস্থিত একটি বৌদ্ধ মন্দির প্রাঙ্গণ। এটি ১২শ শতাব্দীতে নির্মাণ করেছিলেন রাজা ২য় সূর্যবর্মণ। তিনি এটিকে তার রাজধানী ও প্রধান উপাসনালয় হিসাবে তৈরি করেন এবং তখন থেকেই এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় স্থান হিসাবে বিবেচিত হয়ে আসছে। প্রথমদিকে হিন্দু মন্দির হিসাবে ব্যবহৃত হলেও পরে এটিকে বৌদ্ধ মন্দিরে পরিণত করা হয়। আঙ্করভাট শব্দের অর্থ হলো শহরের মন্দির। অর্থাৎ আংকর হল সংস্কৃত শব্দ এবং নগর শব্দের স্থানীয় উচ্চারণ। এটি কম্বোডিয়ার আংকরে অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক মধ্যযুগীয় মন্দির। সুবিশাল এই স্থাপনাটি বিশ্বের সর্ববৃহৎ মন্দির।
অ্যাংকরওয়াট নির্মাণশৈলী খ্‌মের সাম্রাজ্যের স্থাপত্য শিল্পকলার অন্যতম অণুপম নিদর্শন। এটি কম্বোডিয়ার জাতীয় পতাকায় স্থান পেয়েছে এবং দেশটির প্রধান পর্যটন আকর্ষণ হিসেবে বিবেচিত। অ্যাংকরওয়াট খ্‌মের মন্দির নির্মাণ কৌশলে দুই ধরনের পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে। যথা– টেম্পল মাউন্টেন বা পাহাড়ি মন্দির ধাঁচ এবং গ্যালারি মন্দির ধাঁচ। এটি হিন্দু পুরাণের দেব-দেবীদের বাসস্থান মেরু পর্বতের আদলে নির্মাণ করা হয়েছে। ফলে এর চারদিকে রয়েছে পরিখা ও ৩.৬ কিমি দীর্ঘ প্রাচীর। ভিতরে ৩টি আয়তাকার গ্যালারি বা বেদি আকৃতির উঁচু এলাকা রয়েছে। মন্দিরের কেন্দ্রস্থলে রয়েছে স্তম্ভাকৃতির স্থাপনা। মন্দিরটির বিশালত্ব, সৌন্দর্য ছাড়াও এর দেয়ালের সুন্দর সুন্দর সব কারুকার্যের জন্য এটি সারা বিশ্বে পরিচিত। ১৯৮৫ সালে ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে ঘোষণা করেছে পেত্রাকে।

পেত্রা (জর্ডান)

‘পেত্রা’ শব্দের অর্থ হল পাথর। লাল পাথর দিয়ে তৈরি বলে সম্ভবত এই শহরটির নাম করা হয় পেত্রা। এই শহরটিতে আছে প্রায় ৩,০০০ লাল পাথরের টুম্ব, থিয়েটার, ব্যাঙ্কোয়েট হল ছাড়াও বাড়িঘর। এগুলো শুধু বিশালতার দিক দিয়েই বিখ্যাত নয়, সাথে আছে স্থাপত্য-ভাস্কর্য এবং শিল্পশৈলীর ছোঁয়া। বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে শীর্ষ ১০টি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান গুলির একটি পেত্রা।

আরও পড়ুন: ভালোবাসা আর প্রেম কী একই বিষয় না আলাদা, ভালোবাসা ও প্রেমের মধ্যে পার্থক্য কি?

মূলত, পেত্রা একটি নগর রাষ্ট্র। বর্তমান জর্দানের দক্ষিণ-পশ্চিমের গ্রাম ওয়াদি মুসা-র ঠিক পূর্বে হুর পাহাড়ের পাদদেশে এর অবস্থান। ইতিহাসের ধারণানুসারে এর পত্তন হয়েছিল খ্রিস্টপূর্ব ৩০০০ বছর আগে। প্রাচীন এ নগর রাজ্যে ছয়তলা ভবন ছিল, যার ধ্বংসাবশেষ এখনো বিদ্যমান। এখানে খুব বড় মূর্তি স্থাপিত মন্দির, একসাথে ৩০০০ দর্শক ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন নাট্যশালা, লাইব্রেরি, ১০ থেকে ১৫ হাজার দর্শক ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন গ্যালারি সমৃদ্ধ ষ্টেডিয়াম ছিল। এই প্রাচীন শহরটিকে পশ্চিমা বিশ্বের কাছে উম্মোচন করেন সুইস পরিব্রাজক জোহান লুইডইগ বুর্কহার্ট।

কলোসিয়াম (ইতালি)

এখন পর্যন্ত নির্মিত বৃহত্তম প্রাচীন অ্যাম্ফিথিয়েটার, রোমের কলোসিয়াম হল রোমান সাম্রাজ্যের স্থাপত্য এবং প্রকৌশল দক্ষতার একটি স্থায়ী প্রতীক। ৮০ খ্রিষ্টাব্দে (মতান্তরে ৮১ খ্রিষ্টাব্দে) সম্রাট টিটাস এর শাসনামলের সময় মল্লযোদ্ধা প্রিস্ক্যাস ও ভেরাস এর মধ্যে  যুদ্ধ দিয়ে এই স্থাপনার আনুষ্ঠানিক সূচনা ঘটে। বাতিক্রমীভাবে এই যুদ্ধ অমীমাংসিত থাকে এবং উভয় পক্ষকেই বিজয়ী ঘোষিত করা হয়।
প্রাচীন রোমান সাম্রাজ্যের গোলাকৃতি ও বহুতল অ্যাম্ফিথিয়েটার হিসেবে বৃহত্তম এ স্থাপনাকে ক্রীড়ায় ব্যবহার করা হতো। মল্লবীরগণ যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে একজন আরেজনকে শেষ না করা পর্যন্ত যুদ্ধ চলতেই থাকতো অপরপক্ষকে মেরে ফেলে নিজেকে টিকিয়ে রাখতো। অনেক সময় হিংস্র জীব-জন্তুর সাথেও লড়তে হতো তাদের। স্থল-নৌযুদ্ধ এবং শিকার সম্পর্কিত নাটকও আমন্ত্রিত দর্শকদের মনোরঞ্জনার্থে প্রদর্শন করা হতো। সেই সময় এখানে মহিলাদের মল্লযুদ্ধও অনুষ্ঠিত হতো। অনেক সময় রোমান মহিলারা নামকরা মল্লবীরদের প্রেমে পড়ে গৃহত্যাগও করতেন। সুতরাং বিশ্বের সবচেয়ে শীর্ষ ১০টি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান সমূহের মধ্যে ইতালির কলোসিয়ামেএকটি।

ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাত (জিম্বাবুয়ে)

বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে শীর্ষ ১০টি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে জিম্বাবুয়ের ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাত একটি। স্থানীয় চিতোঙ্গা আদিবাসীরা একে ‘মোজি-ওয়া-তুনিয়া’ নামে ডেকে থাকে। এর অর্থ হচ্ছে বজ্রের ধোঁয়া। জলপ্রপাতটির আওয়াজ অত্যন্ত গর্জনশীল, তাই নামকরণ করেছেন আদিবাসীরা। ব্রিটিশ সম্রাজ্ঞী রাণী ভিক্টোরিয়াকে চিরস্মরণীয় করে রাখতে ১৬ নভেম্বর, ১৮৫৫ তারিখে স্কটিশ মিশনারি ও ব্রিটিশ অভিযাত্রী ডেভিড লিভিংস্টোন নিজ নামে পরিচিত লিভিংস্টোন দ্বীপপুঞ্জ থেকে জলপ্রপাতটি দেখে এর নামকরণ করেন।

বোয়ালিয়া ঝর্ণা দেখতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন

২০১৩ সালে জিম্বাবুয়ে সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে এ জলপ্রপাতের পুনরায় নামকরণ করেন মোজি-ওয়া-তুনিয়া। এটি জাম্বিয়া এবং জিম্বাবুয়ের সীমান্তে অবস্থিত। ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাতটি প্রায় ২০০ মিলিয়ন বছর আগে জুরাসিক যুগে গঠিত হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়।

আরও পড়ুন: অনলাইনে অর্থ উপার্জনের ৫টি বৈধ উপায়সমূহ

এটি বিশ্বের বৃহত্তম জলপ্রপাত । ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাত পৃথিবীর সবচেয়ে প্রশস্ত বা সর্বোচ্চ জলপ্রপাত নয়, তবে এটি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় জলপ্রপাত, যা এই শ্রেণীবিভাগকে দৃঢ় করে। এটি উত্তর আমেরিকার নায়াগ্রা জলপ্রপাতের দ্বিগুণ উচ্চতা, এবং এটি শুধুমাত্র দক্ষিণ আমেরিকার ইগুয়াজু জলপ্রপাত দ্বারা প্রতিদ্বন্দ্বী।

মাউন্ট এভারেস্ট (নেপাল ও তিব্বত)

নেপাল এবং তিব্বতের সীমান্তে অবস্থিত, মাউন্ট এভারেস্টের সুউচ্চ শিখরটি বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু পর্বতগুলির মধ্যে একটি এবং সবচেয়ে সুপরিচিত। ভারতীয় এবং এশীয় টেকটোনিক প্লেট একে অপরের বিরুদ্ধে ধাক্কা দেওয়ার কারণে পর্বতশ্রেণীটি ৬০ মিলিয়ন বছর আগে গঠিত হয়েছিল বলে অনুমান করা হয়। প্রতি বছর পাথুরে চূড়াটি ০.২৫ ইঞ্চি বৃদ্ধি পেতে থাকে। এটি স্থানীয় আদিবাসীদের কাছে বহু শতাব্দী ধরে পরিচিত ছিল, যাদের পাহাড়ের নামের অর্থ 'মহাবিশ্বের দেবী', কিন্তু ১৮৪১ সাল পর্যন্ত স্যার জর্জ এভারেস্টের নেতৃত্বে ব্রিটিশ সমীক্ষার মাধ্যমে পশ্চিমা বিশ্বের দ্বারা চিহ্নিত করা হয়নি। আজ শত শত নির্ভীক পর্বতারোহী প্রতি বছর সুউচ্চ চূড়াটি অতিক্রম করার চেষ্টা করেন। অর্থাৎ বিশ্বের সবচেয়ে শীর্ষ ১০টি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান সমূহের মধ্যে একটি মাউন্ট েএভারেস্ট।

পরিশেষে

আসলে ভ্রমণ বা ঐতিহাসিক স্থান পরিদর্শন যাই বলেন না কেন সবারই তা ভালো লাগে। এবং সবথেকে বড় কথা এগুলো থেকে অত্যধিক আনন্দ লাভ করা যায়। নতুন দেশ, নতুন সভ্যতা, আলাদা রীতি রেওয়াজ সবকিছুই ভিন্ন। আশা করছি, বিশ্বের সবচেয়ে শীর্ষ ১০টি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান সম্পর্কে যদি জেনে থাকেন তাহলে আপনাদের উপকারে আসবে। এ ছাড়াও আরো কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন। এরকম আরো তথ্যমূলক পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ফলো করতে পারেন। বিশ্বের সবচেয়ে শীর্ষ ১০টি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান বিষয়ক আলোচনায় আমাদের সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url