কানে হেডফোন ব্যবহারের ক্ষতিসমূহ - কিভাবে প্রতিরোধ করা যেতে পারে
প্রযুক্তি উদ্ভাবনীর যুগে আমাদের জীবনযাত্রা অনেক কিছুতেই সহজ হয়ে গেছে। প্রযুক্তির আশির্ব্বাদ হিসেবে পেয়েছি আমরা মোবাইল ফোন। আসলে এই মোবাইল ফোনটি হচ্ছে মানুষের প্রয়োজনের সঙ্গী, কিন্তু এই সঙ্গীই যদি রণাঙ্গিনী হয়ে উঠে বিপদ আসে তখনই। আসলে প্রযুক্তির বিলাসিতায় আমরা অনেক কিছুই খেয়াল করিনা। এই যেমন ধরুন কানে হেডফোন ব্যবহারের ক্ষতিসমূহ - কিভাবে প্রতিরোধ করা যেতে পারে ইত্যাদি বিষয়ে।
পৃথিবীর খুব কম দেশেই আমাদের মত মোবাইলের অপব্যবহার হয়ে থাকে। অর্থাৎ, ভালো কাজে ব্যবহার না করে খারাপ বিষয়টাই আমাদের আকর্ষিত করে বেশী। কারণ উন্নত দেশগুলোতে তারা মোবাইল ফোন শুধুমাত্র যোগাযোগের ক্ষেত্রেই ব্যবহার করে থাকে, আর ছবি দেখা, লেখালেখি, গান দেখা ও শোনা, নিউজ দেখা ইত্যাদি বিষয়গুলি তারা কম্পিউটার/ল্যাপটপে সেরে নেয়। আমরা সারাদিন মোবাইল ফোন ঘাটাঘাটি তো করেই থাকি তার উপরে কানে থাকে হেডফোন। এই হেডফোন/ইয়ারফোনটা আসলে কোন সময় লাগিয়েছি বা কোন সময় খুলবো তার কোন হিসাব জ্ঞান আমাদের মাঝে কাজ করে না। তো চলুন দীর্ঘক্ষণ কানে হেডফোন ব্যবহারের ক্ষতিসমূহ - কিভাবে প্রতিরোধ করা যেতে পারে তা জেনে নেই :
পোস্ট সূচিপত্র: কানে হেডফোন ব্যবহারের ক্ষতিসমূহ - কিভাবে প্রতিরোধ করা যেতে পারে
কানে হেডফোন ব্যবহারের ক্ষতিসমূহ
কিভাবে প্রতিরোধ করা যেতে পারে
কানে হেডফোন ব্যবহারের ক্ষতিসমূহ - কিভাবে প্রতিরোধ করা যেতে পারে- শেষ কথা:
কানে হেডফোন ব্যবহারের ক্ষতিসমূহ :
কানে ব্যথা : দীর্ঘ সময় ধরে কানে হেডফোন ব্যবহার করলে একদিকে যেমন কানে ব্যথা অনুভব হয়, তেমনি মাঝে মাঝে কানের ভেতরে ঝিম ধরা আওয়াজ হয়ে থাকে, যা কানের মারাত্মক ক্ষতির উপসর্গ। অর্থাৎ কানে হেডফোন ব্যবহারের ক্ষতিসমূহ এর মধ্যে এটিও একটি।
মস্তিস্কের সমস্যা : কানে হেডফোন ব্যবহারের ক্ষতিসমূহ বলতে হেডফোন থেকে নির্গত ইলেক্ট্রম্যাগনেটিক তরঙ্গ মস্তিস্কের জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে। কেননা কান সরাসরি মস্তিস্কের সাথে সম্পৃক্ত। এক কথায় তা সরাসরি মস্তিস্ককে আঘাত হানতে পারে। আর এক্ষেত্রে ব্লুটুথ হেডফোন ব্যবহারে সবচেয়ে ঝুঁকি বেশি।
আরও পড়ুন: ঘাড়ে ব্যথা একটা মারাত্মক সমস্যা - সমাধান কি
শ্রবণশক্তি লোপ পাওয়া : হেডপোন/ইয়ারফোনে সাধারণত ৯০ ডেসিবলের ওপর শব্দ শুনলে শ্রবণশক্তি লোপ পেতে পারে। অর্থাৎ কানে হেডফোন ব্যবহারের ক্ষতিসমূহ দিকগুলির মধ্যে অনেক ক্ষেত্রে শ্রবণশক্তি চিরতরের মতো হারিয়েও যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হয়ে থাকে। বিশেষজ্ঞদের মতে ১০০ ডেসিবলের উপরে হেডফোন ব্যবহার করলে মাত্র ১৫ মিনিটে নষ্ট হতে পারে শ্রবণশক্তি।
শ্রুতিপথে বাতাসের বাধা : বর্তমানে কিছু হেডফোন/এয়ারফোনের সাউন্ড কোয়ালিটি ভালো হলেও এসব এয়ারফোন এয়ারক্যানেল পর্যন্ত প্রবেশ করানো হয়। ফলে কানে হেডফোন ব্যবহারের ক্ষতিসমূহ বলতে এটি কানের ভিতর বায়ু প্রবেশে বাধার সৃষ্টি করে। যার ফলে ইনফেকশনের সম্ভাবনা বেশি হয়ে থাকে।
আরও পড়ুন: স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়ার কারণসমূহ ও প্রতিকার
ইনফেকশন হওয়া : নিজের ব্যবহৃত হেডফোনটি অনেক সময় বন্ধু-বান্ধবদের কাছে শেয়ার করা হয়ে থাকে, এতে অন্যের রোগ জীবাণু সংক্রামিত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে। সুতরাং কানে হেডফোন ব্যবহারের ক্ষতিসমূহ এর মধ্যে হচ্ছে সংক্রামিত জীবাণু, তাই এ বিষয়ে অবশ্যই সচেতন থাকতে হবে।
শ্রবণশক্তির জড়তা : কানে হেডফোন ব্যবহারের ক্ষতিসমূহ এর মধ্যে শ্রবণশক্তির জড়তা। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা দীর্ঘ সময় এয়ারফোন ব্যবহার করেন তারা উচ্চ শব্দে মিউজিক শোনেন। এতে কানে জড়তা চলে আসে।
কিভাবে প্রতিরোধ করা যেতে পারে :
- একটানা ৩০ মিনিটের বেশি এয়ারফোন/হেডফোন ব্যবহার না করা।
- মোবাইলে কোনও সিনেমা দেখতে হলে ৩০-৪০ মিনিট পর পর মিনিট পাঁচেকের বিরতি দিতে হবে।
- যে কোম্পানির মোবাইল ক্রয় করবেন সাধারণত সেই কোম্পানিরই এয়ারফোন/হেডফোন ব্যবহার করাটাই যুক্তিযুক্ত হবে।
- হেডফোন বা এয়ারফোন কখনই সর্বোচ্চ ভলিয়মে শোনা উচিত নয়। এতে কানের পর্দা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে।
- অন্যের ব্যবহৃত হেডফোনের মাধ্যমে অনেক সময় কানে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ঘটে থাকে। তাই বন্ধু-বান্ধব বা পরিচিতদের হেডফোন ব্যবহার না করাই ভালো।
আরও পড়ুন: সুস্থ্য থাকতে হলে কী করণীয় - কিভাবে সুস্থ্য থাকা যেতে পারে
- রাস্তা পারাপারের সময় কোনমতেই হেডফোন ব্যবহার না করাই ভালো। কারণ এতে জীবনের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
- অনেক সময় গাড়ি, সাইকেল বা মোটর সাইকেল চালানোর সময় কানে হেডফোন ব্যবহার করা কোনমতেই সঠিক নয়।
- বেশিরভাগ হেডফোন ব্যবহারকারী সাধারণত বাইরের শব্দ থেকে বিরত থাকতে হেডফোনের শব্দ বাড়িয়ে দিয়ে থাকে, যা ক্ষতিকর। এক্ষেত্রে আপনি ‘নয়েজ ক্যান্সেলেশন হেডফোন’ ব্যবহার করতে পারেন। এতে কম শব্দে নিরাপদ গান শোনা বা গেইম খেলা যায়।
কানে হেডফোন ব্যবহারের ক্ষতিসমূহ - কিভাবে প্রতিরোধ করা যেতে পারে - শেষ কথা:
আশা করছি, এগুলো যদি জেনে থাকেন তাহলে আপনাদের উপকারে আসবে। কানে হেডফোন ব্যবহারের ক্ষতিসমূহ - কিভাবে প্রতিরোধ করা যেতে পারে বিষয়ক আরো কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন। এ রকম আরো তথ্যমূলক পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ফলো করতে পারেন। এতোক্ষণ কানে হেডফোন ব্যবহারের ক্ষতিসমূহ - কিভাবে প্রতিরোধ করা যেতে পারে বিষয়ে আমাদের সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url