ফুড পয়জনিং কি - ফুড পয়জনিংয়ের লক্ষণগুলি - প্রতিরোধে করণীয় ভূমিকা

আমরা হরহামেশাই একটি সমস্যায় পড়ি বা নিজের সামনেই ঘটে থাকে, তা হলো হঠাৎ করেই কেউ প্রচন্ড বমি করছে বা ঘন ঘন পাতলা পায়খানা করছে বা অনেক জ্বর এসেছে বা প্রচন্ড মাথা ব্যথা করছে ইত্যাদি ইত্যাদি।
এরপর আমরা জিজ্ঞাসা করি, রাতে কি খেয়েছে, ঘুম ঠিকমত হয়েছিল কিনা, সকালে কি কি খেয়েছে, বাইরে থেকে কিছু কি কিনে খেয়েছিলো ইত্যাদি। এরপর মতামত দিয়ে বসি আসলে হজম হয়নি বা বদহজম হয়েছে, ডায়রিয়া হয়েছে,যদি জ্বর আসে তাহলে বলি জ্বরের ট্যাবলেট খেলেই জ্বর কমে যাবে ইত্যাদি।

আরও পড়ুন: সুস্থ্য থাকতে হলে কী করণীয় - কিভাবে সুস্থ্য থাকা যেতে পারে

কিন্তু আমরা কখনো কি ভেবে দেখেছি যে, এই সমস্যাগুলো হঠাৎ করেই কেন হয়, কি থেকে হয়, এর যথাযথ কারণগুলি কি হতে পারে ইত্যাদি। চলুন আজকে আমরা ফুড পয়জনিং কি - ফুড পয়জনিংয়ের লক্ষণগুলি - প্রতিরোধে করণীয় ভূমিকা এইসব বিষয়ে আলোচনা করবো ও জানবো:

পোস্ট সূচিপত্র: ফুড পয়জনিং কি - ফুড পয়জনিংয়ের লক্ষণগুলি - প্রতিরোধে করণীয় ভূমিকা
ফুড পয়জনিং কি বা কাকে বলে?
ফুড পয়জনিংয়ের লক্ষণগুলি
ফুড পয়জনিংয়ের কারণগুলি কি কি?
ফুড পয়জনিং প্রতিরোধে করণীয় ভূমিকা
ফুড পয়জনিংয়ে ঘরোয়া চিকিৎসা সমূহ
ফুড পয়জনিং প্রতিরোধে করণীয় ভূমিকা : শেষ কথা

ফুড পয়জনিং কি বা কাকে বলে?

অসাবধানতাবশত যখন কেউ জীবাণুযুক্ত খাবার গ্রহণ করে এবং সেই খাবার খাওয়ার পরে অসুস্থতা বোধ করে তাকেই ফুড পয়জনিং বলে। অর্থাৎ যখন কেউ দূষিত, নষ্ট বা বিষাক্ত খাবার খায়, যা ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ও পরজীবী দ্বারা সংক্রামিত, তখন ফুড পয়জনিং হয়ে থাকে। তবে বাংলাদেশে ফুড পয়জনিং বা খাদ্যে বিষক্রিয়া একটি অতি সাধারণ ও পরিচিত সমস্যা। কারণ এখানকার রাস্তায় বা রাস্তার পার্শ্বে অবস্থিত অধিকাংশ হোটেলগুলির খাবারই অপরিস্কার ও জীবাণুযুক্ত হয়ে থাকে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ই-কোলি, সালমোনেলার ও নোরোভাইরাসের মতো ব্যাকটেরিয়ার কারণে ঘটে ফুড পয়জনিং।

ফুড পয়জনিংয়ের লক্ষণগুলি :

  • ফুড পয়জনিংয়ের লক্ষণগুলি হলো বমি বমি ভাব বা বমি করা
  • পাতলা পায়খানা/ডায়রিয়া ফুড পয়জনিংয়ের লক্ষণগুলি-র মধ্যে একটি
  • ফুড পয়জনিংয়ের লক্ষণগুলি-র মধ্যে হচ্ছে পেট কামড়ানো/পেটের ব্যথা 
  • ফুড পয়জনিংয়ের লক্ষণগুলি হচ্ছে মাথা ব্যথা ও জ্বর
  • ক্ষুধা মন্দা ভাবও ফুড পয়জনিংয়ের লক্ষণগুলি-র মধ্যে একটি
  • ১০২ ডিগ্রির বেশি জ্বর হয় যখন ফুড পয়জনিংয়ের লক্ষণগুলি চুড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছালে
  • ফুড পয়জনিংয়ের লক্ষণগুলি-র সবথেকে ভয়াবহ পর্যায় হচ্ছে রক্তাক্ত প্রস্রাব
  • কথা বলতে ও দেখতে অসুবিধাও অন্যতম ফুড পয়জনিংয়ের লক্ষণগুলি-র মধ্যে

ফুড পয়জনিংয়ের কারণগুলি কি কি?

ফুড পয়জনিংয়ের অন্যতম কারণ হচ্ছে নেরোভাইরাস, সালমোনেলা, ক্লোস্ট্রিডিয়াম পারফ্রিনজেন, ক্যাম্পাইলোব্যাক্টর এবং স্টাফিলোকক্কাস নামক প্যাথোজেনের কারণে বেশীরভাগ ফুড পয়জনিং হয়ে থাকে। এছাড়াও ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক, ছাঁচ, টক্সিন পদার্থ, অ্যালার্জেন এবং কম রান্না করা মাংস ইত্যাদিও খাদ্যে বিষক্রিয়ার জন্য সমানভাবে দায়ী।

ফুড পয়জনিং প্রতিরোধে করণীয় ভূমিকা :

  • ফুড পয়জনিং প্রতিরোধে করণীয় ভূমিকা হিসেবে খাবার তৈরির স্থান, জিনিসপত্র ও হাত সব সময় পরিস্কার রাখতে হবে;
  • সামুদ্রিক খাবার সম্পূর্ণরূপে ভালমত পরিস্কার করে রান্না করতে হবে। অর্থাৎ ফুড পয়জনিং প্রতিরোধে করণীয় ভূমিকা হিসেবে যে কোন খাবারই পরিস্কার করে রান্না করাই সমীচিন।
  • ফুড পয়জনিং প্রতিরোধে করণীয় ভূমিকা বিষয়ে যে কোন খাদ্য ক্রয়ের আগে মেয়াদ উত্তীর্ণ কিনা তা যাচাই করে ক্রয় করতে হবে;

আরও পড়ুন: হেঁচকি ওঠে কেন - হেঁচকি থামানোর ঘরোয়া উপায়গুলি কি কি

  • খাবার গন্ধযুক্ত বা সন্দেহ মনে হলে তা না খাওয়াই ভালো। অর্থাৎ, ফুড পয়জনিং প্রতিরোধে করণীয় ভূমিকা হিসেবে পচা বা গন্ধযুক্ত খাবার না খাওয়াই ভালো।
  • ফুড পয়জনিং প্রতিরোধে করণীয় ভূমিকা-তে পানি ফুটিয়ে বা পরিশোধন করে পান করা উচিত;
  • বাইরের খোলা খাবার থেকে নিজেকে সংযত করতে হবে। অবশ্যই ফুড পয়জনিং প্রতিরোধে করণীয় ভূমিকা  হিসেবে বাইরের খোলা খাবার খাওয়া যাবেনা।
  • যে খাবারগুলো পচনশীল তা ১ ঘন্টার মধ্যেই ফ্রিজে রাখতে হবে। ফুড পয়জনিং প্রতিরোধে করণীয় ভূমিকা-র মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হলো কোন পচনশীল সঠিক প্রক্রিয়াজাত করতে হবে।
  • ফুড পয়জনিং প্রতিরোধে করণীয় ভূমিকা-র মধ্যে মাছ, মাংস ইত্যাদি খাবারগুলো যাতে আধা সিদ্ধ না থাকে সেভাবে রান্না করতে হবে;
  • বাসন মোছার ন্যাকড়া বা কাপড় নিয়মিত পরিস্কার বা ধোয়া। ফুড পয়জনিং প্রতিরোধে করণীয় ভূমিকা হিসেবে ব্যবহৃত জিনিসপত্র পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
  • রান্নার জায়গা ও বাসনকোসন সবসময় পরিস্কার ও পরিচ্ছন্ন রাখা;
  • খাবার আগে অবশ্যই নিয়মিত হাত ধোয়ার অভ্যস করতে হবে;
  • ফ্রিজের তাপমাত্রা অন্ততপক্ষে ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস এর নিচে রাখা;
  • যদি খাবার বেচে যায়, তাহলে অতিরিক্ত খাবারগুলি যত দ্রুত ঠান্ডা করে ফ্রিজে রেখে দিতে হবে;

ফুড পয়জনিংয়ে ঘরোয়া চিকিৎসা সমূহ:

  • ফুড পয়জনিংয়ে নিম্নোক্ত ঘরোয়া/ভেষজ চিকিৎসা প্রয়োগ করা যেতে পারে তবে সমস্যা তীব্র/মারাত্মক আকার ধারণ করার আগেই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।
  • কুচি আদার সঙ্গে কয়েক ফোটা মধু মিশিয়ে খেলে তা পেটের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে;
  • পেট খারাপ বা পেটে ব্যথার মতো সমস্যায় এক-চামচ জিরার গুড়া খেলে সুফল পাওয়া যায়;
  • তুলসী পাতা থেতো করে এর সঙ্গে মধু মিশ্রিত করে খেতে পারলে তা ব্যথা উপশমের জন্য দারুণ উপকারী;

আরও পড়ুন: আইসক্রিম এর উৎপত্তি ব্যবহার - বিভিন্ন নামকরণ

  • ডায়রিয়া বা ব্যাক্টেরিয়ার প্রভাব দূর করা ও এসিড কমাতে আপেল খাওয়া যেতে পারে;
  • লেবুতে থাকা এসিডিটি ব্যাকটেরিয়া অথবা ফুড পয়জনিং এর প্রভাব নষ্ট করে দেয়, অর্থাৎ, একটা গোটা পাতিলেবুর রসের সঙ্গে সামান্য চিনি দিয়ে খেতে পারা যায়;

ফুড পয়জনিং প্রতিরোধে করণীয় ভূমিকা: শেষ কথা

আশা করছি, ফুড পয়জনিং কি - ফুড পয়জনিংয়ের লক্ষণগুলি - প্রতিরোধে করণীয় ভূমিকা সম্পর্কে জেনে থাকেন তাহলে আপনাদের উপকারে আসবে। ফুড পয়জনিং কি - ফুড পয়জনিংয়ের লক্ষণগুলি - প্রতিরোধে করণীয় ভূমিকা বিষয়ক আরো কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন। এরকম আরো তথ্যমূলক পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ফলো করতে পারেন। এতোক্ষণ আমাদের সাথে ফুড পয়জনিং কি - ফুড পয়জনিংয়ের লক্ষণগুলি - প্রতিরোধে করণীয় ভূমিকা সম্পর্কিত আলোচনায় আমাদের সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url