অ্যাপেন্ডিসাইটিস এর লক্ষণ ও চিকিৎসা সেবা - অ্যাপেন্ডিসাইটিস হলে কী করণীয়

চলমান জীবনে নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে আমরা বেঁচে থাকি। আর এই বাঁচা নামক গাছটাকে আঁকড়ে ধরেই চলে আমাদের নানা প্রতিরোধ, ত্যাগ, আত্ম সংযম, মহান হওয়ার বাসনা, দুঃখ-কষ্ট-যন্ত্রণা ইত্যাদি ইত্যাদি। একটি সমস্যা আমাদের সবার মধ্যেই কম-বেশী থেকেই যায়, তা হলো অ্যাপেন্ডিসাইটিস এর সমস্যা। তাই আজকে আমরা এই অ্যাপেন্ডিসাইটিস এর লক্ষণ ও চিকিৎসা সেবা - অ্যাপেন্ডিসাইটিস হলে কী করণীয় ইত্যাদি বিষয়ে জানবো :
আমাদের দেহ নামক যন্ত্রের মধ্যে যে অসুখগুলো বাসা বাধে তার মধ্যে একটি হচ্ছে অ্যাপেন্ডিক্স। শরীরের মধ্যে একটা অপ্রয়োজনীয় অংশ যা ক্ষতিই করে। অনেকেই অ্যাপেন্ডিক্স এর ব্যথা বা উপশম না বোঝার কারণে মৃত্যুবরণ করে। তাই আজকে আমরা অ্যাপেন্ডিসাইটিস এর লক্ষণ ও চিকিৎসা সেবা - অ্যাপেন্ডিসাইটিস হলে কী করণীয় বিষয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করবো :

পোস্ট সূচিপত্র: অ্যাপেন্ডিসাইটিস এর লক্ষণ ও চিকিৎসা সেবা - অ্যাপেন্ডিসাইটিস হলে কী করণীয়
অ্যাপেন্ডিক্স কি?
অ্যাপেন্ডিসাইটিস কাকে বলে?
লক্ষণগুলি কি?
চিকিৎসা সেবা
অ্যাপেন্ডিসাইটিস হলে কী করণীয় শেষ কথা

অ্যাপেন্ডিক্স কি?

আমাদের শরীরের বৃহদান্ত্র ও ক্ষুদ্রান্ত্রের সংযোগস্থলে বৃহদান্ত্রের সঙ্গে যুক্ত একটি ছোট থলির মতো অঙ্গ থাকে, যাকে অ্যাপেন্ডিক্স বলা হয়।

অ্যাপেন্ডিসাইটিস কাকে বলে?

এই অপ্রয়োজনীয় থলির মধ্যে যদি কোন কারণে খাদ্য, মল বা কৃমি ঢুকে যায়, তাহলে শরীরে রক্ত ও পুষ্টির অভাব দেখা দেয়, এবং সেখানে নানান জীবাণুর আক্রমণে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। একেই বলে অ্যাপেন্ডিসাইটিস।

নিম্নে অ্যাপেন্ডিসাইটিস এর লক্ষণ ও চিকিৎসা সেবা - অ্যাপেন্ডিসাইটিস হলে কী করণীয় বিষয়ক আলোচনায় প্রথমে লক্ষণগুলি তুলে ধরা হলো:

লক্ষণগুলি কি?

  • পেটে ব্যথা শুরু হয়, অর্থাৎ নাভির কাছ থেকে শুরু হয়ে পেটের ডান দিকের নিচের দিকে ব্যথা ছড়িয়ে পড়ে।
  • বমি বমি ভাব এবং বমি করা
  • ক্ষুধামন্দা বা খিদে না হওয়া
  • কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া
  • জ্বর আসতে পারে, তবে এ ক্ষেত্রে শরীরের তাপমাত্রা খুব বেশি হয় না।
  • অ্যাপেন্ডিক্স কোনো কারণে ফেটে গেলে সারা পেটজুড়ে সাংঘাতিক ব্যথা অনুভূত হয় এবং পেট ফুলে ওঠে।
  • অ্যাপেন্ডিসাইটিসের ব্যথার সময় হাঁটাচলা, তলপেটে চাপ দেয়া কিংবা কাশতে থাকলে এর পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।

চিকিৎসা সেবা:

  • অ্যাপেন্ডিসাইটিস হলে কী করণীয় হিসেবে সমস্যা দেখা দিলে ২৪ ঘন্টার মধ্যে অপারেশন করতে হয়। তা না হলে অ্যাপেন্ডিক্স ফেটে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকে। আসলে অ্যাপেন্ডিসাইটিস এর লক্ষণ ও চিকিৎসা সেবা এর ক্ষেত্রে এ ধরনের সমস্যাগুলোয় দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেয়াই বুদ্ধিমানের কৌশল।
  • অ্যাপেন্ডিসাইটিস এর লক্ষণ ও চিকিৎসা সেবা এর ক্ষেত্রে কিছু কিছু জটিলতা এড়াতে পেটে তীব্র ও স্থায়ী অথবা থেকে থেকে ব্যথা শুরু হলে রোগীকে শক্ত খাবার দেয়া থেকে বিরত থাকুন এবং অ্যাপেন্ডিসাইটিস হলে কী করণীয় হিসেবে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান।
  • অ্যাপেন্ডিসাইটিস হলে কী করণীয় এর মূল চিকিৎসাই হলো আক্রান্ত অংশ বা অ্যাপেন্ডিক্স যত দ্রুত সম্ভব অস্ক্রোপচারের মাধ্যমে বাদ দিতে হয়। তবে এক্ষেত্রে সমস্যা হলো অস্ত্রোপচারের ভয়ে অনেকে হাসপাতালে যেতে চায় না।

আরও পড়ুন: কোমর ব্যথা হলে কি করণীয় - নিরাময় পদ্ধতিগুলি কি কি

অ্যাপেন্ডিসাইটিস এর লক্ষণ ও চিকিৎসা সেবা সংক্রান্ত পরামর্শ হিসেবে, যাঁদের প্রায়ই মাথা ধরে, বমিভাব, দীর্ঘ দিন ধরে পেটে ব্যথা আছে, সাধারণত তাঁদের অ্যাপেন্ডিক্সের সমস্যা থাকতে পারে। তবে এই ধরনের সমস্যার হাত থেকে বাঁচতে খাদ্যাভাসে সামান্য কিছু পরিবর্তন আনা যেতেই পারে :
  • অ্যাপেন্ডিসাইটিস হলে কী করণীয় হিসেবে ফেনুগ্রিক বা মেথি অ্যাপেন্ডিক্সের জন্য খুবই ভালো। এরা অ্যাপেন্ডিক্সের চারপাশের শ্লেষ্মা জমতে দেয় না, এর ফলে ইনফেকশনের চান্স অনেকটাই কমে যায়। বিশেষ করে মেথি অ্যাপেন্ডিক্সের ব্যথা কমাতেও সাহায্য করে।
  • কিভাবে তৈরী করবেন তার প্রক্রিয়া : প্রথমে এক লিটার জলের মধ্যে দুই চা-চামচ মেথি দানা ফেলে আধ ঘন্টা ফুটিয়ে নিতে হবে। এরপর মেথির দানাগুলো ছেঁকে নিয়ে দিনে দুইবার করে ওই জল খেতে হবে। এতে ব্যথা উপশম হবে।

আরও পড়ুন: ঘাড়ে ব্যথা একটা মারাত্মক সমস্যা - সমাধান কি

  • অ্যাপেন্ডিসাইটিস হলে কী করণীয় বা তাৎক্ষণিক হিসেবে আমন্ড তেল দিয়ে মেসেজ করলে খুব দ্রুত অ্যাপেন্ডিক্সের ব্যথা কমে যায়। তবে প্রথমে অ্যাপেন্ডিক্সের অংশে গরম কিছু রাখতে হবে। তারপর ব্যথার জায়গায় আমন্ড তেল ভেজনো তোয়ালে দিয়ে ধীরে ধীরে মালিশ করে যেতে হবে যতক্ষণ পর্যন্ত ব্যথায় আক্রান্ত ব্যক্তি আরাম না পা্চ্ছে।
  • এ ছাড়াও গাজর, শশা ও বীটের জুস অ্যাপেন্ডিসাইটিস হলে কী করণীয় হিসেবে ব্যথা হতে পরিত্রাণ হিসেবে খেতে পারেন। এ ছাড়াও এর পাশাপাশি মূলো, ধনেপাতা ও পালং শাকের জুসও দিনে দু’বার করে খেলে ব্যথা অনেকটাই কমে যায়।
  • মিন্ট বা পুদিনাও অ্যাপেন্ডিসাইটিস রোগীদের জন্য অনেক উপকারী। অ্যাপেন্ডিসাইটিস হলে কী করণীয় হিসেবেও রোগীদের বমিভাব, গ্যাস ইত্যাদি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়, এ ছাড়াও সাধারণ ভাবে জলের সঙ্গে মিশিয়ে দিনে দু’বার খেতেই পারেন।

অ্যাপেন্ডিসাইটিস হলে কী করণীয়: শেষ কথা:

আসলে অ্যাপেন্ডিসাইটির হল একটা চিকিৎসাগত জরুরি পরিস্থিতি যা, যে কোন বয়সেই ঘটতে পারে, তবে সাধারণত এটা ১০ থেকে ৩০ কছর বয়সের ব্যক্তিদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। অ্যাপেন্ডিক্স হলো তলপেটের ডানদিকে ব্যথা শুরু হবে। নাভির চারিদিক থেকে ব্যথাটা ক্রমশঃ তল পেটের দিকে ছড়িয়ে পড়ে। তলপেট ফুলে ওঠে। তবে শুরুর দিকে ব্যথা কম হবে, কিন্তু ধীরে ধীরে  সেই ব্যথা ক্রমশঃ বাড়তে থাকে। অর্থাৎ সময়মত অ্যাপেন্ডিসাইটিস এর লক্ষণ ও চিকিৎসা সেবা না নিতে পারলে মৃত্যু অনিশ্চিত। এই প্রাণঘাতী সমস্যায় বিশ্বের প্রায় ৫ শতাংশ মানুষের মৃত্যু ঘটে।

আরও পড়ুন: দাঁতের ব্যথায় আমাদের করণীয় ও ঘরোয়া উপায়সমূহ

আশা করছি, অ্যাপেন্ডিসাইটিস এর লক্ষণ ও চিকিৎসা সেবা সম্পর্কে জেনে থাকেন তাহলে আপনাদের উপকারে আসবে। অ্যাপেন্ডিসাইটিস এর লক্ষণ ও চিকিৎসা সেবা - অ্যাপেন্ডিসাইটিস হলে কী করণীয় বিষয়ক আরো কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন। এরকম আরো তথ্যমূলক পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ফলো করতে পারেন। এতোক্ষণ আমাদের সাথে অ্যাপেন্ডিসাইটিস এর লক্ষণ ও চিকিৎসা সেবা - অ্যাপেন্ডিসাইটিস হলে কী করণীয় আলোচনায় থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনাদের সবার শুভকামনা করি।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url