শিশুর এডিনয়েডের সমস্যা - শিশুর এডিনয়েড কী ও কেন হয় - শিশুর এডিনয়েড আছে কীভাবে বুঝবেন
অনেক আকুলতা, বিকুলতা আর অপেক্ষার পর শুরু হয় সামাজিক কাঠামোয় বাধা একান্ত নিজস্ব পরিবার, অর্থাৎ ঘর-সংসার। আর এই সংসার বা পরিবারে আসে ফুটফুটে সন্তান। কিন্তু এই সন্তান যদি সুস্থ্য না থাকে বা অসুস্থ্য থাকে, তাহলে তার সম্পূর্ণ দায়-ভার বা দোষ পড়ে মায়ের উপর। অর্থাৎ বর্তমানে এডিনয়েড শিশুদের একটি জটিল সমস্যা। শিশুর এডিনয়েডের সমস্যা - শিশুর এডিনয়েড কী ও কেন হয় - শিশুর এডিনয়েড আছে কীভাবে বুঝবেন
সতর্কতা বা অসতর্কতার কারণেই হোক, শিশুদের সর্দি লাগলে শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। যখন নাক বন্ধ হয়ে যায়, তখন মুখ দিয়ে শ্বাস নিয়ে থাকে। আবার একটি শিশু স্বাভাবিক থাকা অবস্থায়ও ঘুমানোর অনেক সময় হা করে থাকে। শ্বাস নিলে শব্দ হয়। আর এর ফলে শিশুটির সর্দি-কাশি হলে তা সহজে সারতে চায়না, কানে ঘন ব্যথা, কানে কম শোনে, কান পাকে ও কান দিয়ে পানি পড়ে। সুতরাং এরকম জাতীয় সমস্যাকে এডিনয়েড বলে। এইসব উপসর্গ যদি দীর্ঘদিন ধরে দেখা যায়, তাহলে অতিসত্ত্বর চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। চলুন, শিশুর এডিনয়েডের সমস্যা - শিশুর এডিনয়েড কী ও কেন হয় - শিশুর এডিনয়েড আছে কীভাবে বুঝবেন ইত্যাদি েসম্পর্কে জেনে নেই :
পোস্ট সূচিপত্র: শিশুর এডিনয়েডের সমস্যা - শিশুর এডিনয়েড কী ও কেন হয় - শিশুর এডিনয়েড আছে কীভাবে বুঝবেন
এডিনয়েড আসলে কী বা কাকে বলে?
শিশুর এডিনয়েড আছে কীভাবে বুঝবেন বা কী দেখলে বুঝা যায় শিশুর এডিনয়েড আছে?
শিশুর এডিনয়েড কী ও কেন হয় ?
চিকিৎসা বিজ্ঞানে এডিনয়েড এর গ্রেডিং পদ্ধতি
শিশুর এডিনয়েডের সমস্যা হলে যেসব উপসর্গ দেখা দেয়
এডিনয়েডের প্রতিকার বা প্রতিরোধ কিভাবে করা যায়
শিশুর এডিনয়েডের সমস্যা চিকিৎসা পদ্ধতি
এ ছাড়াও সংশ্লিষ্ট বিষয়ে জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী
শিশুর এডিনয়েডের সমস্যা - শিশুর এডিনয়েড কী ও কেন হয় - শিশুর এডিনয়েড আছে কীভাবে বুঝবেন - শেষ কথা :
এডিনয়েড আসলে কী বা কাকে বলে?
শিশুর এডিনয়েড কী ও কেন হয় বা এডিনয়েড কাকে বলে, তা ব্যাখ্যা করতে গলে বলতে হয়, এডিনয়েড হলো এক ধরণের লিম্ফয়েড টিস্যু বা লসিকা গ্রন্থি, যেটা সব শিশুরই থাকে। প্রত্যেক শিশুই এডিনয়েড নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। আসলে আমাদের নাকের একদম পেছনে নাক ও গলার সংযোগ স্থলে এডিনয়েড নামক একটি লসিকা গ্রন্থি থাকে। এটি গঠনগত দিক থেকে টনসিলের মতো। এডিনয়েড কিন্তু বাইরে থেকে দেখা যায় না। কারণ আমাদের শরীরের নরম তালুর ওপরে এডিনয়েড থাকে। তাই এটি খালি চোখে দেখবার কোন সুযোগই নেই। এডিনয়েড দেখতে হলে এক্স-রে করতে হয়। অবশ্য এখন উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থায় বা বিশেষ ধরণের এন্ডোস্কোপ দিয়ে সরাসরি দেখা যেতে পারে।
শিশুর এডিনয়েড আছে কীভাবে বুঝবেন বা কী দেখলে বুঝা যায় শিশুর এডিনয়েড আছে?
শিশুর এডিনয়েড গ্রন্থি স্বাভাবিকের চেয়ে বড় হলে তাদের চেহারায় এক ধরণের পরিবর্তন বা ছাপ পরিলক্ষিত হয়। যাকে এডিনয়েড ফেসিস বলে। এ ছাড়াও শিশুটি মুখ হাঁ করে নিশ্বাস নেবে কোনমতেই নাক দিয়ে নিশ্বাস নিতে পারবেনা। অর্থাৎ যদি দীর্ঘদিন এভাবে হাঁ করে শ্বাস-প্রশ্বাস নেয়ার কারণে শিশুটির সামনের পাটির দাঁত স্বাভাবিকের চেয়ে উঁচু থাকবে। মাড়ি নরম হয়ে যাবে। মুখ দিয়ে লালা পড়বে। এ ছাড়াও দীর্ঘদিন শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হওয়ার কারণে নাকের ছিদ্রগুলো ছোট হয়ে পড়বে। মুখের ভেতর বিষন্ন ভাব চলে আসবে এবং শিশুটিকে ভাবলেশহীণ দেখাবে। সুতরাং মুখমন্ডলের এই পরিবর্তনকে এডিনয়েড ফেসিস বলা হয়।
আরও পড়ুন: বাচ্চাদের জিহ্বা কিভাবে পরিষ্কার করবেন
শিশুর এডিনয়েড কী ও কেন হয় ?
শিশুর এডিনয়েড কী ও কেন হয় বলতে প্রত্যেক শিশুই এডিনয়েড নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। তবে ২ থেকে ৭ বছর পর্যন্ত এডিনয়েড ধীরে ধীরে একটু বড় হয়। আবার ৭ থেকে ৯ বছর পর্যন্ত এডিনয়েড ধীরে ধীরে সর্বোচ্চ আকৃতিতে পৌঁছে এবং ৯ বছর বয়স থেকে এডিনয়েড ছোট হতে থাকে এবং স্বাভাবিক অবস্থায় চলে আসে। উল্লেখ্য যে, ১২-১৩ বছরেও এডিনয়েড থাকে, তবে সেটি সংখ্যায় খুবই নগণ্য।
চিকিৎসা বিজ্ঞানে এডিনয়েড এর গ্রেডিং পদ্ধতি :
- নাকের পেছনে ২৫% ব্লক ধরা হয় গ্রেড ১
- নাকের পেছনে ২৫%-৫০% ব্লক ধরা হয় গ্রেড ২
- নাকের পেছনে ৫০%-৭৫% ব্লক ধরা হয় গ্রেড ৩, এবং
শিশুর এডিনয়েডের সমস্যা হলে যেসব উপসর্গ দেখা দেয় :
- শিশুর এডিনয়েড আছে কীভাবে বুঝবেন এ সম্পর্কে জানতে হলে নিম্নোক্ত বিষয়গুলি লক্ষ্য রাখতে হবে, যেমন-
- শিশুটি মুখ হাঁ করে ঘুমায়;
- ঘুমের মধ্যে শব্দ বা নাক ডাকে। এবং হঠাৎ দম বন্ধ হয়ে ঘুম থেকে উঠেও যেতে পারে;
- ঘন ঘন সর্দি-কাশিতে ভোগে, যা সহজে সারতে চায় না;
- লসিকাগ্রন্থি বড় হয়ে নাকের মাংস বৃদ্ধি পায়;
আরও পড়ুন: শিশুদের মোবাইল ফোন ব্যবহার ও ক্ষতিকর দিকসমূহ
- ঘন ঘন কানে ব্যথা, ইনফেকশন, পর্দা ফেটে যাওয়া, কানে পানি জমা, কানে কম শোনা;
- ঘন ঘন গলার ইনফেকশন হয়, খুসখুসে কাশির পাশাপাশি গলার স্বর বসে যায়;
- দেহে অক্সিজেনের স্বল্পতার জন্য ঘুম ঘুম ভাব হয়, পড়ালেখা ও স্কুলে শিশুর অমনযোগিতা, বুদ্ধিমত্তা কমে যাওয়া ছাড়াও কারো কারো রাতে বিছানায় প্রস্রাবও করতে দেখা যায়।
এডিনয়েডের প্রতিকার বা প্রতিরোধ কিভাবে করা যায় :
শিশুর এডিনয়েডের সমস্যা হলে সঠিক যত্নের মাধ্যমে এডিনয়েড ইনফেকশনের হার কমানো সম্ভব। শিশু যাতে ধুলোবালি, স্যাঁতসেঁতে, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। শিশুকে আইসক্রিম বা ঠান্ডা জাতীয় খাবার না খাওয়ানো, শিশুর যাতে ঠান্ডা না লাগে সেদিকে খেয়াল রাখা। এক্ষেত্রে যদি নাক দিয়ে শ্বাস নিতে কষ্ট হয় তাদের স্টেরয়েড স্প্রে, নাকের ডিকনজেস্টেন্ট ড্রপ (সাময়িক) ইত্যাদি ব্যবহার করা যেতে পারে, সর্বোপরি সর্দি-কাশি হলে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা।
এছাড়াও ঘুমানোর সময় একটু উঁচু বালিশে শিশুকে ঘুমাতে দিতে হবে। শিশুর শীতের পোশাক নিশ্চিত করতে হবে। বয়স অনুযায়ী শিশুদের সঠিক ওজন বজায় রাখার বিষয়টি লক্ষ্য রাখতে হবে। শিশুদের স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে দিতে হবে। সেইসাথে পর্যাপ্ত ঘুম, প্রচুর পানি পান নিশ্চিত করতে হবে। বিশেষ করে শীতের রাতে এবং সকালে বাইরে বের হলে কানটুপি ব্যবহারে অভ্যস্ত করতে হবে।
শিশুর এডিনয়েডের সমস্যা চিকিৎসা পদ্ধতি :
শিশুর এডিনয়েডের সমস্যা তৈরি হলে নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। অনেক সময় শ্রবণশক্তিও পরীক্ষা করতে হতে পারে। ওষুধ হিসেবে অ্যান্টিহিস্টামিন, মন্টিলুকাস্ট, নাকের স্প্রে/ড্রপ এবং কিছু ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: সর্দিজ্বর হলে কি করণীয় - কিভাবে প্রতিরোধ করা যায়
শিশুর এডিনয়েডের সমস্যা হলে অনেক সময় ওষুধের মাধ্যমে নিরাময় না হলে যথাযথ পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং অভিজ্ঞ ডাক্তারের সাহায্যে অস্ত্রোপচার করা উচিত। এডিনয়েড অপারেশন খুব বেশিদিন হাসপাতালে থাকতে হয় না, মাত্র একটি রাত থাকলেই হয়। পাশাপাশি কানে শোনার পরীক্ষাও করে নিতে হবে। এডিনয়েড এর কারণে কানে পানি জমলে বা শুনানি কমে গেলে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।
এ ছাড়াও সংশ্লিষ্ট বিষয়ে জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী :
- এডিনয়েড অপারেশন বয়স
- এডিনয়েডের সমস্যা
- এডিনয়েড এর লক্ষণ
- এডিনয়েড এর ঔষধ
- এডিনয়েড থেকে জটিলতা
- এডিনয়েড কেন হয়
- শিশুর এডিনয়েড আছে কীভাবে বুঝবেন
- শিশুর এডিনয়েড কী ও কেন হয়
- শিশুর এডিনয়েডের সমস্যা
শিশুর এডিনয়েডের সমস্যা-শিশুর এডিনয়েড কী ও কেন হয়-শিশুর এডিনয়েড আছে কীভাবে বুঝবেন - শেষ কথা :
আশা করছি, শিশুর এডিনয়েডের সমস্যা - শিশুর এডিনয়েড কী ও কেন হয় - শিশুর এডিনয়েড আছে কীভাবে বুঝবেন সম্পর্কে যদি জেনে থাকেন তাহলে আপনাদের উপকারে আসবে। শিশুর এডিনয়েডের সমস্যা - শিশুর এডিনয়েড কী ও কেন হয় - শিশুর এডিনয়েড আছে কীভাবে বুঝবেন বিষয়ক আরো কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন এবং পরবর্তীতে অন্য কোনো বিষয়ে জানতে চাইলে সেটাও কমেন্ট করে জানাতে পারেন। এরকম আরো তথ্যমূলক পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ফলো করতে পারেন। এতোক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url