পিসিওএস থাকলে কি তাঁরা মা হতে পারেন না? - পিসিওএস এর লক্ষণ ও চিকিৎসা পদ্ধতি - পিসিওএস থেকে কিভাবে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে

আমাদের এই ছোট্ট জীবনে কত কিছুই না সমস্যা থাকে। কেউ চেয়ে পাইনা, আবার কেউ না চাইতেও পেয়ে যায়, অবাক করা রহস্য স্বয়ং সৃষ্টিকর্ার। যাইহোক, আজকে আমরা PCOS বা পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম বিষয়ে জানার চেষ্টা করবো। আসলে PCOS কি? কেন হয়? মহিলাদের পিসিওএস থাকলে কি তাঁরা মা হতে পারেন না? - পিসিওএস এর লক্ষণ ও চিকিৎসা পদ্ধতি - পিসিওএস থেকে কিভাবে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে ইত্যাদি।
PCOS বা পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম হল এমন একটি সমস্যা যা, মহিলাদের বন্ধ্যাত্বের প্রধান কারণ এবং এটি অনেক কিশোরী মেয়েকে প্রভাবিত করে। তবে প্রজনন বয়সের মহিলাদের মধ্যে সবচেয়ে হরমোনজনিত অসুখ। অর্থাৎ একটি মানুষ যখন পৃথিবীতে আসে, তখন সে সম্পূর্ণ ঠিকই থাকে, তবে কিছু অনিয়ম আর ভুল-ত্রুটির কারণে জীবনে নেমে আসে নানান জটিলতা। তো চলুন কথা না বাড়িয়ে আমরা জেনে নেই, মহিলাদের পিসিওএস থাকলে কি তাঁরা মা হতে পারেন না? - পিসিওএস এর লক্ষণ ও চিকিৎসা পদ্ধতি - পিসিওএস থেকে কিভাবে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে সেই সম্পর্কে।

পোস্ট সূচিপত্র : পিসিওএস থাকলে কি তাঁরা মা হতে পারেন না? - পিসিওএস এর লক্ষণ ও চিকিৎসা পদ্ধতি - পিসিওএস থেকে কিভাবে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে
পিসিওএস (PCOS) কী?
পিসিওএস এর লক্ষণ
চিকিৎসা পদ্ধতি
মহিলাদের পিসিওএস থাকলে কি তাঁরা মা হতে পারেন না?
পিসিওএস থেকে কিভাবে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে
পিসিওএস থাকলে কি তাঁরা মা হতে পারেন না? - পিসিওএস এর লক্ষণ ও চিকিৎসা পদ্ধতি - পিসিওএস থেকে কিভাবে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে - পরিশেষে

পিসিওএস (PCOS) কী?

পিসিওএস এর কারণে সাধারণত ডিম্বাশয় অনেক ছোট তরল ভরা ফলিকল তৈরি করে এবং নিয়মিত ডিম ত্যাগ করতে ব্যর্থ হয়। এই অসুখে আক্রান্ত মহিলাদের পলিসিস্টিক ডিম্বাশয় থাকলেও, কারো কারো নেই। আসলে পিসিওএস হল প্রজনন বয়সের মহিলাদের মধ্যে খুবই সাধারণ একটি অন্তঃস্রাবী রোগ। এই অসুখের ফলে যৌন হরমোন, ইস্ট্রোজেন এবং প্রোজেস্টেরনের ভারসাম্যহীনতায় দেখা দেয় ডিম্বাশয়ের সিস্ট এবং এর ফলেই প্রভাবিত করে মাসকি চক্র, কার্ডিয়াক ফাংশন এবং চেহারা।

পিসিওএস এর লক্ষণ :

পিসিওএস এর লক্ষণ ও চিকিৎসা পদ্ধতি এর মধ্যে প্রথমেই একজন মহিলার মাসিক শুরু হওয়ার পরপরই প্রায়ই পিসিওএস এর লক্ষণগুলি শুরু হয়। তবে যেসব উপসর্গ সবার মধ্যে দেখা যায় তা হলো:

  • পিসিওএস এর লক্ষণ ও চিকিৎসা পদ্ধতি-র মধ্যে প্রথম লক্ষণ হলো অনিয়মিত মাসিক। এরপর-
  • ব্রণ
  • ওজন বৃদ্ধি
  • বন্ধ্যাত্ব
  • ডিপ্রেশন, উদ্বেগ ও খাওয়ার ব্যাধি
  • চুল পরা
  • স্তনের আকার ছোট হয়ে যাওয়া
  • মুখে, বুকে, পেটে, পেছনে বা পায়ের আঙুলে চুল গজানো
  • ডায়াবেটিস
  • শ্রোণী ব্যথা

আরও পড়ুন: গর্ভাবস্থায় কি কি কাজ করা যাবে এবং গর্ভকালীন সময়ে কি কি কাজ করা নিষেধ বা এড়িয়ে চলা উচিৎ

  • কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যাওয়া
  • পিসিওএস এর লক্ষণ ও চিকিৎসা পদ্ধতি-র মধ্যে আরও লক্ষণ হলো- হাত, স্তন, ঘাড় বা উরুতে চামড়ায় গাঢ় বাদামি বা কালো দাগ। এটা বগলে বা পায়ের ভাঁজেও হতে পারে
  • অস্বাভাবিক জরায়ু রক্তপাত

চিকিৎসা পদ্ধতি :

পিসিওএস এর লক্ষণ ও চিকিৎসা পদ্ধতি এর ক্ষেত্রে চিকিৎসকগণ যে সকল ওষুধ দেন, তাতে এই রোগের উপসর্গ, যেমন অনিয়মিত ঋতুস্রাব, বন্ধ্যাত্বের সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে। তবে মূল কথা হচ্ছে পিসিওএস এর লক্ষণ ও চিকিৎসা পদ্ধতি-র ক্ষেত্রে অবশ্যই আনতে হবে জীবনযাত্রায় পরিবর্তন। অর্থাৎ নিয়মিত শরীরচর্চা, সঠিক খাদ্যাভাস এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলেই এই রোগের সঙ্গে মোকাবিলা করা সম্ভবপর হয়ে ওঠে। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে, ক) প্রতিদিন অন্ততপক্ষে ৩০ থেকে ৪০ মিনিট ঘাম ঝরিয়ে হাঁটতে হবে; খ) প্রতিদিনের খাবার আগের খাবারের চেয়ে ৫০০ কিলো ক্যালরি কম খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে; গ) মুখসহ অন্যান্য স্থানে লোম কমানোর জন্য ওষুধ বা ক্রিম অবশ্যই ডাক্তারের পরামশ অনুযায়ী ব্যবহার করা যেতে পারে; ঘ) যে সমস্ত মহিলাদের পিসিওএসের জন্য বাচ্চা হচ্ছে না, তাদের এই সমস্যার পাশাপাশি ইনফাটিলিটির চিকিৎসা নিতে হবে।

মহিলাদের পিসিওএস থাকলে কি তাঁরা মা হতে পারেন না?

উপরের প্রশ্নের উত্তর হচ্ছে ‘হ্যাঁ’ অবশ্যই পারে। আসলে পিসিওএস থাকলে কি তাঁরা মা হতে পারেন না? - পিসিওএস এর লক্ষণ ও চিকিৎসা পদ্ধতি - পিসিওএস থেকে কিভাবে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে এর জন্য নিজের শরীরকে কঠোর অনুশাসনে রাখতে হবে। বেশির ভাগ সময়েই আমরা নিজেরাই ডাক্তার হয়ে যায় এবং সে হিসেবে নিজেদের বুদ্ধি, অভিজ্ঞতা ইত্যাদি প্রয়োগ করে অসুখের বারোটা বাজিয়ে দেয়। পিসিওএসে আক্রান্ত মহিলাদের এরকম কিছু না করাই ভালো, কেননা একজন চিকিৎসকই পারেন সঠিক দিক-নির্দেশনা দিতে। কোনমতেই এটা বিশ্বাস করা যাবে না যে, পিসিওএস থাকলে কি তাঁরা মা হতে পারেন না? তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই নিয়মিত শরীরচর্চা, সঠিক খাদ্যাভাস এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখাটা খুবই জরুরী। একটা কথা কি, আমরা অনেক সময় ক্ষতি হবে ভেবে ভয়ে অনেক কিছুই খাইনা। কিন্ত্র সেক্ষেত্রে মনতো মানে না, আবার যদিওবা খায়, তা শরীরের প্রয়োজন থেকে অনেকটাই বেশি খেয়ে ফেলি। এটাও একদম ঠিক নয়। সবকিছুই খাওয়া যাবে, তবে তা নিয়মমাফিক। যেমন-আমি খেজুর খাইনা, তাই বলে একসাথে আড়াইশো খেজুর খেয়ে ফেলা ঠিক হবে। অবশ্যই তা নয়, কারণ প্রত্যেকদিন সকালে খালিপেটে আপনি যদি দুটো খেজুর খেয়ে পানি খেতে পারেন, তাহলে ভিটামিনজনিত ঘাটতি সহ আনুষঙ্গিক বিষয়ে অনেকটা উপকার হবে (বিষয়টি উদাহরণের জন্য বললাম, তবে এই সাইটে খেজুর বিষয়ক আটিকেল থেকে তা বিস্তর জানতে পারবেন)। আসলে পিসিওএসে আক্রান্ত হওয়া মানে শরীরে হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্নিত হওয়া। চিকিৎসকগণ যেটা করে থাকেন, তা হলো এই উপসগগুলি কমানোর লক্ষ্যে হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য ওষুধ দেন। পিসিওএস এর ক্ষেত্রে একটা জিনিস সবসময় মাথায় রাখবেন, তা হলো শুধুমাত্র জীবনযাত্রায় পরিবতন আনতে পারলেই এই রোগের মোকাবিলা বা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। অনেক্তেই বলে থাকে, পিসিওএস থাকলে কি তাঁরা মা হতে পারেন না? অর্থাৎ, এই পিসিওএস নিয়ে বহু ভ্রান্ত ধারণা প্রচলিত রয়েছে। যেমন-অনেকে ধারণা করেন, পিসিওএস থাকলে কি তাঁরা মা হতে পারেন না? আবার অনেকেই পিসিওএস থেকে কিভাবে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে তার চেষ্টা করেন:
  • আসলে এই ধারণাটা থাকা ঠিক নয়, বর্তমানে বহু মেয়েই পিসিওএস থাকা সত্ত্বেও স্বাভাবিক নিয়মে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে থাকেন।

আরও পড়ুন: গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়ার উপকারিতা সমূহ এবং গর্ভকালীন সময়ে কলা খাওয়া কি নিরাপদ বা গর্ভাবস্থায় কলা খাওয়া কতটা অনিরাপদ

  • অনেকেই ধারণা করেন, ডিম্বাশয়ে সিস্ট থাকলেই সেটা পিসিওএসের লক্ষণ এমনটা ভাবা ঠিক নয়। আসলে এই রোগে আক্রান্ত মহিলাদের ডিম্বাণু উৎপাদনে সমস্যা তৈরি হয়। ফলে অনেকের ক্ষেত্রে ডিম্বাশয়ের বাইরে ছোট ছোট সিস্ট দেখা যায়। তবে এক্ষেত্রে আলট্রাসাউন্ড করিয়ে যদি দেখেন ডিম্বাশয়ের বাইরে কোন সিস্ট নেই, তার মানে এটা ধরে নেয়া ঠিক হবে না যে, আপনার শরীরে কোন রোগ বাসা বাধেনি। সিস্ট বিভিন্ন কারণেই হতে পারে।

পিসিওএস থেকে কিভাবে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে :

পিসিওএস থেকে কিভাবে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে সম্পর্কে বলতে গেলে, আসলে পিসিওএসের সেইভাবে কোন প্রতিকার নেই। তবে নিত্য-নতুন উদ্ভাবিত চিকিৎসা পদ্ধতি আমাদের জীবনযাত্রার মানকে অনেকটাই সহজ করে ফেলেছে। তবে সবথেকে জরুরী হচ্ছে, ওজন নিয়ন্ত্রণ, খাদ্যাভাস পরিবর্তন ও হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখার মাধ্যমে এই রোগ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। যদি ওজন কমিয়ে বিএমআই ২৫ এর নিচে রাখতে পারেন, তাহলে ওয়ারিয়ান সিস্টের সমস্যা অনেকটা কাটতে পারে। এককথায় বলা যেতে পারে, পিসিওএস থেকে কিভাবে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে তার জন্য জীবনযাত্রার মান পরিবতন এবং নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ অত্যাবশ্যক।

পিসিওএস থাকলে কি তাঁরা মা হতে পারেন না? - পিসিওএস এর লক্ষণ ও চিকিৎসা পদ্ধতি - পিসিওএস থেকে কিভাবে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে - পরিশেষে :

পিসিওএস থাকলে কি তাঁরা মা হতে পারেন না? - পিসিওএস এর লক্ষণ ও চিকিৎসা পদ্ধতি - পিসিওএস থেকে কিভাবে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে- এ বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। প্রিয় বন্ধুরা আশা করি আপনারা উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।

আরও পড়ুন: গর্ভাবস্থায় সহবাস করা যাবে কিনা ও গর্ভাবস্থায় সহবাস করার নিয়ম এবং গর্ভাবস্থায় সহবাসে কী গর্ভের বাচ্চার কোন ক্ষতি হয়

পিসিওএস থাকলে কি তাঁরা মা হতে পারেন না? - পিসিওএস এর লক্ষণ ও চিকিৎসা পদ্ধতি - পিসিওএস থেকে কিভাবে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে ইত্যাদি বিষয়ে আপনাদের বিষয়গুলো জানাতে পেরে আমরা আনন্দিত। আপনার এবং আপনার পরিবারের সুস্থতা কামনা করে আজকের মত এখানে শেষ করছি। আবার দেখা হবে নতুন কোন আর্টিকেলে সেই পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে থাকুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url