বই পড়ার উপকারিতা - আমাদের কেন বই পড়তে হবে? - বই পড়ার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা

এমন একটা পরিবেশ ছিল যখন সময় কাটানোর উৎকৃষ্ট মাধ্যম ছিল একমাত্র বই পড়া। তখন গুগল ছিলনা বটে, তবে একটি লেখকের বই পড়ে কখন শেষ করবো সেই টেনসনটাই সবথেকে বেশী কাজ করতো। একদিকে পড়াশোনার চাপ, অন্যদিকে বাবা ও মায়ের শাসন আর এরই মাঝে লুকিয়ে বই পড়া। আসলে প্রেস হতে ছাপাকৃত উপন্যাস বা গল্পের কাগুজে যে কোনদিন পড়েনি, সে জানবে কি করে এর আত্মতৃপ্তি, আত্মসুখ, আত্মোপলব্ধিতা। ঠিক সে জন্যেই আজকে আমরা বই পড়ার উপকারিতা - আমাদের কেন বই পড়তে হবে? - বই পড়ার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো।
আজকাল যুগের ছেলেমেয়েরা পড়াশুনায় এত ব্যস্ত থাকে, তারপরেও অনলাইন ভিত্তিক বিভিন্ন গল্প, উপন্যাসসহ বিভিন্ন জ্ঞান অর্জন করে থাকে। আসলে বই পড়ে অযথা সময় নষ্ট হয় না। সাহিত্য এমন একটা বিষয়, যা মানুষের মন থেকে বা মনের ভাষা বলে। তাই, বই পড়ার উপকারিতা - আমাদের কেন বই পড়তে হবে? - বই পড়ার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা কী বা একটি মানুষের জীবনে কীভাবে তা প্রভাব বিস্তার করে থাকে, চলুন তা জেনে নেয়া যাক:

পোস্ট সূচিপত্র : বই পড়ার উপকারিতা - আমাদের কেন বই পড়তে হবে? - বই পড়ার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা
বই পড়ার উপকারিতা
আমাদের কেন বই পড়তে হবে?
বই পড়ার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা
সংশ্লিষ্ট বিষয়ের সম্পর্কিত প্রশ্নাবলী
বই পড়ার উপকারিতা - আমাদের কেন বই পড়তে হবে? - বই পড়ার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা - শেষ কথা

বই পড়ার উপকারিতা :

👉 বই পড়লে কল্পনাশক্তি বৃদ্ধি পায় :
নিয়মিত অভ্যেস করে বই পড়লে কল্পনাশক্তি বৃদ্ধি পায়। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে, নিয়মিত বই পড়লে অ্যালঝেইমার রোগ এবং স্মৃতিলোপের ঝুঁকি হ্রাস করে।

👉 বই পড়লে ঘুম ভালো হয় :
বিশ্লেষকরা বলছেন, বিছানায় ঘুমাতে যাওয়ার আগে কিছুক্ষণ বই পড়তে, কারণ এতে নিশ্চিন্তে দুঃশ্চিন্তামুক্ত গভীর ঘুম চলে আসবে।

আরও পড়ুন: বাংলাদেশের ফলের বাংলা ও ইংরেজিতে নামের তালিকা

👉 বই পড়লে জ্ঞান বাড়ে :
আমাদের কেন বই পড়তে হবে? অর্থাৎ, বই পড়লে যে জ্ঞান বাড়ে তা বিভিন্ন মনীষী, পণ্ডিত এবং সাহিত্যিকরা চোখে দেখিয়ে দিয়ে গেছেন। কারণ একটি ভালো বই পড়লে, তার অনেক তথ্য মাথায় গেঁথে যায়, যা বাস্তব জীবনে কাজে লাগে। বই পড়লে সদা মন প্রফুল্ল থাকে এবং পরিবেশ ও পরিস্থতি এবং দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটাতে সাহায্য করে।

👉 বই পড়লে শব্দ ভাণ্ডার বৃদ্ধি ঘটে :
বই পড়ার উপকারিতা হিসেবে নিয়মিত বই পড়লে শব্দভাণ্ডার বৃদ্ধি ঘটে। তবে যে কোন বই-ই শব্দভান্ডার বাড়াতে সহায়ক হতে পারে। আর শব্দভান্ডার বৃদ্ধি ঘটলে তা ভাষার উপর দক্ষতা ও নিয়ন্ত্রণ বাড়ায়। নিত্য-নতুন বই পড়লে নতুন নতুন ভাষা শেখা ও জানা যায়।

👉 বই পড়ায় লেখার দক্ষতা বৃদ্ধি করে :
আমাদের কেন বই পড়তে হবে? আসলে নিয়মিত বই পড়লে ভাষাতত্ত্বের বিকাশ ঘটে। ফলে নিজের মধ্যে একটি আত্মবিশ্বাস তৈরী হয় সুন্দর করে ভাষা প্রয়োগের। বই পড়ার উপকারিতা-এর কারণে হতে পারে সেটা শিক্ষাক্ষেত্রে, পেশাগত জীবনে বা কোন একটি দায়িত্বে নিজের উপস্থাপনকে অনেক বেশী স্মার্ট করে তুলে ধরার। এটার সাইড ইফেক্ট হচ্ছে, অন্যের কাছে নিজের ভাষা দক্ষতার গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পাওয়া, একটি লিংক তৈরী হয় নিজের পরিসরকে ঘিরে এবং সর্বোপরি নিজে অনেক জনপ্রিয় ও সমাদৃত হয়ে থাকেন বিভিন্ন স্তরে।

আরও পড়ুন: বাংলা ও ইংরেজিতে ১০০টি ফুলের নামের তালিকা এবং কোন কোন ফুলগুলো দেশি ও বিদেশি

👉 বই পড়লে নিঃসঙ্গতা কাটে :
আসলে বই হচ্ছে একটি প্রকৃষ্ট বন্ধু, কারণ বই পড়ার উপকারিতা বলতে পৃথিবী নামক গোলক ধাঁধাঁয় সাহিত্যের বিকল্প নেই। কথায় বলে, যারা যত বেশী বই পড়ে, তারা ততো বেশী জ্ঞান সমৃদ্ধ হয়ে থাকেন। সংসার জীবনে অনেক বিষয় বার বার করতে করতে আমাদের একঘেয়েমী চলে আসে। কিন্তু বই পড়ার অভ্যেস করলে তা হয়না, কারণ একেকটি বই নতুন কোন বিষয়ে নিয়ে আমাদেরে উপস্থাপিত হয়ে থাকে। নিজের মনকে শান্ত করতে এবং মনের মধ্যে নতুন শক্তি যোগাতে বই পড়ার বিকল্প নেই। আর হয়তবা এ কারণেই সৈয়দ মুজতবা আলী বলেছেন, ‘বই পড়ে কেউ কোনদিন দেওলিয়া হয়ে যায় না।’

👉 বই পড়লে অনুপ্রেরণা জাগে :
বই পড়ার উপকারিতা বলতে বই এমন একটি নীরব মাধ্যম, যা অনেক কিছুতে ইতিবাচক চিন্তা করতে সহায়তা করে থাকে এবং পাশাপাশি নতুন কিছু চেষ্টা করার জন্য অত্যন্ত উপকারী। জীবনের অনপ্রেরণা খুঁজতে চাইলে সফল ব্যক্তিদের জীবনী এবং তাদের ব্যর্থতার স্টোরি পড়া যেতে পারে। আপনি যদি নির্দিষ্ট কোন কিছু করার বিষয়ে বদ্ধপরিকর হোন, তাহলে সমাজের জ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি একটি সঠিক বই আপনাকে আপনার কাঙ্খিত লক্ষ্য ও সফলতা অর্জনে সহায়তা করবে।

👉 বই পড়লে সহানুভূতিশীল হওয়া যায় :
একটি গবেষণায় বলছে, যে সমস্ত মানুষ কল্পকাহিনী পড়েন, তারা অন্য মানুষের তুলনায় বেশী সহানুভূতিশীল হয়ে থাকেন। এবং সেভাবেই গড়ে ওঠে তাদের ব্যক্তি ও মননশীলতা।

👉 বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে বই পড়া :
আসলে আমরা বিনোদনের জন্য মুভি বা সিনেমা দেখে থাকি। কিন্তু পৃথিবীতে বিখ্যাত সব ছবিগুলো আসলে কিসের ভিত্তিতে তৈরী হয়েছিল? হ্যারি পর্টার, জেমস বন্ড, পখের পাঁচালী, সোহরাব-রুস্তম, রোমিও-জুলিয়েট ইত্যাদি এ রকম অসংখ্য ছবি যা সাহিত্য থেকেইতো সৃষ্টি। তাহলে বই পড়া কেন বিনোদনের মাধ্যম হতে পারে না। অর্থাৎ বই পড়ার উপকারিতা বিনোদমের মাধ্যমও হতে পারে।

আরও পড়ুন: কবিদের ভাবনায় বর্ষাকাল - বাংলা কবিতায় বর্ষাকাল

👉 বই পড়া মনের প্রশান্তি যোগায় :
আসলে আমাদের অনেকেরই তো আর ভ্রমণ করার মতো যথেষ্ট অর্থ নাই বা থাকে না। যাদের অর্থ আছে, তারা প্রায়ই নিজের একাকীত্ব অথবা পরিবারকে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়ান। কিন্তু আমিওতো এই পৃথিবী নামক গোলক ধাঁধাঁয় একজন ক্ষুদ্র প্রাণী, তাহলে আমি কী সেই স্থান সম্পর্কে জানতে পারবো না। হ্যাঁ অবশ্যই পারবো, তবে বই পড়ে ও কল্পনার চোখে দেখে। তা ছাড়াও অনেক বিখ্যাত কালজয়ী উপন্যাস, ধর্মীয় কাব্যগ্রন্থ. ধর্মীয় পুস্তকাদি ইত্যাদি পড়ার মাধ্যমেও আমরা মনের প্রশান্তি অর্জন করতে পারি।

আমাদের কেন বই পড়তে হবে?

আলোচ্য প্রশ্নের যথাযথ ব্যাখ্যাদি আমরা উপরে বর্ণিত বিষয় থেকে জানতে পারি, তদুপরি আমাদের কেন বই পড়তে হবে? তার যথাযথ কারণ বলতে গেলে এভাবে বলা যেতে পারে, নিজেকে সুস্থ্য, সুন্দর, সাবলীল করে তোলার পাশাপাশি নিজের জ্ঞান-গরিমাকে সঠিক জায়গায় ও সঠিক স্থানে প্রয়োগ এবং নিজের ইচ্ছাশক্তি বৃদ্ধির মাধ্যমে দক্ষতা, উন্নত মস্তিস্ক এবং নিজেকে গ্রহণযোগ্যতা অন্যের কাছে তুলে ধরা।

ই পড়ার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা :

অবশ্যই বই পড়ার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা আমাদের জীবনে রয়েছে। এর যথাযথ কারণ হচ্ছে, আজকে আমি যা রেখে যাচ্ছি তা আমার অনাগত ভবিষ্যত কীভাবে জানতে পারবে? সেই হেঁটে পথ চলা, সাইকেল, গরুর গাড়ি, ঘোড়ার গাড়ি, নৌকা, জাহাজ, প্লেন, সাবমেরিন, রকেট, আধুনিক বিমান কত কিছুই না হয়েছে বা হচ্ছে মানুষের প্রয়োজনে। কিন্তু এই যে, হয়েছে বা হচ্ছে তা আমরা কীভাবে জেনেছি? সাহিত্য চর্চা বা বই পড়ার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অবশ্যই আমাদের সমাজবব্ধ জীবনে আছে এবং থাকবে নিরন্তর।

সংশ্লিষ্ট বিষয়ের সম্পর্কিত প্রশ্নাবলী :

  • বই পড়লে কি লাভ?
  • বই পড়া আমাদের উপকার করে?
  • বই পড়া কি ভালো অভ্যাস?
  • আমাদের কেন বই পড়তে হবে?
  • বই পড়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
  • বই পড়ার ১০টি অপকারিতা
  • গল্পের বই পড়ার উপকারিতা রচনা
  • বই পড়ার অপকারিতা
  • বই পড়ার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা
  • কেন বই পড়বো?

বই পড়ার উপকারিতা - আমাদের কেন বই পড়তে হবে? - বই পড়ার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা - শেষ কথা :

আশা করছি, বই পড়ার উপকারিতা - আমাদের কেন বই পড়তে হবে? - বই পড়ার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা যদি জেনে থাকেন তাহলে আপনাদের উপকারে আসবে। বই পড়ার উপকারিতা - আমাদের কেন বই পড়তে হবে? - বই পড়ার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা বিষয়ক আরো কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন এবং পরবর্তীতে অন্য কোনো বিষয়ে জানতে চাইলে সেটাও কমেন্ট করে জানাতে পারেন। এরকম আরো তথ্যমূলক পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ফলো করতে পারেন। এতোক্ষণ আমাদের সাথে বই পড়ার উপকারিতা - আমাদের কেন বই পড়তে হবে? - বই পড়ার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা নামক আলোচনায় থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url