কাজে মনোযোগ বাড়ানোর যত কৌশল - কীভাবে অফিসের কাজে মনোযোগ বাড়ানো যায়
আমরা যাই কিছু করি তাতে একটা মনোযোগের দরকার হয়, হোক সেটা বাড়িতে বা অফিসে। তবে অফিসের মনোযোগ রাখাটা অনেক চ্যালেজ্ঞিং হয়ে দাঁড়ায়। যখন কোন কাজ দীর্ঘ সময় ধরে করতে গেলে সেই কাজের মনোযোগ হঠাৎই হারিয়ে যায়। সুতরাং, কাজে মনোযোগ বাড়ানোর যত কৌশল - কীভাবে অফিসের কাজে মনোযোগ বাড়ানো যায়-এগুলো আমাদের কাজে মনোযোগী হওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
লালন সংগীতের রেশ ধরে বলা যায়, ‘সময় গেলে সাধন হয় না’। অর্থাৎ সময়ের কাজ সময়েই করতে হয়। অফিসের কাজের নানান ব্যস্ততার মধ্যে, নিজের উপর অর্পিত কাজগুলি যদি সঠিকভাবে বা সঠিক সময়ে শেষ করা না যায়, তার প্রভাব পড়ে ভবিষ্যত কর্মজীবনে। কারণ নিজের উপর অর্পিত কাজগুলির জবাবদিহি নিজেকেই করতে হয়। তাই আজকে আমরা কাজে মনোযোগ বাড়ানোর যত কৌশল - কীভাবে অফিসের কাজে মনোযোগ বাড়ানো যায় সম্পর্কিত বিষয়গুলি পর্যালোচনা করে কীভাবে আরও দ্বিগুণ উৎসাহে কাজ করতে পারি তা জানার চেষ্টা করবো :
পোস্ট সূচিপত্র : কাজে মনোযোগ বাড়ানোর যত কৌশল - কীভাবে অফিসের কাজে মনোযোগ বাড়ানো যায়
কীভাবে অফিসের কাজে মনোযোগ বাড়ানো যেতে পারে
কাজে মনোযোগ বাড়ানোর যত কৌশল
কাজে মনোযোগ বাড়ানোর যত কৌশল - কীভাবে অফিসের কাজে মনোযোগ বাড়ানো যায় - শেষ কথা
অফিসের কাজে মনোযোগী হওয়ার ক্ষেত্রে কিছু কৌশল অবলম্বন করতে পারেন। তবে সবকিছুই নিজের উপর নির্ভর করে। অর্থাৎ, আপনি কি চান? সেটার উপরেই নির্ভর করে অফিসের কাজ। আর্থিক টানাপোড়েন, পারিবারিক অশান্তি সহ বিভিন্ন সমস্যা থাকবেই, কিন্তু যখন আপনার উপরে নির্দিষ্ট কিছু দায়িত্ব থাকবে, তখন সেটার মূল্যায়নে, আপনি কতখানি ভূমিকা রাখতে পারছেন, সেটাই মূল ব্যাপার। তাই, আমাদের কাজে মনোযোগ বাড়ানোর যত কৌশল - কীভাবে অফিসের কাজে মনোযোগ বাড়ানো যায় ইত্যাদি জানাটা অত্যন্ত জরুরি।
কীভাবে অফিসের কাজে মনোযোগ বাড়ানো যেতে পারে :
কাজে মনোযোগ বাড়ানোর যত কৌশল - কীভাবে অফিসের কাজে মনোযোগ বাড়ানো যায় সম্পর্কে আলোচনা করতে গেলে প্রথমেই বলতে হয়, একঘেয়েমী বা দীর্ঘ সময় ধরে কোন কাজ করতে থাকলে সেটার প্রতি একটা অনীহা চলে আসে, তা আমরা সবাই জানি। কিন্তু বর্তমানে আমি যে কাজটা করছি, সেটা আমি-আমার মন থেকে কীভাবে গ্রহণ করেছি, এইটার উপরই নির্ভর করে অনেক কিছু। যেমন-কাজকে বিরক্তিকর ভাবে গ্রহণ করা, আবার প্রত্যেকদিন আমাকে একই কাজ করতে হয়-এ রকম ভেবে মনে অনীহা তৈরী, আবার কাজের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি, অর্থাৎ যে কাজটি আপনি করছেন বা করবেন বলে ঠিক করেছেন, তা ইনজয় বা আনন্দ হিসেবে গ্রহণ করা, আবার একই কাজ অন্যকে দিয়ে করিয়ে নিয়ে নিজেকে ফাঁকি দেয়া। অর্থাৎ, কাজে মনোযোগ বাড়ানোর যত কৌশল - কীভাবে অফিসের কাজে মনোযোগ বাড়ানো যায় বিষয়ক, যেমন-কাজের সময় মোবাইল ফোন না ধরা, রাত্রে পর্যাপ্ত ঘুম, খাবার গ্রহণ, কি কাজ করা হবে তা আগে থেকে ঠিক করা বা একটি তালিকা করা, অন্যের প্রতি ঈর্ষান্বিত না হওয়া, কাজকে উপভোগ করা, দীর্ঘমেয়াদী ধরণের কাজে বিরতি দিয়ে শুরু করা, একসাথে অনেকগুলো কাজ না করা, তা ধাপে ধাপে সম্পন্ন করা, শেখার চেষ্টা করুন, নিজের অহমিকাবোধকে অগ্রাধিকার দিবেন না, সর্বোপরি যে কাজটা করবেন তা গুছিয়ে করুন।
কাজে মনোযোগ বাড়ানোর যত কৌশল :
আমরা কাজে মনোযোগ বাড়ানোর যত কৌশল - কীভাবে অফিসের কাজে মনোযোগ বাড়ানো যায় সম্পর্কে নিম্নে বিস্তারিত বর্ণিত হলো:
👍 ধ্যানের মাধ্যমে : অর্থাৎ নিয়মিত সকালে ঘুম থেকে উঠে যদি কিছু সময়ের জন্য ধ্যান করতে পারেন, তবে তা মনোযোগ বাড়াতে বাধ্য।
👍 পর্যাপ্ত ঘুম : শরীর ও ব্রেনের জন্য ঘুমের অবশ্যই দরকার আছে। শরীর ও মনকে ঠিক রাখতে হলে অবশ্যই দৈনিক অন্তত ৬ ঘন্টা ঘুমানোটা জরুরী। কারণ ঘুম কমের কারণে কাজের ক্ষেত্রে বিভিন্ন অমনোযোগিতা দেখা দিয়ে থাকে।
আরও পড়ুন: কতিপয় কবিগণের রোমান্টিক কবিতাসমূহ
👍 ইলেকট্রনিক ডিভাইসগুলি দূরে রাখার চেষ্টা করুন : যেমন-মোবাইল ফোন, টেলিভিশন ইত্যাদি ডিভাইসগুলি কাজে মনোযোগ আনতে বাধা সৃষ্টি করে। এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ কাজ শুরু করার আগে অবশ্যই আপনার মোবাইল ফোনটি ড্রয়ারে অথবা কোন নির্দিষ্ট জায়গায় সাইলেন্ট মুডে রাখতে পারেন, যাতে করে আপনার মনোযোগ নষ্ট না হয়। আরেকটি কাজ করতে পারেন, তা হলো ফোনটি দুরেই বা ড্রয়ারে যেখানেই রাখুন, একটি নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর তা দেখুন, তাহলে আপনার কনসাট্রেশন নষ্ট কম হবে।
👍 কাজগুলি গুছিয়ে করুন : আসলে গুছিয়ে কাজ করার মানে এই নয় যে, আপনার ডেস্ক বা টেবিল সবসময় গুছিয়ে বা সুন্দর করে রাখতে হবে। আসলে কাজের ধারা অনুযায়ী আপনার কখন কী করতে হবে তার একটি পরিকল্পনা গোছানো।
👍 কাজের তালিকা তৈরী : কাজের প্রতি মনোযোগ বা ভালো কাজ করতে চাইলে অবশ্যই আপনি একটি তালিকা তৈরী করতে পারেন। ডিজিটাইলেশন যুগে কাগজ-কলম অর্থাৎ প্যাড, নোট প্যাড এবং বিভিন্ন মোবাইল অ্যাপের (যেমন-Google Task বা Google Keep) মাধ্যমেও তালিকা তৈরী করে রাখতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনার সুবিধা হবে যে, কাজের তালগোল পাকিয়ে যাবে না, কোনটার পরে কোনটা হবে তা তালিকানুযায়ী সম্পন্ন করতে সহজ হবে।
👍 গভীর মনোযোগ সম্পর্কে ভাবুন : ক্রেস ডেনির মতে, মনোযোগ তিন ধরণের হয়ে থাকে, যথা-বিপরীত, বিশ্লেষণাত্মক ও সংযোজক। তিনি মনে করেন, এই তিন ধরণের মনোযোগের মাঝে পার্থক্য বুঝতে না পারা মনোযোগের সমস্যা সংক্রান্ত হতাশার মূল কারণ।
আরও পড়ুন: স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়ার কারণসমূহ ও প্রতিকার
ক্রেস ডেনি আরও বলেন যে, পাঁচটি মৌলিক বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রাখার মাধ্যমে এই প্রতিটি ধরণের মনোযোগ বাড়ানো যায়, যেমন-আগ্রহ, জ্ঞান, পদ্ধতি এবং শুদ্ধ-অশুদ্ধের ধারণা। তাঁর ভাষায়, প্রায় সবাই এই পাঁচটির কোনো না কোনো ক্ষেত্রে শক্তিশালী। কেউ যদি এই পাঁচটি মৌলিক বিষয়ের দিকে খেয়াল রেখে প্রত্যেকটিতে উন্নতি লাভর চেষ্টা করে, তার মনোযোগ ধরে রাখার ক্ষমতা অবশ্যই বাড়বে।
👍 বই পড়ুন : নিয়মিত বই পড়ার অভ্যেস মনোযোগ বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়। অর্থাৎ প্রতিদিন যদি মাত্র ১০ মিনিট করে বই মাধ্যমে সহজেই মনোযোগ বাড়ানোর অভ্যস শুরু করা যায়।
👍 পুরস্কৃত করুন : নিজেই নিজেকে পুরস্কৃত করুন। অর্থাৎ, অনেকক্ষণ ধরে বা দীর্ঘ সময় সাপেক্ষে, কোন একটা কাজ সফলভাবে শেষ করেছেন। তাহলে তো আপনার পুরস্কার পাওয়ার কথা। সেই পুরস্কারটাই আপনি নিজেকে দেন, অর্থাৎ একটু বিরতি দিন, বা কারো সাথে গল্প করুন বা চা পান করুন বা রিল্যাক্স সময় কাটান।
👍 বিরতি নিন : অনেক সময় দীর্ঘ সময় কাজ করলে একটি একঘেয়েমী চলে আসে। তাই কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিরতি নিয়ে কাজ করতে হবে, এতে করে কাজের প্রতি মনোযোগ নষ্ট হবে না।
👍খাবার : শরীরের অনেকটাই নির্ভর করে আমাদের খাদ্য গ্রহণের ওপর। তবে ব্রুকলি, ডিমের কুসুম, গ্রিন টি, কাঁচা হলুদ, বাদাম ইত্যাদি জাতীয় খাবার মস্তিস্কের স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো এবং কাজে মনোযোগী করে তুলতে সাহায্য করে।
কাজে মনোযোগ বাড়ানোর যত কৌশল - কীভাবে অফিসের কাজে মনোযোগ বাড়ানো যায় - শেষ কথা :
কাজে মনোযোগ বাড়ানোর যত কৌশল - কীভাবে অফিসের কাজে মনোযোগ বাড়ানো যায়-এ বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। প্রিয় বন্ধুরা আশা করি আপনারা কীভাবে অফিসের কাজে মনোযোগ বাড়ানো যেতে পারে বা কাজে মনোযোগ বাড়ানোর যত কৌশল সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
আরও পড়ুন: ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে জেনে নিব প্রাকৃতিক ও ঘরোয়া উপায়সমূহ
আপনাদের কাজে মনোযোগ বাড়ানোর যত কৌশল - কীভাবে অফিসের কাজে মনোযোগ বাড়ানো যায় বিষয়গুলো জানাতে পেরে আমরা আনন্দিত। আপনার এবং আপনার পরিবারের সুস্থতা কামনা করে আজকের মত এখানে শেষ করছি। আবার দেখা হবে নতুন কোন আর্টিকেলে সেই পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে থাকুন। সবাইকে ধন্যবাদ ও শুভকামনা রইল।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url