কীভাবে যোগাসন করে হজম শক্তি ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করা যায় - হজম শক্তি কমে যাওয়ার কারণ ও লক্ষণগুলো কি কি?

যোগাসন শব্দটি আমরা অনেকেই শুনেছি। কেউ কেউ যোগাসন করে থাকে। বলিউডের অনেক নায়িকাই যোগাসন করে থাকে আবার আর হিন্দি মুভি ও বিভিন্ন এ্যাডভাটাইজে দেখা যায় যোগাসন করা। আমরা প্রায়ই একটি সমস্যায় অনেকে ভুগে থাকি তা হলো হজম সমস্যা ও টয়লেট ক্লিয়ার না হওয়া। তাই, আজকে আমরা কীভাবে যোগাসন করে হজম শক্তি ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করা যায় - হজম শক্তি কমে যাওয়ার কারণ ও লক্ষণগুলো কি কি? ইত্যাদি সম্পর্কে জানবো।
আসলে ভোজন রসিক বাঙালীর খাদ্য তালিকায় তেল ও মসলাদার খাবার থাকা চাই-ই। এর ফলে সব বয়সী মানুষের মধ্যে একই চিত্র দেখা যায়, তা হলো হজমের সমস্যা ও কোষ্ঠকাঠিন্য। বিভিন্ন সময়ে পৃথিবীতে অনেক মহা মনিষী এসেছেন, যাঁরা এই যোগাসনে অভ্যস্ত ছিলেন। আসলে নিয়মিত যোগাসনে শরীরের একাধিক সমস্যার সমাধান হতে পারে, অবশ্যই যদি জেনে করেন। অর্থাৎ, যোগাসনের ক্ষেত্রে নিম্নেবর্ণিত ধাপগুলি প্রতিদিন সঠিকভাবে অনুসরণ করলে হজমের সমস্যা ও কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা অনেকাংশেই কমে যাবে। চলুন জেনে নেয়া যাক, কীভাবে যোগাসন করে হজম শক্তি ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করা যায় - হজম শক্তি কমে যাওয়ার কারণ ও লক্ষণগুলো কি কি?

পোস্ট সূচিপত্র: কীভাবে যোগাসন করে হজম শক্তি ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করা যায় - হজম শক্তি কমে যাওয়ার কারণ ও লক্ষণগুলো কি কি?
কীভাবে যোগাসন করে হজম শক্তি ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করা যায়
হজম শক্তি কমে যাওয়ার কারণ ও লক্ষণগুলো কি কি?
ঘরোয়া উপায়ে হজমশক্তি বৃদ্ধি করা
কীভাবে যোগাসন করে হজম শক্তি ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করা যায় - হজম শক্তি কমে যাওয়ার কারণ ও লক্ষণগুলো কি কি? - শেষ কথা


হজমের সমস্যা আমরা নিজেরাই করে থাকি, কেননা নিজেকে একটু নিয়ন্ত্রণ করা, ধৈর্য্য ধরা, লোভ সংবরণ করা ইত্যাদি এমন অনেক শব্দ আছে, যা আমরা জানি, কিন্তু মানিনা বা ভুলে যায়। ফলে, কীভাবে যোগাসন করে হজম শক্তি ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করা যায় - হজম শক্তি কমে যাওয়ার কারণ ও লক্ষণগুলো কি কি? আলোচনার মধ্যে আমরা জানবো-

কীভাবে যোগাসন করে হজম শক্তি ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করা যায়:

আসলে কীভাবে যোগাসন করে হজম শক্তি ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করা যায় - হজম শক্তি কমে যাওয়ার কারণ ও লক্ষণগুলো কি কি? এর মধ্যে অনেকগুলো যোগাসন রয়েছে, তবে এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-
👉 অপনাসন যোগাসন : অপনাসন একটি সংস্কৃত শব্দ। তবে, এই যোগাসনটি আমাদের দেহে নিম্নমুখী শক্তির প্রবাহ তৈরি করে এবং এর ফলে আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি ও পরিপাকতন্ত্রের কার্যকারিতাও বেড়ে যায়।

পদ্ধতিসমূহ :

  • প্রথমে কোন সমতল স্থানে চিত হয়ে শুয়ে পড়ুন।
  • এরপর দুই হাত দিয়ে হাঁটু দুটো মুড়ে বুকের কাছে আনতে হবে। তবে মাথা এবং নিতম্ব কিন্তু সোজা মাটির সাথে মিশে থাকবে;
  • ঠিক ১৫ সেকেন্ড পর্যন্ত ধরে রাখতে হবে এবং এ সময়ে শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখতে হবে।
  • এরপর হাঁটু দুটো ধীরে ধীরে ডান থেকে বামে এবং বাম থেকে ডানে আস্তে আস্তে নাড়াতে হবে, যেন মাংস পেশিতে চাপটা অনুভব করতে পারা যায়। হয়ে গেলে আবার আগের মত সোজা হয়ে শুয়ে পড়ুন।
  • অর্থাৎ প্রতিদিন ১০-১৫ বার বা আপনার শরীরের চাহিদামত করতে পারেন। তবে খেয়াল রাখবেন, যেন-ব্যায়ামটি করার সময় মেরুদন্ড এবং পুরো শরীর সোজা আছে কি না? এবং শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক আছে কি না?

আরও পড়ুন: গ্যাস্ট্রিক কী ও কেন হয়? নিয়মিত গ্যাসের ওষুধ খেলে যেসব ক্ষতি হতে পারে - গ্যাসের ঔষধ খাওয়ার নিয়ম

👉 ভুজুঙ্গাসন যোগাসন : ভুজুঙ্গাসন যোগাসনটি হজমের সমস্যা ও কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা কমাতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখে থাকে।

পদ্ধতিসমূহ :

  • প্রথমে কোন সমতল স্থানে উপুড় হয়ে শুতে হবে এবং পেট ও কপাল যাতে মাটির সাথে মিশে থাকে।
  • এরপর বুক ডাউন দেয়ার মত অর্থাৎ, দুই হাতের তালুর ওপর ভর দিয়ে পেছনের দিকে বাঁকা রেখে শরীরকে ধীরে ধীরে ওপরের দিকে তুলতে হবে।
  • এভাবে ১০-১৫ সেকেন্ড অপেক্ষা করার পরে আবার ঠিক আগের মত শুয়ে পরতে হবে।
  • প্রতিদিন যদি ১৫-২০ বার বা আপনার শরীরের চাহিদানুযায়ী করতে পারেন। এক্ষেত্রে খেয়াল অবশ্যই খেয়াল রাখবেন, ব্যায়ামটি করার সময় আপনার হাত দুটো সোজা আছে কি না? কোমরটাকেও মাটি থেকে অন্তত কিছুটা হলেও ওপরে তুলতে হবে, আপনার শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক আছে কিনা ইত্যাদি।


👉 ধনুরাসন যোগাসন : এই যোগাসনটিও পরিপাকতন্ত্রের জন্য খুবই উপকারী।

পদ্ধতিসমূহ :

  • প্রথমে কোন সমতল স্থানে উপুড় হয়ে শুতে হবে এবং পেট ও কপাল যাতে মাটির সাথে মিশে থাকে।
  • এরপর পা এবং ঘাড় একইসাথে ধীরে ধীরে ওপরের দিকে তুলতে হবে।
  • এরপর দুই হাত দিয়ে দুই পা ধরে শরীরটাকে ব্যান্ড করার প্রচেষ্টা করতে হবে।
  • এভাবে ১০-১৫ সেকেন্ড অপেক্ষা করার পরে আবার ঠিক আগের মত শুয়ে পরতে হবে।
  • প্রতিদিন যদি ১৫-২০ বার বা আপনার শরীরের চাহিদানুযায়ী করতে পারেন। এক্ষেত্রে খেয়াল অবশ্যই খেয়াল রাখবেন, ব্যায়ামটি করার সময় আপনার হাত দুটো যাতে সোজা টানটান থাকে, ঘাড় সমান্তরাল থাকবে এবং দৃষ্টি সামনের দিকে এবং আপনার শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক আছে কিনা ইত্যাদি।

হজম শক্তি কমে যাওয়ার কারণ ও লক্ষণগুলো কি কি?

  • চিকিৎসকের মতে, হজম শক্তি কমে গেলে দেখা দিতে পারে নানারকম লক্ষণ:
  • যেমন-বদহজম, ড়্যাস, পেট ফোলা ভাব, বুক জ্বালা, পেটে ব্যথা, মলত্যাগের সমস্যা, ক্ষুধা কমে যাওয়া, দুর্বলতা ও মাথাব্যথা, কোষ্ঠকাঠিন্য, বমি বমি ভাব ইত্যাদি।

আরও পড়ুন: মেথির যত পুষ্টিগুণ - মেথির উপকারিতা ও গুণাবলী এবং মেথি খাওয়ার নিয়ম

আবার হজমশক্তি কমে যাওয়ার অনেকগুলো কারণও আছে। যেমন-খাদ্যে ফাইভার না থাকা, পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান না করা, ফাস্ট ফুডসহ তেল ও মশলাযুক্ত খাবার বেশী খাওয়া, অ্যালকোহল ও ধুমপান করা, মানসিক চাপ, পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া, গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা, ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রম না করা, ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ইত্যাদি।

ঘরোয়া উপায়ে হজমশক্তি বৃদ্ধি করা :

  • নিয়মিত এক টুকরো কাঁচা হলুদ হজমের সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে।
  • এক টুকরো আদাও হতে পারে হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক। তবে আদা খেতে না পারলেও আদা রস, আদা স্যুপ বা আদা চা-ও খাওয়া যেতে পারে।
  • সকালে ১/২ গ্লাস হালকা গরম পানি পার করতে পারলে হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
  • যদি কচি পেঁপে পাতার সিদ্ধ পানি খেতে পারেন, তাও হজম শক্তিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

কীভাবে যোগাসন করে হজম শক্তি ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করা যায় - হজম শক্তি কমে যাওয়ার কারণ ও লক্ষণগুলো কি কি? - শেষ কথা:

আশা করছি, কীভাবে যোগাসন করে হজম শক্তি ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করা যায় - হজম শক্তি কমে যাওয়ার কারণ ও লক্ষণগুলো কি কি? যদি জেনে থাকেন তাহলে আপনাদের উপকারে আসবআসলে কীভাবে যোগাসন করে হজম শক্তি ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করা যায় - হজম শক্তি কমে যাওয়ার কারণ ও লক্ষণগুলো কি কি? বিষয়ক আরো কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন এবং পরবর্তীতে অন্য কোনো বিষয়ে জানতে চাইলে সেটাও কমেন্ট করে জানাতে পারেন।

আরও পড়ুন: জাঙ্ক ফুড কি - জাঙ্ক ফুডের ক্ষতিকর দিকসমূহ

এরকম আরো তথ্যমূলক পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ফলো করতে পারেন। এতোক্ষণ আমাদের সাথে কীভাবে যোগাসন করে হজম শক্তি ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করা যায় - হজম শক্তি কমে যাওয়ার কারণ ও লক্ষণগুলো কি কি? আলোচনায় থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ এবং সেইসঙ্গে শুভকামনা রইল।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url