জ্বরঠোসা কেন হয় - জ্বরঠোসা ওঠার কারণ - জ্বরঠোসা সারাবেন কীভাবে? জ্বরঠোসা প্রতিরোধ করার উপায় সমূহ

আমাদের চলমান জীবনের সাথে অনেক ঘাত-প্রতিঘাত ও প্রতিকূল অবস্থা জড়িয়ে থাকে সেটা আমরা সবাই জানি। ঠিক তেমনই একটি বিষয় হচ্ছে জ্বরঠোসা বা জ্বরঠোঁটা বা জ্বরসুটা। এই রোগটির সাথে আমরা সবাই কমবেশী খুবই পরিচিত। সুতরাং আমাদের আগে জানতে হবে, জ্বরঠোসা কেন হয় - জ্বরঠোসা ওঠার কারণ - জ্বরঠোসা সারাবেন কীভাবে? জ্বরঠোসা প্রতিরোধ করার উপায় সমূহ ইত্যাদি বিষয়ে। আসলে জ্বরঠোঁটা কেন হয়, তার কারণটাও আমরা জানি যে, রাতে জ্বর আসে এবং কয়েকদিনের মধ্যে ঠোঁটের কোণায় কিংবা বর্ডারে একগুচ্ছ ফুসকড়ি ওঠে।
এই জ্বরঠোসা হওয়াতে বয়স্ক থেকে আরম্ভ করে নিকট আত্মীয়সহ বন্ধু-বান্ধব ও শুভাকাঙ্খীরা বিভিন্ন পরামর্শ দেন। জানেন কি, জ্বরঠোসা এক ধরণের ভাইরাল ডিজিজ অর্থাৎ ছোঁয়াচে রোগ। চিকিৎসাশাস্ত্রে এই জ্বরঠোসাকে ফিভার ব্লিস্টার বলে। কিন্তু সমস্যা একটাই, অর্থাৎ যার ব্যথা হয়, সেই শুধুমাত্র ব্যথার যন্ত্রণা ভোগ করে থাকে, অন্য কেউ নয়। তাই আর কথা না বাড়িয়ে জেনে নেয়া যাক জ্বরঠোসা কেন হয় - জ্বরঠোসা ওঠার কারণ - জ্বরঠোসা সারাবেন কীভাবে? জ্বরঠোসা প্রতিরোধ করার উপায় সমূহ এর বিভিন্ন বিষয়াদি:

পোস্ট সূচিপত্র: জ্বরঠোসা কেন হয় - জ্বরঠোসা ওঠার কারণ - জ্বরঠোসা সারাবেন কীভাবে? জ্বরঠোসা প্রতিরোধ করার উপায় সমূহ
জ্বরঠোসা কি?
জ্বরঠোসা কেন হয়
জ্বরঠোসা কাদের বেশী হয়
জ্বরঠোসা ওঠার কারণগুলি
কিভাবে প্রতিরোধ করা যেতে পারে বা জ্বরঠোসা সারাবেন কীভাবে?
ঘরোয়া বা প্রাকৃতিক উপায়ে জ্বরঠোসা সারার উপায়সমূহ
চিকিৎসা পদ্ধতি
সম্পর্কিত প্রশ্নাবলীসমূহ
জ্বরঠোসা কেন হয় - জ্বরঠোসা ওঠার কারণ - জ্বরঠোসা সারাবেন কীভাবে? জ্বরঠোসা প্রতিরোধ করার উপায় সমূহ - শেষ কথা

জ্বরঠোসা কি?

পূর্বেই বলেছি, জ্বরঠোসা এক ধরণের ভাইরাল ডিজিজ অর্থাৎ ছোঁয়াচে রোগ। আসলে ঘুমের মধ্যে আমরা অনেক সময় বুঝতে বা খেয়াল করতে পারিনা যে, রাতে আমাদের শরীরে জ্বর আসে এবং কয়েকদিনের মধ্যে ঠোঁটের কোণায় কিংবা বর্ডারে একগুচ্ছ ফুসকড়ি ওঠে। এর সঙ্গে থাকে জ্বর, ব্যথা, বমি ভাব কিংবা বমি ও মাথাব্যথার সমস্যা।

জ্বরঠোসা কেন হয় :

জ্বরঠোসা কেন হয় এর মূল কারণ হচ্ছে HSV-1 (এইচএসভি-১) এর ইনফেকশন। অর্থাৎ এই ইনফেকশনের কারণেই আমাদের শরীরে কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসে। আবার অনেক সময় জ্বরের কারণেও জ্বরঠোসা হতে পারে। এই অসুখটি জ্বরঠোসায় আক্রান্ত রোগীদের সংস্পর্শে আসলেও হয়ে থাকে। এ ছাড়াও সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি, মেয়েদের পিরিয়ডের সময়, মানসিক চাপ ইত্যাদির কারণেও হয়ে থাকে।

জ্বরঠোসা কাদের বেশী হয় :

আপনার জানেন কি শতকরা প্রায় ৮০ ভাগ মানুষই HSV-1 (এইচএসভি-১) এর ইনফেকশন আক্রান্ত থাকেন। কিন্তু বেশির ভাগ সময়ই এই অসুখটি সুপ্ত অবস্থায় থাকে এবং ১০ বছর বয়সে প্রথম প্রকাশ পায়। সাধারণত প্রথমবার জ্বরঠোসা বা ফিভার ব্লিস্টার সেরে যাবার পরও HSV-1 (এইচএসভি-১) স্নায়ুকোষে লুকিয়ে থাকে এবং বারবার এর প্রকাশ ঘটে থাকে।

জ্বরঠোসা ওঠার কারণগুলি :

  • জ্বরঠোসা ওঠার কারণ- এর মধ্যে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে হতে পারে;
  • নারীদের পিরিয়ডের সময় হতে পারে;
  • ডায়াবেটিস, শারীরিক অসুস্থতা, অত্যধিক ক্লান্তি, মানসিক চাপ ও হতাশা থাকলে, জ্বরঠোসা ওঠার কারণ হতে পারে;

আরও পড়ুন: গোসলের ফরজ কয়টি-গোসলের ফরজ কয়টি ও কি কি

  • অনেক সময় ক্যানসারে আক্রান্ত ব্যক্তি বা ক্যানসারের চিকিৎসা নিচ্ছেন তাদেরও জ্বরঠোসা ওঠার কারণ হতে পারে;
  • হারপিস ভাইরাসের কারণে জ্বর আসে এবং জ্বরঠোসা হয়।
  • জ্বরঠোসা ওঠার কারণ- এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, যদি কোনভাবে হারপিস সিমপ্লেক্স টাইপ-১ ভাইরাসের মাধ্যমে সংক্রমিত হলে জ্বরঠোসা হতে পারে;

কিভাবে প্রতিরোধ করা যেতে পারে  বা জ্বরঠোসা সারাবেন কীভাবে?

  • জ্বরঠোসা প্রতিরোধ করার উপায় সমূহ হিসেবে আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত লিপজেল, লিপস্টিক, বিভিন্ন প্রসাধনী সামগ্রী, তোয়ালে, রেজার, পানির বোতল, চামচ, গ্লাস ইত্যাদি ব্যবহার না করা;
  • জ্বরঠোসা হাত দিয়ে স্পর্শ করা যাবেনা, যদি অজান্তে হাত দিয়ে ফেললে অবশ্যই হাত সাবান দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে;
  • বাচ্চাদের চুমু দিয়ে আদর করা যাবে না, অর্থাৎ, জ্বরঠোসা প্রতিরোধ করার উপায় সমূহ হিসেবে জ্বরঠোসা থাকাবস্থায় কোনমতেই বাচ্চাদের চুমু দেয়া যাবে না;
  • চোখ চুলকানো বা হাত দেয়া যাবে না;

আরও পড়ুন: পিরিয়ড না হলে করনীয় - মাসিক না হলে ঔষধ

  • জ্বরঠোসা প্রতিরোধ করার উপায় সমূহ হিসেবে নিজেকে মানসিক চাপমুক্ত থাকতে হবে;
  • পরিচ্ছন্ন পরিবেশ এবং পুষ্টিকর খাবার গ্রহণের মাধ্যমে স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করতে হবে;
  • জ্বরঠোসা প্রতিরোধ করার উপায় সমূহ হিসেবে বিশেষ করে চুম্বন এবং ওরাল সেক্স থেকে বিরত থাকতে হবে, 
  • মুখের পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করতে হবে;
  • জ্বরঠোসা প্রতিরোধ করার উপায় সমূহ হিসেবে সানস্ক্রিন বা লিপ-বাম ব্যবহার করতে হবে;

ঘরোয়া বা প্রাকৃতিক উপায়ে জ্বরঠোসা সারার উপায়সমূহ :

জ্বরঠোসা সারাবেন কীভাবে? বলতে ঘরোয়া বা প্রাকৃতিক উপায়ে জ্বরঠোসা সারানো যায়, যথা-
👉 অ্যাপল সিডার ভিনেগার : প্রতিদিন দুই বেলা করে এটির সঙ্গে পানি মিশিয়ে জ্বরঠোসায় লাগাতে হবে। অর্থাৎ, জ্বরঠোসা সারাবেন কীভাবে? প্রশ্নের উত্তরে বলা যায়, অ্যাপল সিডার ভিনেগার দিয়ে সারানো যেতে পারে।
👉 অ্যালোভেরা : সামান্য পানির সঙ্গে অ্যালোভেরা জেল মিশয়ে ব্যবহার করলে মিলবে জ্বরঠোসা ও ব্যথা থেকে মুক্তি।
👉 আদার তেল : আদার তেল ব্যবহার করলে এটি হার্পস ভাইরাসকে ধ্বংস করে, ফলে এটি ব্যবহারে মিলবে দ্রুত সমাধান।
👉 পুদিনার তেল : পুদিনার তেল ব্যবহারের মাধ্যমে মিলবে দ্রুত সমাধান। অর্থাৎ, জ্বরঠোসা সারাবেন কীভাবে? বলতে পুদিনার তেল ব্যবহার করতে হবে।

আরও পড়ুন: সর্দিজ্বর হলে কি করণীয় - কিভাবে প্রতিরোধ করা যায়

👉 রসুন : রসুনের একটি কোয়া থেঁতলে অলিভ ওয়েলে মিশিয়ে জ্বরঠোসায় ব্যবহার করতে হবে। এটি দিনে তিনবার ব্যবহার করলে দ্রুত সমাধান মিলবে।
👉 বেকিং সোডা : পানির সঙ্গে বেকিং সোডা মিশিয়ে একটি কাপড়ের মাধ্যমে জ্বরঠোসায় ব্যবহার করলে মিলবে সমাধান।

চিকিৎসা পদ্ধতি :

মূলত জ্বরঠোসা কেন হয় - জ্বরঠোসা ওঠার কারণ - জ্বরঠোসা সারাবেন কীভাবে? জ্বরঠোসা প্রতিরোধ করার উপায় সমূহ এর চিকিৎসা সম্পর্কে বলতে গেলে আমাদের জানতে হবে জ্বরঠোসার উপস্থিতি।  জ্বরঠোসা সাধারণত ৭-১৪ দিন পর্যন্ত উপসর্গের উপস্থিতি থাকলেও তা ৮-১০ দিনের মধ্যে এমনিতেই ভালো হয়ে যায়। তবে প্রথম সপ্তাহের দিকে অ্যান্টি-ভাইরাল জেল লাগালে এ সমস্যার দ্রুত সমাধান সম্ভব। যদি ১৪ দিনের বেশি ব্যথাযুক্ত জ্বরঠোসা থাকে তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা সমীচিন।

সম্পর্কিত প্রশ্নাবলীসমূহ :

  • জ্বর ঠোসা হওয়ার কারণ কি?
  • জ্বরঠোসা কি ছোঁয়াচে?
  • ঠোঁটে ফোস্কা পড়ে কেন?
  • জ্বর ঠোসা দূর করার উপায়
  • জ্বর ঠোসা ওষুধ
  • জ্বর ঠোসার দাগ দূর করার উপায়
  • জ্বরঠোসা কেন হয়

জ্বরঠোসা কেন হয় - জ্বরঠোসা ওঠার কারণ - জ্বরঠোসা সারাবেন কীভাবে? জ্বরঠোসা প্রতিরোধ করার উপায় সমূহ - শেষ কথা :

আজকের আর্টিকেল থেকে আপনারা জানতে পারলেন জ্বরঠোসা কেন হয় - জ্বরঠোসা ওঠার কারণ - জ্বরঠোসা সারাবেন কীভাবে? জ্বরঠোসা প্রতিরোধ করার উপায় সমূহ এবং ঘরোয়া পদ্ধতিতে কিভাবে সারিয়ে তোলা যায় জ্বরঠোঁটা, এর চিকিৎসা পদ্ধতি ইত্যাদি এই সকল বিষয়ে। আশা করছি আজকের পোস্ট থেকে আপনারা জ্বরঠোসা কেন হয় - জ্বরঠোসা ওঠার কারণ - জ্বরঠোসা সারাবেন কীভাবে? জ্বরঠোসা প্রতিরোধ করার উপায় সমূহ এর বিষয়ে অনেক কিছু জানতে পারলেন তারপরেও যদি আরো কিছু জানার থাকে তাহলে কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন এবং এরকম আরো তথ্য মূলক আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url