ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়ামের অভাবে কি হয়?-ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়াম অভাবের লক্ষণ ও প্রতিকার-ক্যালসিয়ামের সাথে ভিটামিন ডি খাওয়া হয় কেন?
Mithu Sarker
12 Aug, 2024
আমাদের শরীরকে সঠিক ও সুস্থ্যভাবে পরিচালনার জন্য খাওয়া-দাওয়ার পাশাপাশি ভিটিামিন জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করছি কিনা তা খেয়াল করা খুবই জরুরী। শরীরে বিদ্যমান সর্বাধিক পরিমাণ ঝনিজ উপাদান হলো ক্যালসিয়াম। এই ক্যালসিয়াম আমাদের হাড় গঠন ও মজবুত রাখতে সাহায্য করে। আবার ভিটামিনের অভাবেও দেখা দেয় নানান অসুবিধা। আজকে আমরা ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়ামের অভাবে কি হয়?-ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়াম অভাবের লক্ষণ ও প্রতিকার-ক্যালসিয়ামের সাথে ভিটামিন ডি খাওয়া হয় কেন? ইত্যাদি বিষয়ে জানার চেষ্টা করবো।
শরীর নামক যন্ত্রটায় যখন যেটার ঘাটতি দেখা দিবে তার কিছু লক্ষণ, উপমা বা প্রভাব পরিলক্ষিত হয়ে থাকে। শরীরকে শক্তিশালী ও সতেজ রাখতে গেলে আমাদের অবশ্যই ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়ামের অভাবে কি হয়? তা জানতে হবে এবং ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়াম অভাবের লক্ষণ ও প্রতিকার গুলি কি কি এবং ক্যালসিয়ামের সাথে ভিটামিন ডি খাওয়া হয় কেন? তা জানতে হবে :
ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়ামের অভাবে কি হয়?-ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়াম অভাবের লক্ষণ ও প্রতিকার-ক্যালসিয়ামের সাথে ভিটামিন ডি খাওয়া হয় কেন? এর আলোকে শরীরে ভিটামিন ডি-এর অভাব হলে, যেসব লক্ষণ দেখে বুঝা যায়, তাহলো: অত্যধিক ক্লান্তি, ওজন বৃদ্ধি, চুল পড়া, হাড়ের ক্ষয়, যে কোন ক্ষত শুকাতে দেরি হওয়া, মানসিক অবসাদ, পিঠে ব্যথা, হাড়ে ফাটল, মাংসপেশির দুর্বলতা, উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদি। অপরপক্ষে ক্যালসিয়ামের অভাব/ঘাটতি হলে, যেসব লক্ষণ দেখে বুঝা যায়, তাহলো: পায়ে ও পিঠে ব্যথা, চুল ও ত্বক খসখসে হয়ে যায়, নখে ফাটলের সৃষ্টি, স্মরণশক্তির সমস্যা, অস্থিরতা, হতাশা, অসংলগ্ন কথাবার্তা বা আচরণ, মতিভ্রম ইত্যাদি। আবার অতিমাত্রায় শরীরে যদি ক্যালসিয়ামের অভাব ঘটে, তাহলে হাত-পা কুঁকড়ে যায়, আঙুল বেঁকে যায়, ঠোঁট-মুখ ঝি ঝি করে ইত্যাদি।
শরীরে ক্যালসিয়ামের কাজ কি?
ক্যালসিয়াম হাড় গঠন করতে ও মজবুত রাখতে সাহায্য করে এবং আমাদের স্নায়বিক কার্যক্রমকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। মাংসপেশির সংকোচন ও প্রসারণ তথা নড়াচড়ায় এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। আমাদের শরীরে রক্ত জমাট বাঁধার ক্ষেত্রে ক্যালসিয়াম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। হৃৎস্পন্দন নিয়ন্ত্রণে এর ভূমিকা রয়েছে। জানেন কি, শরীরের ৯৯ ভাগ ক্যালসিয়াম জমা থাকে হাড় ও দাঁতের ভেতর। আর বাকি এক ভাগ রয়েছে রক্ত, মাংসপেশি ও অন্যান্য অঙ্গে।
শরীরে ভিটামিন ডি এর কাজ কি?
ভিটামিন ডি চর্বিতে দ্রবণীয় একটি ভিটামিন, যার মধ্যে আছে ভিটামিন ডি১, ডি২ ও ডি৩। এই ভিটামিনগুলি হাড় ও দাঁতের বৃদ্ধি ও বিকাশে সাহায্য করে। এ ছাড়াও নির্দিষ্ট কিছু রোগের প্রতিরোধ ক্ষমতাও তৈরি করতে পারে।
ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়াম অভাবের লক্ষণ ও প্রতিকার :
হাইপোক্যালসেমিয়া হল একটি ক্যালসিয়ামের ঘাটতি বর্ণনা করতে ব্যবহার করা হয়। হাইপোক্যালসেমিয়ার কিছু প্রাথমিক লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে-খিটখিটে ভাব, পেশী কাঁপানো, ঝাঁকুনি, কাপুনি, অলসতা এবং খিচুনি।
সুতরাং উপরোক্ত ক্যালসিয়ামজনিত ঘাটতি মেটানোর জন্য আমাদের খাদ্যে আরও ক্যালসিয়াম যোগ করতে হবে। যেমন-দুগ্ধজাত পণ্য (পেনির, দুধ, দই ইত্যাদি)। এ ছাড়াও সবুজ শাক-সবজি, কাজুবাদাম, ফল, চিয়া সিড, ব্রুকলি, কাঁটাযুক্ত ছোট মাছ (সার্ডন ও সালমন), ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার যেমন-সয়া’র পানীয়, ফলের রস এবং দুধের বিকল্প।
ঠিক একই ভাবে ভিটামিন জাতীয় খাবার সমূহ, যেমন-ডিমের সাদা অংশ, চিজ, গরু বা খাসির কলিজা, কড লিভার অয়েল বা মাছের তেল, দুধ, সয়ামিল্ক, ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট ট্যাবলেট এবং ফল জাতীয়-কমলা, কলা, জাম্বুরা, স্ট্রবেরি, আনারস, পেয়ারা, পেঁপে ইত্যাদিসহ ভিটামিন K সমৃদ্ধ ফল, যেমন-ডুমুর, বরই, আঙ্গুর, সরিষার শাক, রাম্পবেরি, ব্লুবেরি ইত্যাদি।
একজন ব্যক্তির দৈনিক প্রস্তাবিত ক্যালসিয়াম গ্রহণের পরিমাণ :
৯ থেকে ১৮ বছরের শিশুদের প্রতিদিন ৩০০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম খাওয়া উচিত
১৯ থেকে ৫০ বছর বয়সী প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য, প্রতিদিন ২৫০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম খাওয়া উচিত, এবং
৫১ বছর এবং তার বেশি বয়সের মধ্যে প্রতিদিন ২০০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম খাওয়া উচিত
এ ছাড়াও একজন গর্ভবতী মহিলার প্রতিদিন কমপক্ষে ২৫০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম খাওয়া উচিত, এবং
একজন গর্ভবতী কিশোরীর জন্য প্রতিদিন ৩০০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম খাওয়া উচিত
মহিলাদের ক্যালসিয়াম অভাবজনিত লক্ষণগুলি হলো :
সাধারণত যে সকল মহিরার বয়স ৪০-৫০ এর মধ্যে বা উর্দ্ধে অথবা যারা মেনোপজের কাছাকাছি, তাদের মধ্যে ইস্ট্রোজেন উৎপন্নের হার কমে যায়। ইস্টোজেন, ক্যালসিয়াম এর বিপাক ও শোষণে সাহায্য করে। যেমন-পিঠে ব্যথা, কোমরে ব্যথা, হাঁটুতে ব্যথা, ক্লান্তি, পেশিতে টান বা খিঁচুনি ইত্যাদি।
ক্যালসিয়ামের সাথে ভিটামিন ডি খাওয়া হয় কেন?
ক্যালসিয়ামের সাথে ভিটামিন ডি খাওয়া হয় কেন? অর্থাৎ, ভিটামিন ডি এর উপস্থিতিতে ক্যালসিয়াম সক্রিয়ভাবে ক্ষুদ্রান্ত্র থেকে শোষিত হয়। অর্থাৎ ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাস হাড়কে খনিজ ও মজবুত করার লক্ষ্যে হাইড্রোক্সাপাটাইট স্ফটিক তৈরি করে। যে কারণে হাড়ের সঠিক খনিজকরণের জন্য সর্বোত্তম ভিটামিন ডি এবং ক্যালসিয়াম উভয়ই সমন্বিত একটি খাদ্য গুরুত্বপূর্ণ।
এ ছাড়াও জিজ্ঞাসিত কিছু প্রশ্নাবলী :
ভিটামিন ডি ৩ এর অভাবে কি হয়
ভিটামিন ডি এর অভাব হলে করণীয়
শিশুদের ভিটামিন ডি এর অভাবের লক্ষণ
ভিটামিন ডি এর অভাব কেন হয়
ভিটামিন ডি বেশি খেলে কি হয়
ভিটামিন ডি এর উৎস
ক্যালসিয়ামের অভাবে কি মাসিক ভারী হয়?
ক্যালসিয়ামের অভাবে কি হাঁটু ব্যথা হয়?
ক্যালসিয়ামের অভাবে কি চুল পড়ে?
ভিটামিন ডি এর অভাবে কি কি রোগ হতে পারে?
ক্যালসিয়ামের অভাব হলে কী খাবেন?
ক্যালসিয়ামের অভাবে কি পিঠে ব্যথা হয়?
ক্যালসিয়ামের সাথে ভিটামিন ডি খাওয়া হয় কেন?
ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়ামের অভাবে কি হয়?
ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়াম অভাবের লক্ষণ ও প্রতিকার
ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়ামের অভাবে কি হয়?-ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়াম অভাবের লক্ষণ ও প্রতিকার-ক্যালসিয়ামের সাথে ভিটামিন ডি খাওয়া হয় কেন? - শেষ :
আজকের ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়ামের অভাবে কি হয়?-ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়াম অভাবের লক্ষণ ও প্রতিকার-ক্যালসিয়ামের সাথে ভিটামিন ডি খাওয়া হয় কেন? বিষয়ক আর্টিকেল থেকে আপনারা জানতে পারলেন ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়ামের অভাবে কি হয়?-ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়াম অভাবের লক্ষণ ও প্রতিকার-ক্যালসিয়ামের সাথে ভিটামিন ডি খাওয়া হয় কেন? এই সকল বিষয়ে।
আশা করছি আজকের পোস্ট থেকে আপনারা ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়ামের অভাবে কি হয়? তা জানতে পারলেন এবং সেইসঙ্গে ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়াম অভাবের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে এবং ক্যালসিয়ামের সাথে ভিটামিন ডি খাওয়া হয় কেন? তাও আলোচনায় জানতে পারলেন, তারপরেও যদি আরো কিছু জানার থাকে তাহলে কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন। এবং এরকম আরো তথ্য মূলক আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url