কৃমি কিভাবে শরীরে প্রবেশ করে - কাদের বেশি কৃমি হয় - ঘরোয়া উপায়ে কৃমি দূর করার কৌশলসমূহ
আমাদের সকলের জীবনে কোন না কোন সময় কৃমি সমস্যা একটি বাজে অভিজ্ঞতা। আর একটি গবেষণায় দেখা গেছে প্রায় ৮৫ শতাংশ মানুষের পেটেই কৃমি থাকে। অর্থাৎ বর্তমানে কৃমিজনিত সমস্যায় ভুগছেন এমন মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি। তবে বেশিরভাগ সময়ই আমরা ছোটদের দায়ী করে থাকি কৃমির জন্য। এই কারণে আমরা কৃমি কিভাবে শরীরে প্রবেশ করে - কাদের বেশি কৃমি হয় - ঘরোয়া উপায়ে কৃমি দূর করার কৌশলসমূহ এর সম্বন্ধে জানবো।
কৃমি যে শুধু আমাদের পেটেই থাকে এমনটা কিন্তু নয়, এই পরজীবী ক্ষুদ্র প্রাণিটি শরীরের যে কোন জায়গায় থাকতে পারে, হোক সেটা চোখ, মস্তিস্ক বা পেট। আসলে অপরিস্কার-অপরিচ্ছন্ন জীবন যাপনই মূলত কৃমির সংক্রমণ ঘটে থাকে। আজকে কৃমির যাবতীয় বিষয় নিয়ে যেমন-কৃমি কিভাবে শরীরে প্রবেশ করে - কাদের বেশি কৃমি হয় - ঘরোয়া উপায়ে কৃমি দূর করার কৌশলসমূহ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা ও জানার চেষ্টা করবো।
পোস্ট সূচিপত্র: কৃমি কিভাবে শরীরে প্রবেশ করে - কাদের বেশি কৃমি হয় - ঘরোয়া উপায়ে কৃমি দূর করার কৌশলসমূহ
কৃমি কিভাবে শরীরে প্রবেশ করে
কৃমির লক্ষণগুলো কী
কাদের বেশি কৃমি হয়
ঘরোয়া উপায়ে কৃমি দূর করার কৌশলসমূহ
কৃমি কিভাবে শরীরে প্রবেশ করে - কাদের বেশি কৃমি হয় - ঘরোয়া উপায়ে কৃমি দূর করার কৌশলসমূহ-শেষ কথা:
কৃমি কিভাবে শরীরে প্রবেশ করে
আসলে, কৃমি কিভাবে শরীরে প্রবেশ করে - কাদের বেশি কৃমি হয় - ঘরোয়া উপায়ে কৃমি দূর করার কৌশলসমূহ তা জানতে গেলে কীভাবে কৃমি খাবারের মাধ্যমে আমাদের শরীরে প্রবেশ করে। অর্থাৎ অপরিস্কার হাত দিয়ে খাবার খেলে ওই খাবারের মাধ্যমে পেটে কৃমি প্রবেশ করতে পারে। আবার নরম স্যাঁতসেঁতে মাটিতে খালি পায়ে হাঁটলে শরীরে কৃমি প্রবেশ করে। সবথেকে অপরিস্কার জীবনযাপনই মূলত শরীরে কৃমি বৃদ্ধি হওয়ার কারণ। এ ছাড়াও কৃমির ডিম খাবার, পানি, বাতাস, মল, বিড়াল ও গৃহপালিত পশুর শরীর, বাথরুমের কমোড, দরজা ও হাতলে মিশে থাকে এবং কৃমির ডিম সেখান থেকে মুখ, নাক ও পায়ুপথ দিয়ে শরীরে প্রবেশ করে থাকে।
কৃমির লক্ষণগুলো কী
নানাবিধ সমস্যা থেকে শরীরে নানা ধরণের জটিলতা দেখা দিতে পারে। সেক্ষেত্রে কৃমির লক্ষণগুলো কোনভাবেই অবহেলা করা উচিত নয়, লক্ষণগুলি যেমন-
দুর্বলতা, তলপেট ব্যথা হওয়া, ক্লান্ত লাগা, ডায়রিয়া বা বমি হওয়া, গ্যাস বা পেট ফাঁপা, মলদ্বারে চুলকানি হওয়া, রক্তশূন্যতা দেখা দেয়, ক্ষুধামন্দা ইত্যাদি।
কাদের বেশি কৃমি হয়
যদিও আমরা জানি যে, কৃমির সমস্যায় সবথেকে বেশী ভুগে শিশুরা। তবে শিশুরা কৃমিজনিত সমস্যায় আক্রান্ত হলে তা তারা নির্দ্বিধায় বলে দিতে পারে। কিন্তু বড়রা কৃমিজনিত সমস্যা আক্রান্ত হলে তা বলতে লজ্জাবোধ করে এবং সে কারণেই পরবর্তীতে এটা মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। তাই, অবশ্যই আমাদের কৃমি কিভাবে শরীরে প্রবেশ করে - কাদের বেশি কৃমি হয় - ঘরোয়া উপায়ে কৃমি দূর করার কৌশলসমূহ জানতে হবে।
ঘরোয়া উপায়ে কৃমি দূর করার কৌশলসমূহ
অর্থাৎ. কৃমি কিভাবে শরীরে প্রবেশ করে - কাদের বেশি কৃমি হয় - ঘরোয়া উপায়ে কৃমি দূর করার কৌশলসমূহ কি হতে পারে তা নিম্নে বর্ণিত হলো:
নিমপাতা: শরীরে কৃমির প্রবণতা বেশী হলে তেতো খেতে হয়। সুতরাং কয়েকটি নিমপাতা বেটে ফ্রিজে রেখে দিন এবং পরের দিন সকালে খালি পেটে এক গ্লাস গরম পানিতে ১ চা-চামচ নিমপাতা বাটা মিশিয়ে খেয়ে ফেলুন। তবে অবশ্যই যে পাত্রে নিমপাতা বাটা রাখছেন, সেই পাত্রটিতে যেন বাতাস ঢুকতে না পারে। এচাড়াও তিতো হিসেবে চিরতা রাত্রে ভিজিয়ে রেখে সকালে তা খালিপেটে খেতে পারেন।
মিষ্টি কুমড়ার বীজ: কয়েকটি কুমড়োর বীজ হালকা করে ভেজে গুড়া করে নিতে হবে, এরপর সম-পরিমাণ পানি ও নাকিরেখের দুধের মিশ্রণের মধ্যে ভাজা কুমড়া বীজের গুড়া মিশিয়ে নিয়ে সকালে খারি পেটে এটি পান করতে পারেন।
লবঙ্গ: প্রতিদিন সকালে খালি পেটে দুইটি লবঙ্গ চিবোতে পারেন। অর্থাৎ লবঙ্গে থাকা অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল উপাদান কৃমি ধ্বংস করে। এ ছাড়াও এক কাপ পানিতে ৩-৪টি লবঙ্গ ফুটিয়ে সারাদিন অল্প অল্প করে পান করতে পারেন।
আনারস: আনারসে থাকা ব্রোমেলিন এনজাইম কৃমি ধ্বংস করে। অর্থাৎ একটানা ৪ দিন আনারসের এক গ্লাস জুস খেতে পারেন কৃমি হতে মুক্ত হতে।
মধু ও কাঁচা পেঁপে: এক গ্লাস হালকা গরম দুধের সঙ্গে এক চামচ মধু ও ১ চা-চামচ কাঁচা পেঁপের রস মিশিয়ে খালি পেটে সপ্তাহখানেক খেলে উপকার পাবেন।
গাজর: একটি গাজর কুচি কুচি করে প্রতিদিন সকাল খালি পেটে খেতে পারেন, কারণ এতে রয়েছে ভিটামিন এ, সি এবং জিঙ্ক যা কৃমি প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে।
রসুন: যদি আপনি কয়েকটা দিন সকালে খালি পেটে ২-৪ কোয়া কাঁচা রসুন চিবিয়ে খেতে পারেন, তাহলে কৃমি মরে যায়।
হলুদ: কাঁচা হলুদ বেটে রস করে নিতে হবে, এরপর এক চা-চামচ হলুদের সাথে সামান্য লকণ মিশিয়ে নিয়ে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেতে পারেন। আবার আধা কাপ গরম পানিতে সামান্য হলুদ গুঁড়া এবং লবণ মিশিয়েও খেতে পারেন।
আপেল সিডার ভিনেগার: খাওয়ার আগে আপেল সিডার ভিনেগার পেটে অ্যাসিডের পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে। যা শরীরে প্যারাসাইট ও জীবাণুর লার্ভা মারতে সাহায্য করে।
কৃমি কিভাবে শরীরে প্রবেশ করে - কাদের বেশি কৃমি হয় - ঘরোয়া উপায়ে কৃমি দূর করার কৌশলসমূহ-শেষ কথা:
কৃমি কিভাবে শরীরে প্রবেশ করে - কাদের বেশি কৃমি হয় - ঘরোয়া উপায়ে কৃমি দূর করার কৌশলসমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। প্রিয় বন্ধুরা আশা করি আপনারা উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
আরও পড়ুন: শিশুদের মোবাইল ফোন ব্যবহার ও ক্ষতিকর দিকসমূহ
আপনাদের কৃমি কিভাবে শরীরে প্রবেশ করে - কাদের বেশি কৃমি হয় - ঘরোয়া উপায়ে কৃমি দূর করার কৌশলসমূহ-লক্ষণগুলি কী কী ইত্যাদি বিষয়গুলো জানাতে পেরে আমরা আনন্দিত। আপনার এবং আপনার পরিবারের সুস্থতা কামনা করে আজকের মত এখানে শেষ করছি। আবার দেখা হবে নতুন কোন আর্টিকেলে সেই পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে থাকুন।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url