জানতে হবে বেলের নানান উপকারিতা
বেল আমাদের কাছে অতি জনপ্রিয় ও পরিচিত একটি ফল। তাই আপনাকে জানতে হবে বেলের নানান উপকারিতা ও গুণাবলী সম্পর্কে।
বেল একটি ঔষধি ফল। নানান পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এই ফলের বিষয়ে আমাদের জানতে হবে বেলের নানান উপকারিতা ও গুণাবলীসমূহ:
পোস্ট সূচিপত্র: জানতে হবে বেলের নানান উপকারিতা
বেল একটি ঔষধি ফল
বেলের পুষ্টিগুণ ও গুণাবলীসমূহ
বেল এর বৈজ্ঞানিক নাম
বেলে কি কি ভিটামিন আছে?
বেল কীভাবে খাবেন
জানতে হবে বেলের নানান উপকারিতা-শেষ কথা:
বেল একটি ঔষধি ফল
অবশ্যই বেল একটি ঔষধি ফল, কারণ যে ফল খেলে শরীরের বিভিন্ন অসুখ-বিসুখ বা রোগবালাই ভালো হয়ে যায়, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় সর্বোপরি নিয়মিত বেল খেতে পারলে শরীরে বার্ধক্যের ছাপ পর্যন্ত হয়না, এমন ফলকে তো অবশ্যই ঔষধি ফল বলা যেতে পারে।
বেলের পুষ্টিগুণ ও গুণাবলীসমূহ:
আমাদের জানতে হবে বেলের নানান উপকারিতা ও গুণাবলী সম্পর্কে , নিম্নে তা বর্ণিত হলো:
- বেলে রয়েছে অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল উপাদান, যা যক্ষ্মা নিরাময়ে ভূমিকা রাখে।
আরও পড়ুন: আদা খেলে কি হয়? প্রতিদিন কতটা আদা খাওয়া উচিত? আদার উপকারিতা ও গুণাবলীসমূহ
- ক্লান্ত শরীরে কর্মশক্তি ফিরে পেতে পাকা বেলের শরবত খুবই কার্যকরী ভুমিকা পালন করে থাকে।
- যাদের পাইলস, এনাল ফিসটুলা ইত্যাদি মলদ্বারের রোগ আছে, তাদের জন্য বেল ভীষণ উপকারী।
- পাকা বেলে রয়েছে আলসার উপশমকারী উপাদান। অর্থাৎ যাদের এ জাতীয় সমস্যা আছে তারা অবশ্যই বেলের শরবত খেতে পারেন।
- বেলে রয়েছে ভিটামিন সি। তাই যাদের ভিটামিন সি জনিত সমস্যা আছে, যেমন-স্কার্ভি রোগ, তারা অবশ্যই বেল খেতে পারেন।
- ব্লাড পেশারের নিয়ন্ত্রণে পাকা বেল খেতে পারেন। কেননা, পাকা বেলে রয়েছে মেথানল নামক উপাদান যা রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। এ ছাড়াও পাকা বেল রক্ত শুদ্ধ করতে সাহায্য করে থাকে।
- বেল খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। বেলে আছে ফেনোলিক কম্পাউন্ড যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটি শরীরের ফ্রি-র্যাডিকেল দূর করে এবং বার্ধক্যের ছাপ পড়তে দেয় না।
- যদি কাঁচা বেল সিদ্ধ করে তা শরবত বানিয়ে অথবা পাকা বেলের শরবত খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যজনিত সমস্যা ভালো হয়। কারণ বেলে আছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, যা খাবার দ্রুত হজম করতে সাহায্য করে এবং নিয়মিত বেল খাওয়াতে আপনার হজম শক্তি উন্নত হবে।
- শরীরের বিভিন্ন ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে বেল খেতে পারেন। কেননা বেলে রয়েছে এ্যান্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান যা ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে থাকে।
আরও পড়ুন: কীভাবে অফিসের কাজে মনোযোগ বাড়ানো যেতে পারে - কাজে মনোযোগ বাড়ানোর যত কৌশল
- চোখের সমস্যাজনিত কারণে বেল খেতে পারেন। কারণ বেলে রয়েছে ভিটামিন এ, যা চোখের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
- বেল খেলে ক্যানসারের ঝুঁকি হ্রাস হয়, অর্থাৎ বেলে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টি প্রলেফিরেটিভ ও অ্যান্টি মুটাজেন নামক উপাদান যা ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে থাকে।
- ম্যালেরিয়া হয়ে কাঁচা বেলের শরবত বা ভিজিয়ে রাখা পানি খেতে পারলে উপকার হয়ে থাকে।
- বেলে থাকা থিয়ামিন ও রিবোফ্লাভিন লিভার ভালো রাখার ক্ষেত্রে সহায়তা করে থাকে।
- বেলে আমাশয়ের মতো রোগের উপশম হয়ে থাকে। অর্থাৎ কাঁচা বেল কেটে তা পানিতে ভিজিয়ে রেখে সেই পানি যদি খাওয়া যায় তাহলে আমাশা ভালো হয়।
- শরীরে এনার্জি বা শক্তি বাড়াতে বেলের জুড়ি নেই। অর্থাৎ ১০০ গ্রাম বেল ১৪০ গ্রাম এনার্জি দিয়ে থাকে।
- বেল খাওয়ার উপকারিতার হলো এটি শরীরের ইমিউনিটি বুস্ট করার পাশাপাশি পানিশূন্যতা কমিয়ে শরীরকে শীতল রাখে।
- বেলের পাতায় শরীরে ঘামের দুর্গন্ধ দূর হয়। অর্থাৎ যাদের গায়ে ঘাম বেশি হয় বা ঘামে দুর্গন্ধ হয় তারা বেল পাতার রস পানিতে মিশিয়ে সেই পানি দিয়ে শরীরর মুছে নিয়ে কিছুক্ষণ পর গোসল করলে দেখবেন, গায়ে ঘামের দুর্গন্ধ থাকবে না।
আরও পড়ুন: ঘন ঘন হাই ওঠে কেন - ইসলামে হাই তোলা কি খারাপ? - সারারাত ঘুমানোর পরও অফিসে গিয়ে হাই ওঠে কেন
যেসব পুরুলের শুক্রাণু বেশি পাতলা বা প্রস্রাবের রাস্তায় পিচ্ছিল আকারে ঝরে, তারা বেলগাছের ছালের টাটকা রস ২০ মিলিমিটার, গরুর দুধ ১৫০ মিলিমিটার, জিরার গুঁড়া ১ গ্রাম দিয়ে একসাথে মিশিয়ে দৈনিক একবার করে নিয়মিত একমাস খেতে পারলে এ ধরণের সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাবেন।
বেল এর বৈজ্ঞানিক নাম
বেল এর বৈজ্ঞানিক নাম Aegle marmelos Correa, বেল রুটাসি অর্থাৎ (Rutaceae) বেল হলো লেবু পরিবারের সদস্য এবং সংস্কৃত নাম বিল্ব। বেলকে বলা হয় শ্রীফল, আবার বেলের খোসা কাঠের মত শক্ত বলে ইংরেজিতে একে ডাকা হয় Wood Apple, সর্বোপরি বাংলায় এই ফলটির ব্যাপক চাহিদা বা কদর দেখে ব্রিটিশরা নাম দিয়েছিলেন Bengal Quince। মজার বিষয় এই বেল শব্দটি ফরাসি ‘বেল’ থেকে উদ্ভুত হয়েছে যার অর্থ ফর্সা, সুন্দর বা সুদর্শন।
বেলে কি কি ভিটামিন আছে?
আমাদের জানতে হবে বেলের নানান উপকারিতা, পুষ্টিগুণ ও গুণাবলীসমূহ কি কি? সাধারণত বেলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি এবং ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও পটাশিয়ামের মত মূল্যবান পুস্টি উপাদান। অর্থাৎ প্রতি ১০০ গ্রাম বেলে থাকে ১.৮ গ্রাম প্রোটিন, ৩১.৮ গ্রাম শর্করা, ০.৩ গ্রাম চর্বি, ৫৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন এ, ৬০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি, ৮৫ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম ও ৬০০ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম।
বেল কীভাবে খাবেন
সিজনের সময় আপনি পাকা বেল খেতে পারেন। কারণ বেল যে একটি ঔষধি এবং পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ ফল তা জানতে হবে বেলের নানান উপকারিতা ও কার্যাবলী সম্পর্কে। অর্থাৎ যদি সারা বছর যদি বেল খেতে চান তাহলে কাঁচা বেল কেটে শুকিয়ে তা পাউডার করে খেতে পারেন। আজকাল খোঁজ করলে নির্দিষ্ট কিছু দোকানেও বেলশুট পাওয়া যায়, সেটাও খেতে পরেন। তবে বেলশুট বা পাউডার ১ টেবিল চামচ ২০০ মিলিলিটার পানিতে ভিজিয়ে রেখে রাতের খাওয়ার অন্তত ১ ঘন্টা আগে খেতে পারেন।
জানতে হবে বেলের নানান উপকারিতা-শেষ কথা:
আজকের জানতে হবে বেলের নানান উপকারিতা আর্টিকেল থেকে আপনারা জানতে পারলেন কেন জানতে হবে বেলের নানান উপকারিতা সম্পর্কে, বেলে কি কি ভিটামিন আছে, বেল কীভাবে খাওয়া যায় এই সকল বিষয়ে। সাধারণত আমরা পাকা বেল খেয়ে থাকি, তবে গাছ থেকে কাঁচা বেল পেরে তা আগুনে পুড়িয়ে খাওয়ার মজাটাই আলাদা। এ ছাড়াও বেলের শরবত, বেলের মোরব্বা আমাদের কাছে খুবই পরিচিত এবং অত্যন্ত জনপ্রিয় খাবার। আশা করছি আজকের জানতে হবে বেলের নানান উপকারিতা পোস্ট থেকে আপনারা অনেক কিছু জানতে পারলেন তারপরেও যদি আরো কিছু জানার থাকে তাহলে কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন। এবং এরকম আরো তথ্য মূলক আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন ধন্যবাদ।
এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url