জেনে নিন হাতের কবজি ও বৃদ্ধাঙ্গুলের গোড়ায় ব্যথা কি করা যেতে পারে

হাতের কবজি ও বৃদ্ধাঙ্গুলের গোড়ায় অনেকেরই ব্যথা হয়। তাই আজকে জেনে নিন হাতের কবজি ও বৃদ্ধাঙ্গুলের গোড়ায় ব্যথা কি করা যেতে পারে।

অনেক সময় এই ব্যথার জন্য ব্যক্তি নিজেই দায়ী থাকে। নিন্মের আলোচনা থেকে জেনে নিন হাতের কবজি ও বৃদ্ধাঙ্গুলের গোড়ায় ব্যথা কি করা যেতে পারে।

পোস্ট সূচিপত্র: জেনে নিন হাতের কবজি ও বৃদ্ধাঙ্গুলের গোড়ায় ব্যথা কি করা যেতে পারে
ডি কোয়ার্ভেইন টেনোসাইনোভাইটিস কাকে বলে?
ডি কোয়ার্ভেইন টেনোসাইনোভাইটিস কেন হয়?
ডি কোয়ার্ভেইন টেনোসাইনোভাইটিস এর লক্ষণ
চিকিৎসা পদ্ধতি বা পরামর্শসমূহ
জেনে নিন হাতের কবজি ও বৃদ্ধাঙ্গুলের গোড়ায় ব্যথা কি করা যেতে পারে-শেষ কথা

ডি কোয়ার্ভেইন টেনোসাইনোভাইটিস কাকে বলে?

আসলে আমাদের হাতে কবজির পাশে বৃদ্ধাঙ্গুল থাকে, এই বৃদ্ধাঙ্গুলের গোড়ায় টেনডনে যে প্রদান বা ব্যথা হয় তাকে ডি কোয়ার্ভেইন টেনোসাইনোভাইটিস বলে।

আরও পড়ুন:  প্রতিদিন কতটুকু লবণ খাওয়া উচিত

সুতরাং জেনে নিন হাতের কবজি ও বৃদ্ধাঙ্গুলের গোড়ায় ব্যথা কি করা যেতে পারে বা ডি কোয়ার্ভেইন টেনোসাইনোভাইটিস প্রদাহের কারণে বৃদ্ধাঙ্গুর নাড়াচাড়া করার সময় বৃদ্ধাঙ্গুলের গোড়ায় ব্যথা হয়। কোনো জিনিস হাত দিয়ে মুষ্ঠি করে ধরতে গেলেও বৃদ্ধাঙ্গুলের গোড়ায় ব্যথা হয়। পুরুষ কিংবা নারী যে কারোই এটি হতে পারে। তবে নারীদের ডি কোয়ার্ভেইন টেনোসাইনোভাইটিস হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। সাধারণত ৩০ থেকে ৪০ বছর বয়সে এই সমস্যা বেশি হয়।

ডি কোয়ার্ভেইন টেনোসাইনোভাইটিস কেন হয়?

অর্থাৎ, জেনে নিন হাতের কবজি ও বৃদ্ধাঙ্গুলের গোড়ায় ব্যথা কি করা যেতে পারে বা কেন হয়ে থাকে-
ক) কেউ যদি হাত দিয়ে একই রকম কাজ বার বার করে এবং তার পাশাপাশি কবজির মুভমেন্ট বেশি হয় তখন তাদের সাধারণত ডি কোয়ার্ভেইন টেনোসাইনোভাইটিস হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।
খ) কারো যদি বাতরোগ, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস থাকে তাদেরও হতে পারে।
গ) কেউ যদি কোনো কারণে বৃদ্ধাঙ্গুলের গোড়ায় আঘাত পায় তাদের হতে পারে।
ঘ) গর্ভাবস্থায় হরমোনজনিত পরিবর্তনের কারণে হতে পারে।
ঙ) সন্তান জন্মদানের পর সন্তানের পরিচর্যা, বার বার কাপড় ধোয়া ও নিংড়ানোর কারনে মায়েদের এই সমস্যা দেখা দিতে পারে।

অর্থাৎ একই রকম কাজে কবজি ও বৃদ্ধাঙ্গুলের ব্যবহার যাদের বেশি হয় তাদের এটি হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি থাকে। যেমন-নারীদের ক্ষেত্রে যারা কাপড় নিংড়ানো, রুটি বানানোর কাজ বেশি করেন তাদের হতে পারে। পুরুষদের মধ্যে যারা মেকানিক, বিভিন্ন ধরনের মিস্ত্রি, যারা স্ক্রু ড্রাইভার দিয়ে হাতের কবজির মাধ্যমে মোড়ানোর কাজ বেশি করেন তাদের হতে পারে।

ডি কোয়ার্ভেইন টেনোসাইনোভাইটিস এর লক্ষণ

ডি কোয়ার্ভেইন টেনোসাইনোভাইটিস হলে বৃদ্ধাঙ্গুলের গোড়ার দিকে ব্যথা হয়, অনেক সময় ওই জায়গা ফুলে যায়। কবজি ও হাত নাড়ানোর সময় কিংবা বৃদ্ধাঙ্গুল নাড়াচাড়া করতে গেলে, কোনো জিনিস মুষ্টি ধরতে গেলে ব্যথা হয়।

চিকিৎসা পদ্ধতি বা পরামর্শসমূহ

জেনে নিন হাতের কবজি ও বৃদ্ধাঙ্গুলের গোড়ায় ব্যথা কি করা যেতে পারে বা চিকিৎসা পরামর্শ কী হতে পারে। মূলত আসলে ডি কোয়ার্ভেইন টেনোসাইনোভাইটিস অত্যন্ত ব্যথাযুক্ত একটি রোগ। এর চিকিৎসা না করলে অনেক সময় ব্যথা বেশি হতে পারে, জয়েন্টের মুভমেন্ট কমে যেতে পারে, অনেক সময় টেনডন শিথ ছিঁড়ে যেতে পারে। এ ছাড়া জটিল কোনো ঝুঁকি নেই এই রোগের।

আরও পড়ুন: শরীরের ক্লান্তি ভাব এড়াতে যে পদক্ষেপগুলি গ্রহণ করা যেতে পারে

প্রথমত চিকিৎসা হিসেবে ব্যথানাশক ওষুধ দিয়ে ব্যথা কমানোর চেষ্টা করা হয়। এর পাশাপাশি যে কাজগুলো করলে ব্যথা হয় সেগুলো কম করা বা বিরত থাকতে হবে। বৃদ্ধাঙ্গুলের বেশি ব্যবহার ও কবজি ঘুরাতে হয় এমন কাজ না করাই ভালো, যেমন-রুটি বানানো, কাপড় নিংড়ানোর কাজ বেশি করলে সেসব না করা, মুঠোফোন মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার না করা।

সাধারণত প্রাথমিক পর্যায়ের সমস্যা নিয়ে আসা রোগীদের চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যথানাশক ওষুধ সেবন এবং একই রকম কাজের পুনরাবৃত্তি না করলে ডি কোয়ার্ভেইন টেনোসাইনোভাইটিস তাড়াতাড়ি ভালো হয়ে যায়।

কিন্তু রোগী যদি দেরী করে আসে, সেক্ষেত্রে ব্যথানাশক ওষুধ এবং পুনরাবৃত্তিমূলক কাজ না করলেও রোগ সহজে ভালো হয় না। এক্ষেত্রে কর্টিকো ইনজেকশন দিতে হয়। তবে ফিজিওথেরাপি বা ব্যায়াম শিখিয়ে দিলে রোগী ধীরে ধীরে ভালো হয়ে যেতে থাকে। অবশ্যই হ্যান্ড থেরাপিষ্টের পরামর্শে নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে।

অনেক সময় এ সকল চিকিৎসায় রোগী ভালো না হলে ছোট আকারে সার্জারি করে নিলে ডি কোয়ার্ভেইন টেনোসাইনোভাইটিস ঠিক বা ভালো হয়ে যায়। অর্থাৎ জেনে নিন হাতের কবজি ও বৃদ্ধাঙ্গুলের গোড়ায় ব্যথা কি করা যেতে পারে এর ক্ষেত্রে সঠিক চিকিৎসা পদ্ধতি অনুসরণ করলে তা ভালো হয়ে যায়।

জেনে নিন হাতের কবজি ও বৃদ্ধাঙ্গুলের গোড়ায় ব্যথা কি করা যেতে পারে-শেষ কথা:

আমাদের আর্টিকেলে জেনে নিন হাতের কবজি ও বৃদ্ধাঙ্গুলের গোড়ায় ব্যথা কি করা যেতে পারে -তথ্য সম্পর্কে আপনার যাবতীয় প্রশ্ন বা জিজ্ঞাসা থাকলে সেটি আপনি অবশ্যই আমাদেরকে কমেন্টের মাধ্যমে লিখে জানিয়ে দেন, আমরা সবসময় পাঠকের মূল্যবান মন্তব্য গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে থাকি।

আজকের আলোচনায়, জেনে নিন হাতের কবজি ও বৃদ্ধাঙ্গুলের গোড়ায় ব্যথা কি করা যেতে পারে ইত্যাদি বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। প্রিয় বন্ধুরা আশা করি আপনারা উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।

আরও পড়ুন: দাঁড়িয়ে পানি পান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর

এছাড়া আমাদের আর্টিকেলগুলোর মান উন্নয়নে আপনার যাবতীয় মন্তব্য, তথ্য এবং পরামর্শ আমাদেরকে অবশ্যই দিতে পারেন, এবং সেইসাথে আর্টিকেলটি ভালো লাগলে অবশ্যই তা শেয়ার করুন বন্ধুদের সাথে এবং জানিয়ে দিন জেনে নিন হাতের কবজি ও বৃদ্ধাঙ্গুলের গোড়ায় ব্যথা কি করা যেতে পারে-এ সম্পর্কে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url